সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার যিনি তার বান্দাকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুসলিমদের সামনে তুলে ধরার তৌফিক দান করেছেন।
মাজহাব ও দ্বীন এর অর্থ
মাজহাব একটি আরবী শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে ধর্ম, বশ্বাস, মতামত।
(মিসবাহুল লুগাত, থানবী লাইব্রেরী-২৬২ পৃষ্ঠা ও আল মু'জামুল ওয়াফী, রিয়াদ প্রকাশনী, ৭৫৩ পৃষ্ঠা)
ঠিক একই ভাবে আমরা যদি দ্বীন শব্দের অর্থও যদি ডিকশনারীগুলোতে খোজ করি তো দেখতে পাব-
দ্বীনও একটি আরবী শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে ধর্ম, বিশ্বাস।
(মিসবাহুল লুগাত, থানবী লাইব্রেরী-২৫১ পৃষ্ঠা ও আল মু'জামুল ওয়াফী, রিয়াদ প্রকাশনী, ৪০১ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত আরবী টু বাংলা ডিকশনারী থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, মাজহাব ও দ্বীন এর অর্থ প্রায় একই। এটা আরও প্রমাণিত হয় যারা কওমী মাদ্রাসায় পড়েছেন তারা জানেন যে সকল কওমী মাদ্রাসায় বাচ্চাদের পড়ানো হয় "মুসলমানদের মাজহাবের নাম কি? তখন বাচ্চাদের উত্তরও শিখিয়ে দেওয়া হয় যে, মুসলমানদের মাজহাবের নাম ইসলাম। মাজহাব মানে যে ধর্ম এটাই চূড়ান্ত সত্য যা ডিকশনারীগুলো থেকে প্রমাণিত এবং কওমী মাদ্রাসার "মিজান মুনশাইব" এর বাচ্চাদের পড়ানো থেকে প্রমাণিত।
এখন আমাদের জানা উচিত, আমাদের মাজহাবের নাম কি?
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। - সূরা আল ইমরান-৩/১৯
যেহেদু দ্বীন ও মাজহাব একই অর্থ বহন করে, সুতরা মুসলিমদের মাজহাব তথা দ্বীন এর নাম ইসলাম।
এখন আমরা দেখবো মাজহাবের নাম পরিবর্তন করা জায়েজ কি না?
মহান আল্লাহ বলেন,
অনুসরণ কর যা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নাজিল হয়েছে এবং তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে অভিভাবক মান্য করো না? সূরা আরাফ-৭/৩।
রবের পক্ষ থেকে মাজহাবের নাম নাজিল হইছে ইসলাম। আল্লাহর আদেশ অমান্য করা হারাম, সুতরাং মাজহাবের নামও পরিবর্তন যেমন হানাফী, শাফেয়ী ইত্যাদি রাখাও হারাম।
যেহেতু মাজহাবের নামগুলো আল্লাহ ও তার রাসূল সাঃ রাখেন নি। তাই মাজহাবের নাম ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কিছূ রাখলে আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কে অভিভাবক মানা হবে। আল্লাহ আমাদের অভিভাবক। উনি মাজহাবের নাম দিয়েছেন ইসলাম। অন্য মানুষের দেওয়া নাম আমরা কেন নিব? যদি নেই তবে আল্লাহকে অভিভাবক মানা হবে না।
সুতরাং আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানতে পারলাম
=> মাজহাব ও দ্বীন একই অর্থ বহন করে।
=> আমাদের মাজহাবের নাম ইসলাম।
=> মাজহাবের নাম পরিবর্তন করা হারাম।
=> মাজহাবের নাম ইসলাম ছাড়া হানাফী, শাফেয়ী, আহলে হাদিস রাখলে আল্লাহ অভিভাবক মান্য করা হয় না।
অনেকে বলে থাকেন, মাজহাব মানে মতামত। আমরাও এ কথার সাথে একমত যে মাজহাব মানে মতামত। কিন্তু যখন এই সমস্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করি মাজহাব তথা মতামত কয়টি? তখন তারা বলে চারটি। হানাফী, শাফেয়ী, হাম্বলী, মালেকী। চার ইমাম, চার মাজহাব।
আমরা তখন জিজ্ঞেস করি, ভাই পুর্ববতী ইমাম কি মাত্র ৪ জন। অসংখ্য ইমাম রয়েছেন
যেমন
১। ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ,
২। ইমাম আবু হানিফা,
৩। ইমাম শাফেয়ী,
৪। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল,
৫। ইমাম জুহুরী,
৬। ইমাম ইবনুল কাইয়ুম,
৭। ইমাম শওকানী,
৮। ইমাম আওযায়ী,
৯। ইমাম আবু দাউদ,
১০। ইমাম নাসাই,
১১। ইমাম ইবনে কাসির,
১২। ইমাম ইবনে জারীর,
১৩। ইমাম শওকানী
১৪। ইমাম আয যাহাবী
১৫। ইমাম মালেক প্রমুখ।
আল্লাহ তাদের সবাইকে শান্তিতে রাখুন।
অসংখ্য ইমাম প্রত্যেকেই নিজ নিজ মতামত দিয়েছেন ইসলামিক বিভিন্ন বিষয়ে। আপনারা যদি মাজহাবকে মতামত অর্থে নেন, তবে বলতে হয় মাজহাব রয়েছে শত শত। কিন্তু তখন প্রচলিত মাজহাবের অনুসারীরা বলে, "না না মাজহাব মাত্র ৪টা"।
মাজহাবী আলেমগণ ও তার অনুসারীরা কখনোই মাজহাবকে মতামত অর্থে ব্যবহার করে না। তারা মূলত মুসলিমদের ধোকা দেওয়ার জন্য মাজহাবের অর্থ বলে মতামত। তারা মূলত ইসলামকে ৪টি ভাবে বিভক্ত করার জন্যই এই মাজহাবের প্রচলন করেছে।
যতদিন পর্যন্ত এই মাজহাবী বিভক্তি থাকবে, ততদিন মুসলিমরা কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। তাই আজই আমাদের মাজহাবের নাম ইসলাম নির্ধারণ করতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৭