তখন মাঝরাত ।ঝি ঝি ডাকা শব্দের গতিময় ছন্দে সবাই তখন হয়তো গভীর ঘুমে। আবার হয়তো কেউ স্বপ্নের মৃত্যু দেখে জেগে উঠে, হারতে বসে হতাশার কাছে। এই হেরে যাওয়াটাই হয়তো সত্যিকারের হেরে যাওয়া নয়, তবুও অভীকের কাছে এই হারের প্রাপ্তি অনেক, আবার অনেক না পাওয়ার সুক্ষ সুক্ষ আঁকা ছবিগুলোকে আরও স্পষ্ট করে তোলে মুহূর্তের এই হার। কিন্তু সে জানে না ,বুঝে উঠতে পারে না কেন এমন হয়?
না, কোনো স্বপ্ন নয়, এইতো একটু আগে গভীর ঘুমের মাঝে হঠাৎ করে দুঃস্বপ্নের রঙে আঁকা কি যেন ঘটে গেল। হয়তো কেউ খুব প্রিয় একটা কিছু ছিনিয়ে নিয়ে গেলো, অথবা বুকের ভেতরকার শুন্য জায়গাটা কেমন যেন করে উঠলো! অথবা ঠিক কি বা কেমন করে উঠলো বোঝাবার নয়।
ঠিক সেই মুহূর্তে অভীক পৃথিবীর সকল দ্বন্ধের ঊর্ধ্বে ছিল।একমুখী প্রশস্থ একটা পথে দাঁড়িয়ে অভীক নির্ভার কন্ঠে বলে উঠে ‘আদ্রিতা্, আমি শুধু তোমাকে চাই’।
মুহূর্তের রেশ কেটে গেলে, অভীক একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শিশিরের মতো জমে উঠা বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছতে মুছতে উঠে বসলো।
“আদ্রিতা, তুমি এমন করলে কেন? আমিতো তোমাকে হারাতে চাইনি! তোমাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। এমনি করে কাঁচের মতো আমার স্বপ্নগুলোকে তুমি ভেঙে দিতে পারলে? পারলে তুমি?” বিড়বিড় করে বলতে থাকে অভীক।
তারপর ধপাস করে শুয়ে পরে সে। আনমনে বালিশের নিচ থেকে মুঠো ফোনটি তুলে নেয় হাতে, বাটন টিপে টিপে আদ্রিতার নাম্বার স্ক্রিনে সেট করে মোবাইলটা রেখে দেয় বুকের উপর। একটু পরে আবার হাতে নেয় মোবাইল, এবার ইয়েস বাটনে টিপ দিয়ে সাথে সাথেই ক্রস বাটনে টিপ দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে অভীক। মোবাইলটা মাথার কাছে রেখে কাত হয়ে শুয়ে সে বিড়বিড় করে বলে “আদ্রিতা তোমারও কি এমন হয় না?
০৭/০৪/২০০৮ (উত্তরা)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৭