বড্ড অস্থির লাগছে রুহানের৷ আগে এমনটা হতো না, বিকেল হলেই ঘুরতে চলে যেত এখানে ওখানে৷ কিছুদিন হলো বিকেলগুলো খুব অসহনীয় হয়ে উঠেছে; একটা-দুটো বিকেলের স্মৃতি তার বাকি সবগুলো বিকেলের সুখ কেড়ে নিয়েছে৷ এখন পাঁচটা বাজলেই সে নিজের পাশটাতে তাকায়— কেউ নেই সেখানে; যেন কারো থাকার কথা ছিল, যেন কোনো একজনের সেখানে থাকাটা বাধ্যতামূলক।
মোবাইল স্ক্রিনের দিকে সে তাকালো একবার৷ না, কোনো মেসেজ নেই৷ তবু মন শান্ত হলো না; কোনোভাবে মিসও তো করে ফেলতে পারে— এই ভেবে মেসেজ বক্সে গিয়ে 'অক্সিজেন' নামটার উপর ক্লিক করে দেখলো— না, সত্যিই আজ কোনো মেসেজ সেখানে জমা পড়েনি৷ রিশার নামটা মোবাইল ফোনে সে 'অক্সিজেন' নামে সেইভ করে রেখেছে কয়েকদিন হলো৷ যুক্তি হচ্ছে— অক্সিজেন ছাড়া বেঁচে থাকা যেমন যায় না, অক্সিজেন ছাড়া আগুনও তো জ্বলে না! মানে, রিশার অবস্থান এখন তার কাছে অক্সিজেনের মতো— একদিকে তার সাথে দেখা না হলে অস্থির লাগে, আবার তার সাথে কাটানো বিকেলগুলো সব মিলিয়ে তার অন্যান্য সকল বিকেল-অনুভবে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে৷
পাঁচটা বাজতে এখনো প্রায় ছাব্বিশ মিনিট বাকি৷ রুহান কয়েক মুহূর্ত ভাবলো— রিশাকে একটা মেসেজ করবে, না কি করবে না? গতকালই তো দেখা হলো; আজ আবার দেখা করার কথা বললে রিশা রাজি হবে, না কি বিরক্ত বা বিব্রত হবে? হঠাৎ কী মনে হলো, বড্ড বেপরোয়া হয়ে উঠতে মন চাইলো; মেসেজ বক্স ওপেন করে সেখানে লিখলো, "বেরোবে?"
লিখেই মুছে ফেললো! চোখের পাতা দ্রুত ওঠানামা করছে— ইশ্, সময় পেরিয়ে যাচ্ছে; কী করা যায়! সেকেন্ডের কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বুকের ধুকপুক৷ পুনরায় লিখলো, "আজ বাইরে কোনো কাজ নেই?"
পাঁচটা বাজতে বারো মিনিট বাকি৷ উত্তর আসবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