-ওটা ফেলবেন না স্যার!
-উহু! আমার
কনসেন্ট্রেশনে সমস্যা হচ্ছে।
ফেলে দিচ্ছি।কাল এক্সাম।
-না স্যার ফেলবেন না।আমি এর
নড়াচড়াটা দেখবো।কি আশ্চর্য!
দেখে মনে হচ্ছে লেজটা জীবন্ত।
-লেজটা তো তোমার।
খসে ফেললে কিভাবে?
-নিজেই জারিজুরি করে খসিয়েছি।
পেটের
বাচ্চাটাকে নিয়ে এগুতে কস্ট হয়।তাই
বাড়তি ওজন
ভেবে ফেলে দিয়েছি।
এতক্ষনে নজরে পড়লো টিকটিকির
মোটা পেটটা।
বেচারীর জন্যে মায়া লাগলো।
-নাম কী তোমার?
-রুকারু।আপনি রু বলে ডাকতে পারেন।
-হুম।নামটা সুন্দর।পিচ্চির কোনো নাম
রাখলে?
- এখনো ঠিক করিনি।
স্যার,আপনার বইটাতে আমাদের
নিয়ে কি সব
আকাবুকি দেখছি!।লেজে'র নড়াচড়ার
ব্যাপারটার
ব্যাখ্যা আছে কোনো?বলতে পারবেন?
কিছুক্ষন ভাবলাম.....
-এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।কিছু
জানতে পারলে জানাবো।আছো কোথায়?
-ঐ যে....।আপনার দেয়াল ঘড়ির ঠিক নীচে।
-হুম।আগে কখোনো দেখিনি তোমাকে।
আচ্ছা আজ
বিদায়।কাল কথা বলবো।আমার এক্সাম।
-জী আচ্ছা।
রুকারু
চলে যাচ্ছিলো,কী ভেবে ঘুরে তাকালো।
-কিছু বলবে?
-স্যার লাইটটা কখন জ্বালাবেন?
-জ্বালাবোনা।রুমমেট ঘুমুচ্ছে।
ডিস্টার্ব হবে।
কেনো বলোতো?
-বাতি জ্বালালে পোকারা ভীড় করে।
আমরা পোকা খেয়েই বাঁচি।আজ
রাতে আপনি বাতিটা তেমন
না জ্বালানোয়,আমার হাজবেন্ড কিছু
না খেয়ে শুয়ে আছে।আমিও কিছু
খাইনি।
বাতিটা জ্বালালে খিদে মেটানোর
ব্যাবস্থা করা যেতো।
রুকারু মায়াবী চোখ
তুলে চেয়ে আছে আমার
দিকে।কিছু অশ্রু কি দেখা যায়?
বাতিটা জ্বালানো যাচ্ছে না।সঙ্গত
কারনেই
যাচ্ছে না।কিন্তু রু'র ব্যাপারটাও
ভাবা দরকার।
আমি টেবল ল্যাম্পের মুখটা সামনের
দেয়ালে ঘুরিয়ে দিলাম।দেয়াল
লাগোয়া নাইলনের
রশিতে কালো সাটর্টা ঝুলে আছে।
কালো রঙের উপর আলোর ফোকাস
পোকাদের
আকৃষ্ট করে বলে জানতাম।
রুকারু
দাড়িয়ে দাড়িয়ে পুরো ব্যাপারটা বোঝার
চেসটা করছিলো।বুঝতে পেরে আর
দেরি করলো না।সোজা দেয়াল
ঘড়ি বরাবর
হাটতে শুরু করলো।
-রুউউউ!........আমি বি তোমার মেয়ের
নামটা ঠিক
করে দিতে পারি?
রুকারু ঘুরে তাকালো।
চোখে কৃতগ্গতার ছাপ স্পস্ট।
-ত্রয়ী।তোমার মেয়েটার নাম
ত্রয়ী রেখো।
রুকারু
মাথা ঝাকিয়ে জানালো সে রাখবে।
পোকারা জমতে শুরু করেছে।
কালো,সাদা
,মিচকে পোকা ভীড়
বারাচ্ছে পুরোনো দেয়াল
ঘড়ির কাছে।ঘড়ির আড়ালে ত্রয়ীর
বাবা ক্ষুধা নীয়ে ঘুমোচ্ছে।ঘুমোচ্
ছে ত্রয়ী ও।
রু'য়ের জঠরে।আর আলুথালু পেট
মোটা শরীর
নিয়ে ঘড়ির দিকে এগুচ্ছে রু।
খুব জোরে এগুনো যাবে না।ত্রয়ীর ঘুম
ভেঙ্গে যেতে পারে।
উৎসর্গঃ ত্রয়ীকে।
যে আলো দেখতে চেয়েছিলো।
ফুটনোট- ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে লেখা । ব্লগে এটা প্রথম পোস্ট । আলোচনা- সমালোচনা কামনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৩