বাবুল মিয়া শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার অন্তর্গত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাটের মধ্যে একটি ডুবিসায়বর বন্দর (কাজীরহাট) বাস স্ট্যান্ড এর একজন চায়ের দোকানদার। চায়ের সাথে বিক্রি করেন কলা-রুটি, বিস্কিট। চায়ের দোকান ছাড়া তার আর কোন আয়ের উৎস নেই। পরিবারে আছেন মা, ৩ সন্তান, স্ত্রী আর তিনি সহ ৬ জন।
চায়ের দোকান চালিয়ে যা আয় হতো তাতে সংসারে মৌলিক চাহিদার বাইরে কোন বিলাসী ভাবনা না থাকায় সুখেই চলছিল তাদের দিনকাল।
কিন্তু করোনা মহামারী আসার পর থেকেই শুরু হলো তার কষ্টের দিন। দোকান চললে বাড়িতে নিয়মিত নিত্যপ্রয়োজনীয় সদাই নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় আর নায়তো চুলো বন্ধ।
এদিকে সরকারের লকডাউন স্বীদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে বাবুল মিয়া'র মত মানুষেরা। যাদের কিনা উন্নত খাবার কিংবা ভালো জামা-কাপর, ব্যাংক-ব্যালেন্স বা উচ্চ দালানকোঠা চাহিদা নয়, শুধু তিনবেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই একমাত্র লক্ষ্য।
লকডাউনে চায়ের দোকান বন্ধের নির্দেশ, যদিও অনেক চায়ের দোকানদার লকডাউন উপেক্ষা করে লুকিয়ে, চুপিসারে চালিয়ে যাচ্ছে দোকান। তবে বাবুল মিয়ার কথা হচ্ছে নিজে কষ্ট করে কামাই করবো তাও আবার চুরি করে তা মানা সম্ভব না।
কিন্তু দোকান না চালালে খাবার আসবে কোথা থেকে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যারা খাবার সংকটে পড়বে তারা ৩৩৩ নম্বরে কল করলেই বাড়ীতে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে। বাবুল মিয়া সরকারের ঘোষনার কথা জানতে পেরে ৩৩৩ তে একাধিকবার কল দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। কারন ৩৩৩ নম্বরে কল করে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থাকার পরে কল কেটে যায়।
বাবুল মিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলো, এখন চলবেন কি করে?
উত্তরে বাবুল মিয়া জানালেন, 'ঘরে এখন আগের কিনা কয়েক কেজি চাল আছে যা দিয়ে ২-৩ দিন চালিয়ে নেয়া যাবে আর তরকারি বলতে বাড়ীর আশপাশ থেকে শাকপাতা আইন্না চলতাছে। তারপর আল্লায় যেমনে চালায়'
চলবে...
লেখা: #এমপিকে
১১/০৭/২০২১ইং
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:২২