একটা নিউজ ভাইরাল হয়েছে। খুবই মর্মান্তিক নিউজ।
এক মাকে নাকি একজন সরকারি কর্মকর্তা তার মেজিস্ট্রেট বউয়ের চাপাচাপিতে স্টেশনে রেখে এসেছে সাথে তাকে একটা চিঠিও দিয়েছে। সেখানে তাকে রেখে আসার কারণ লিখে ক্ষমা চেয়েছে। আসুন আমরা চিঠিটি পাঠ করি।
এখানে আমরা জানতে পারি যে তার মা তাকে খোকা ডাকতো। আমার প্রশ্ন জাগলো, খোকা ডাকার চল কি এখনও আছে? আমি জন্মের পর কোনো মাকে খোকা ডাকতে শুনি নাই। যাই হোক, ডাকতেও পারে। এদিকে এই 'মেধাবী' বিসিএস মানবের চায় এবং চাই বানানেও সমস্যা। দেখুন-
এটাও হতে পারে, মানলাম। এসব থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় না কিছুই।
এবার, কথা হলো, ভদ্রমহিলার ব্যাগের পকেট থেকে চিঠি বের করা হলো অথচ চিঠিতে কোনো ভাঁজ নেই? এ কেমন কথা? আবার দেখেন ছেলে চিঠি লিখেছে মায়ের কাছে, সেখানে আবার লিখে রেখেছে যে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে এবং এখন একজন সরকারি কর্মকর্তা, আর তার বউ ম্যাজিস্ট্রেট। যেন এসব কথা তার মা জানতেন না কিছুই!
আচ্ছা তাও না হয় মানলাম (আসলে কিছুই মানি নাই)। এবার প্রশ্নটা হলো?
প্রতিটা নিউজ সাইটের নিচে লেখা আছে -
"ব্যারিস্টার এস এম ইকবাল চৌধূরীর ফেসবুক থেকে সংগৃহীত"
এই ব্যারিস্টার এস এম ইকবাল চৌধূরীটা কে? তার ফেসবুক ওয়ালটাই বা কই? একজন ব্যারিস্টারের ফেসবুক একাউন্ট থেকে এমন একটা খবর এলো, অথচ সেই ব্যারিস্টারের খোঁজই কেউ দিতে পারছেন না? সেই ব্যারিস্টারের নামের সম্ভাব্য সব রকম বানান দিয়ে ফেসবুকে সার্চ দিয়েছি। কিছুই পাই নি। আচ্ছা ধরে নিলাম লেখাটি লিখেই তিনি তার ফেসবুক একাউন্ট ডিএ্যাক্টিভেট করে ফেলেছেন। কিন্তু সেই লেখার স্ক্রিনশটও কোথায় পাওয়া যাবে না? এ কেমন কথা?
ফেসবুকে তাকে খোঁজার আশা বাদ দিয়ে গুগলের দ্বারস্থ হলাম। বাংলাদেশ ব্যারিস্টার এসোসিয়েশনের মেম্বার লিস্টে তাকে খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না।।
এবার আসা যাক সেই মায়ের করুণ ছবিটির প্রসঙ্গে-
দেখুন ছবি,
এবার চলে যান এই লিংকে
লিংকে যারা যেতে চাইছেন না, তারা স্ক্রিনশট দেখুন-
জ্বী, ছবিটি একটি ভারতীয় বৃদ্ধাশ্রম থেকে নেয়া, ২০১৫ সালের।
তো এখন কি সিদ্ধান্তে পৌঁছুনো যায়? যেকোন কিছু ভাইরাল করার আগে দয়া করে একটু ভাবুন!
সংযুক্তি- কালের কণ্ঠ তাদের লিংক সরিয়ে ফেলেছে। তবে গুগল ক্যাশে এখনও জমা রয়েছে তাদের কীর্তি।
দেখতে চাইলে দেখে নিন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৮