somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রাইবুনালে আসামী-পক্ষের বিদেশী আইনজবি নিয়োগ ঘিরে অপ-প্রচার উম্মোচন

৩০ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

❖❖ প্রশ্নঃ ট্রাইবুনালে কি বিদেশী আইনজীবিরা অংশগ্রহন করতে পারবে? যদি না পারে, তবে কেন পারবে না?

❖উত্তরঃ ট্রাইবুনালে যে কোনো পক্ষের হয়ে কোন বিদেশী আইনজীবি লড়ার বিষয়টি বার কাউন্সিল আদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আইনটি এক্ষেত্রে একেবারেই স্পষ্ট - আইনজীবিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এই কথাটি বলা রয়েছে বাংলাদেশ লিগাল প্র্যাক্টিশনার্স এন্ড বার কাউন্সিল অর্ডার - ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২৭(১)(ক) তে। বাংলাদেশের আইন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। দেশের আইনকে সমুন্নত রাখা দেশের প্রতি শ্রদ্ধারই আরেক নিদর্শন।

❖❖ প্রশ্নঃ তাহলে বার কাউন্সিল যদি বিশেষ বিবেচনা (ডিস্ক্রেশনারী) ক্ষমতা প্রয়োগ করে, তাহলেও কি পারবে না?

❖ উত্তরঃ না পারবে না। ‘ডিস্ক্রেশনারী’ পাওয়ার তখনই প্রয়োগ করা হয় যখন মূল আইনে অস্পষ্টতা বা এই ধরনের ইঙ্গিত থাকে। আমাদের আইনে স্পষ্ট করে এই ব্যাপারে বিধি নিষেধ দেয়া আছে। সুতরাং ডিস্ক্রেশন ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ ০%

❖❖ প্রশ্নঃ তাহলে আগরতলা মামলা তে কিভাবে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বিদেশী আইনজীবি এসেছিলেন এবং শেখ হাসিনার পক্ষে ২০০৭ সালে কিভাবে চেরী ব্লেয়ার মামলা লড়েছিলেন?

❖ উত্তরঃ আগরতলা মামলা হয়েছিলো ৬৭-৬৮ সালের দিকে। সেই সময় তৎকালীন পাকিস্তান বার কাউন্সিল আইনের সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের আইনের পার্থক্য রয়েছে। কেননা স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে এই ব্যাপারে আইন হয়েছে ১৯৭২ সালে (বাংলাদেশ লিগাল প্র্যাক্টিশনার্স এন্ড বার কাউন্সিল অর্ডার - ১৯৭২)। এইখানে বিদেশী আইনজীবি আসতে হলে তাকে প্রথমেই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। আর শেখ হাসিনার পক্ষে চেরী ব্লেয়ার কোনোদিন কোর্টে লড়েনি। তিনি শুধু হাসিনার পরামর্শক হিসেবে দেশে এসেছিলেন, কখনোই আদালতে দাঁড়াননি।

❖❖ প্রশ্নঃ এ ধরণের বিধান কি শুধু বাংলাদেশেই বিদ্যমান?

❖ উত্তরঃ না। এই ধরনের আইন মোটামুটি পৃথিবীর সব জায়গাতেই রয়েছে। খোদ ওই বিদেশী আইনজীবিদের দেশ ইংল্যান্ডেও বাইরের দেশের কেউ চাইলেই আদালতে দাঁড়াতে পারবে না তাদের আইন অনুযায়ী। তাদেরও এই ব্যাপারে বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের কড়াকড়ি রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, অভিযুক্তদের পক্ষে পরামর্শ দানের জন্য বিদেশী আইনজীবিরা এরই মধ্যে বাংলাদেশে মোট ১৫ বার প্রবেশ করেছেন।

***নতুন আপডেট****

❖❖ প্রশ্ন: ট্রাইবুনালের রুলস অব প্রসিডিউর এর বিধি-৪২ এ তো বলা আছে উভয় পক্ষই চাইলে বিদেশী আইন জীবি আনতে পারবে। তাহলে সরকার চাইলে তারা ও তাদের পক্ষে বিদেশী আইনজীবি আনতে পারে। ফরেন আইনজীবি আনলে সরকারের সমস্যা কোথায়?

