সে দিন সন্ধ্যায় "বউ আমার" একপেট সন্দেহ নিয়ে আমার প্রতি প্রশ্নবান ছুড়োরলও। তাঁর ধারনা, আমার ভালোবাসা, নদীর পানির মত, দিন দিন শুকিয়ে আসছে। তার ভাষায়, বিয়ের পর, তার প্রতি আমার আর কোন ভালোবাসা অবশিষ্ট নাই। ভিতরে ভিতরে চুপসে ফাটা বেলুন হয়ে গেলাম, রোজ ঘণ্টা চারেক ট্যাঁফিক জ্যাম ঠেলে, বাসা-অফিস অফিস-বাসা করছি। ফোনের বিল দিন দিন বেড়েই চলেছে , নিত্য নতুন আব্দার, শখ আহ্লাদ পুরন করছি তার পরও এই কথা?
ব্যাপারস্যাপার দেখে ভালো মনে হচ্ছে না। কিছু একটা ভজকট হয়েছে? ভয়ে ভয়ে মুখে খানিকটা চিনি ফেলে দিয়ে বললাম,
বউ, ও বউ বউউউউউউউউউউউউউ
আইলার মত বিধ্বংসী মুখ করে বউ আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কিজিজ্ঞেস করছি? কথা কচ্ছ না কেন? সব কথা এখন পেটের ভিতর আটকে গেছে তাই ত। মনে কর আমি বুঝিনা না, দেরি করে বাসায় ফিরও, কোথায় কি কর তুমি? কি মনে হয়, আমি বুঝি না?
গোবেচারা মুখ করে বউরে কইলাম আমার কথা তোঁ শুনাবা। মনে হল, আগুনে ঘি ঢাললাম, অগ্নিমূর্তি হয়ে বৌ কইল, কি শুনবো? তোমার কথা কি শুনবো? তোমারে বিয়ে করে আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেলে।আর আমারে ভালো লাগে না। পুরনো হয়ে গেছি না? মনে রঙ লেগেছে, হু? সখিনা ভাবির সাথে হেসে হেসে কথা কও। অনেক চালাক মনে কর না নিজেকে। মনে রেখে তুমি চল ডালে, আর আমি চলি পাতায় পাতায়। আমার চোখ ফাঁকি দেওয়া অত সহজ নয়। কি কর না কর আমি সব জানি। এতখনে কেসটা বোঝাগেল। গলায় আরও দুকেজি মুধু ঢেলে বললাম, বৌ, ও বৌ।
বল, মনে হচ্ছে ঝড় একটু ধরেছ এসেছে। মনে হাসলাম যাক এ যাত্রা বাঁচা গেল। হাত পুড়িয়ে আর রান্না করতে হবে না। গতবার! অফ! কি যন্ত্রণাটাই দিয়েছে। আমি আবার বললাম ও বৌ। বৌ বলল, দেখ আমার ক্লিয়ার বলে দাও, আমি বাপের বাড়ি চলে যাই। তোমার সাথে এক ছাদের নিচে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। তুমি তুমি?
আমিঃ বউ, ও বউ বউউউউউউউউউউউউউ, ততক্ষণে ঝড়ের তীব্রতা আর নাই। আমার বৌ একেবারে শান্ত নদি। এই জন্যেই ওকে এত ভালোবাসি। এই রাগ এই পানি।
বউঃ বল।
আমিঃ বিয়ে তোঁ আমি একটা করিনি, করেছি দুটো, তোমারে আর তোমার সতীন আমার অফিসের বসরে।
এক বউ বাপের বাড়ির হুমকি দেয়, আর এক বউ চাকরি থেকে ছাড়িয়ে দেবার হুমকি দেয়,
এই পাড়ে তুমি ওই পাড়ে বস মাঝ খানে আমি ফাটা বাঁশের চিপায়।।