কাঁচা চামড়ার গন্ধ নাকি ভালো মানের যক্ষ্মা প্রতিরোধক !!
শামীম ভাইয়ের কথা সত্যি হলে আমার এই জীবন যক্ষ্মা মুক্ত থাকার সম্ভাবনা প্রবল। কারন আমি গত একমাস ধরে জিগাতলা ট্যানারি মোড়ের বাসিন্দা । ব্যাপারটা জানার পর থেকেই ক্যামন আনন্দ হচ্ছে । আনন্দ উদযাপন করতে আমি চলে এসেছি ট্যানারি মোড়ের এক তেহারি দোকানে । নাম ‘হালিমা তেহারি ঘর’। উদ্দেশ্য তেহারি খাব ।
মানুষ মুখে বলে ঢাকা মসজিদের শহর , কিন্তু আমার ধারনা ঢাকা আসলে তেহারি ঘরের শহর ।এ শহরে ফার্মেসি পাবার আগে তেহারি ঘর পাওয়া যায় । মাত্র একমাস ঢাকা এসেই ব্যাপারটা আবিষ্কার করে ফেলায় ক্যামন বিস্ময়বোধ হচ্ছে । বিস্ময় চাপা দিয়ে তেহারি গেলায় মন দিলাম । এমন সময় প্রিয়তির ফোন ।
- হ্যালো ‘অমিয়ও’
- উ
- তোমার না আজকে লেকপাড়ে দেখার করার কথা! এখনো আসো না কেন !
- আসার কথা ছিল নাকি !
- মানে !
- না মানে, আমি তোমার ফোনের অপেক্ষাতেই ছিলাম ।
- কোথায় তুমি এখন ?
- এইতো আইসক্রিমের দোকানে। লেক পাড়ে যদি ভানিলা ফ্লেভারের আইসক্রিমটা না পাওয়া যায়!
- উহ! গর্দভ ।তুমি জান না গতকাল থেকে আমার ঠাণ্ডা লাগছে ! আইসক্রিম আনতে হবে না তোমার। আসো তাড়াতাড়ি । দশ মিনিটের মধ্যে না আসলে কিন্তু ব্রেকাপ !
প্রিয়তির ঝারি খেতে আমার ভালো লাগে । আমার ধারনা আমাকে ঝারি দেয়া বাবদ প্রিয়তিরও একপ্রকার ভালো লাগা কাজ করে ।একগাদা মিথ্যা বলে ফেললাম । ব্যাপার না । কারো মনরক্ষার জন্য দু একটা মিথ্যা বলাই যায়! । মিথ্যার পরিমাণ খুব বেশী হয়ে গেলে ,প্রিয়তিকে একদিন ‘কঠিন সত্যি’ টা বলে দেব । তখন সহজ হিসেবে পাপ পুন্যের কাটাকাটি হয়ে যাবে ।কিন্তু সমস্যা হলো সত্যিটা শোনামাত্র প্রিয়তির মন ভয়াবহ খারাপ হয়ে যাবে । চায় কি কেঁদেও দিতে পারে।
প্রিয়তি একটা চকচকে গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে । গাড়ির রঙ নীল ।ঢাকা শহরে নীল গাড়ি খুব একটা দেখা যায়না । যাদের নীল গাড়ি আছে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে তাদের বাসায় কালো অথবা সাদা রঙের গাড়িও আছে ।প্রথম গাড়ীটাই কেউ ভিন্ন রঙের কেনে না । যারা কেনে তাদের পছন্দ ফার্স্ট ক্লাস।
আমি ধরে নিলাম প্রিয়তির পছন্দ ফার্স্ট ক্লাস । আমি তার ফার্স্ট ক্লাস প্রেমিক । প্রেমিক হয়েও আমার ভেতর প্রিয়তির জন্য প্রেম প্রেম বোধটা নেই । প্রিয়তিকে এই সত্যটা এখনি বলার ভরসা পাচ্ছি না । প্রিয়তি এসব কথা শুনলে স্ট্রেইট কেঁদে দেয় ।
মেয়েদের কান্নার দৃশ্য গুলি পৃথিবীর বিষণ্ণ সুন্দর দৃশ্য গুলোর একটি । একটি মেয়ে যখন একটি ছেলের জন্য কাঁদে, ছেলেটি অসহায় টেনশনের পাশাপাশি বেচে থাকার প্রচণ্ড তৃপ্তি নিয়ে মনে মনে কেঁদে ফেলে ।
সব কান্না কি চোখ দিয়ে কাঁদতে হয় ?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:১৩