-এই কোথায় তুমি?কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতেছি?
- দাঁড়াও পাঁচ মিনিট।
- দাঁড়াও পাঁচ মিনিট মানে? আর কত পাঁচ মিনিট বলবা?
- রাস্তায় জ্যাম থাকলে আমি কী করবো? এইবার সত্যি সত্যি পাঁচ মিনিট। বিশ্বাস না হলে রিকশাওয়ালাকে ফোনটা দিব? কথা বলবা?
- রাশেদ তোমাকে একটা ভাল বুদ্ধি দেই। তুমি আজকে বাসা চলে যাও। আমার সামনে আসলে তোমার মাথার চুল একটাও থাকবে না।
- তিথি তোমাকেও একটা ভাল বুদ্ধি দেই। তুমি দুইটা এক্সপ্রেসো কফি অর্ডার করো। কফি ঠাণ্ডা হতে হতে আমি চলে আসবো। জানই তো আমি বেশি গরম কফি খেতে পারি না। কফি কিভাবে গরম থেকে শীতল হয় বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করো। এখান থেকে মেজাজ গরম থেকে ঠাণ্ডা করার শিক্ষা নাও। কেন শুনো নি কবে বলেছেন-“বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র। মাথা ঠাণ্ডা হওয়ার মন্ত্র আমি কফির কাছে পাই রে”।
ফোন টুট টুট করে কেটে গেল। নেটওয়ার্ক এর সমস্যা সম্ভবত। এই দিকে রিকশাওয়ালা ভাই রিকশা থামিয়ে দাঁত কেলিয়ে বললো-“ভাইজান, পাঁচ মিনিট”। তাকে প্রকৃতি সুরেলা কণ্ঠে ডাকছে।
কফিশপের এক কোনায় আমি বসে আছি। আমার সামনে রাগের চরম সীমায় অবস্থান করছে আমার প্রেমিকা। রাগের চরম সীমায় গেলে মেয়েরা কেঁদে ফেলে। সে কাঁদছে। তার রাগ এবং রাগ পরবর্তী কান্নার কারণ আমি তাকে মিথ্যা বলেছি। আমি পাঁচ মিনিটের কথা বলে আট মিনিট দেরি করে আসছি। তারচেয়েও ভয়ানক ব্যাপার হলো সে শুধু মিনিট ই হিসাব করে নি সে সেকেণ্ড ও হিসাব করেছে। সব মিলিয়ে আমি দেরী করেছি আট মিনিট সতের সেকেণ্ড! এত কিছুর পরেও নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে এই ভেবে যে রাগে সে শুধু আমার দিকে ঠাণ্ডা কফি ছুঁড়ে মারছে। গরম কফি ছুঁড়ে মারলে এতক্ষণে হয়তো ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হওয়া লাগতো। সবমিলিয়ে আজকের দিনটা খারাপ না। এই রকম দিন সচারাচর পাওয়া যায় না।