❖ উত্তর: রুলস অব প্রসিডিউর এর এই বিধি-৪২ নিয়েই আসলে জামায়াতের আইনজীবিদের এবং তাদের সমর্থকদের পক্ষ থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে; ত
াদের উদ্দেশ্য আর যাই হোক সৎ নয়। অথচ বিষয়টি খুবই স্পষ্ট। আইসিএসএফ এর সদস্যের এই পোস্টে বিষয়টি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা রয়েছে। এখানে দেখুন । সুতরাং, এখানে 'বিদেশী আইনজীবি আনলে অসুবিধা কি' - এ জাতীয় প্রশ্ন একেবারেই অবান্তর। যে অনুমোদন দেয়ার ক্ষমতাই বার কাউন্সিলের নেই, সেই অনুমোদনকে ট্রাইবুনাল গ্রহণ করে কিভাবে? ট্রাইবুনালেরও কি সে ক্ষমতা আছে? এখানে মূল প্রশ্ন হল আইনের বিধানকে সমুন্নত রাখা। হ্যাঁ, বার কাউন্সিল রুলস কে সংসদে নিয়ে পরিবর্তন করা হোক, তখন ট্রাইবুনাল নিশ্চয়ই রুলস অব প্রসিডিউর এর বিধি-৪২ অনুযায়ী এগোতে পারবে! তার আগে নিশ্চয়ই নয়। এখানে সরকারের কি সুবিধা-অসুবিধা, কিংবা ট্রাইবুনাল কি চাইলো বা না চাইলো সেটা - সে সব একেবারেই কোনো মূখ্য বিষয়ই না। আমরা দেখতে চাই আইন সমুন্নত থাকুক, তা সে যার পক্ষে বা বিপক্ষেই যাক না কেন। প্রশ্ন এখানে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ, প্রশ্ন এখানে আইনের শাসনের। এর কোনো ব্যত্যয় আমরা দেখতে চাই না। আর এর বাইরে গিয়ে কেউ যদি কোনো অবুঝ আবদার করতে চায়, তাহলে সেটাকেও প্রশ্রয় দেয়ার কোনো মানে হয় না।

❖❖ প্রশ্ন: আমার মনে হয় - হয় বার কাউন্সিলের রুল পরিবর্তন করা হোক অথবা ICT'র Rules of Procedure পরিবর্তন করা হোক।

❖ উত্তর: ICT Rules of Procedure এ পরিবর্তন করার কিছু নেই। নিতান্ত যদি পরিবর্তন করতেই হয় তাহলে বিধি-৪২ একেবারেই বাদ দিয়ে দেয়া যেতে পারে, যেহেতু সেটা নিয়ে এতো বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন অনুযায়ী - ট্রাইবুনালের বিচারকদের সেই ক্ষমতা আছে রুলস অব প্রসিডিউর এর যে কোনো বিধি প্রণয়নের কিংবা প্রয়োজনে সংশোধন বা বাতিল করবার। বিচারকরা নিজেরাই রুলস অব প্রসিডিউর পরিবর্তন করতে পারেন এবং তার জন্য সংসদেরও হস্তক্ষেপ দরকার নেই। আর বার কাউন্সিলের রুলস পরিবর্তন করতেই পারে ভবিষ্যতে কোনো এক সময় যদি নিতান্তই প্রয়োজন হয়। তবে, হাতে গোনা কয়েকজন বিদেশীকে হাতে গোনা কয়েকটা মামলার আসামীর পক্ষে বাংলাদেশের আদালতে দাঁড় করানোর জন্য আমাদের সংসদের এখন হন্তদন্ত হয়ে আইন পরিবর্তন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ইংল্যান্ডের বার কাউন্সিল কি বাংলাদেশী এডভোকেটদের ঐ দেশে কোনো ধরণের পরীক্ষা না দিয়ে ইংল্যান্ডের আদালতে সরাসরি প্র্যাকটিস করতে দেয়? নাকি প্র্যাকটিস করতে দেয়ার জন্য বৃটিশ পার্লামেন্টকে কোনোদিন ব্যস্ত হতে শুনেছি? বাংলাদেশের হাজার হাজার মামলায় হাজার হাজার আইনজীবি তো এতদিন বেশ ভালোই ছিল প্রচলিত আইন নিয়ে! ১৯৭১ সালের এই সব অভিযুক্ত অপরাধী (গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদী) নিশ্চয়ই কোনো বিশেষ বিবেচনা দাবী করে না, যে তাদের জন্য এখন দেশের আইনও পাল্টাতে হবে, তাও তাদের কথায় এবং তাদের প্রয়োজনে! বরং, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাংলাদেশের আর যে কোনো অপরাধীর চেয়েও গুরুতর। বরং, অভিযোগের তুলনায় তাদের রাজার হালে ট্রিটমেন্ট দেয়া হচ্ছে গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ এবং মামলা চলাকালীন সময়ে, যা নিয়ে দেশবাসী একেবারেই সন্তুষ্ট না, কারণ দেশবাসী ১৯৭১ সালে এদের কৃতকর্মের ইতিহাস জানে।

=====================
মোবাইল শেয়ার লিন্ক:
=====================
ICSF- এর বিভিন্ন উদ্যোগ, প্রকল্প, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, আর্কাইভ, ব্যবস্থাপনা টিম এবং গ্রুপ — এই সামষ্টিক কর্মযজ্ঞে অংশীদার ব্যক্তি এবং সংগঠনগুলোর ব্যাপারে আরো জানতে ঘুরে আসুন আমাদের মূল পোর্টাল পাতা: http://icsforum.org/
এই পোস্টটিতেও বিস্তারিত রয়েছে:
=====================
বিভিন্ন ভাষায় এই বক্তব্যগুলো ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। এই পোস্টটি অনুবাদে আগ্রহী হলে এই ঠিকানায় লিখুন: [email protected]
=====================

Content courtesy: Sadman Sadek, Nijhoom Majumder, Rana Meher, and Rayhan Rashid.

Graphics and presentation: Nazrul Islam.

-------------------------------
ICSF এর ফেসবুক পাতা হতে অনূলিপি। মূল লিঙ্ক

ছবিটি ছড়িয়ে দিন...

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:৩২
১৮৪টি মন্তব্য ৫৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×