আজ লিখবো আমার বিগত পর্তুগাল সফর নিয়ে । গত ৬ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমি পর্তুগালের সর্ব দক্ষিনের শহর আলগার্ভের ফারো তে ভ্রমনে গিয়েছিলাম। অপরূপ সুন্দর শহর ফারো, আটলান্টিক মহাসাগরের পাড়ে অপরূপ মনোলিলায় সাজানো একটা শহর। শহরটি মূল মুরিশ প্রাচীরের অংশ। দেখারমতো আছে ত্রয়োদশতম শতাব্দীতে নির্মিত ফারো ক্যাথিড্রাল। ষোড়শ শতাব্দীর কনভেন্টে মিউনিসিপ্যাল মিউজিয়ামটি প্রাগৈতিহাসিক এবং মধ্যযুগীয় হস্তনির্মিত, আর ধর্মীয় শিল্প প্রদর্শন করে।
শহরটি রিয়া ফরমোসা ন্যাচারাল পার্কের প্রান্তে অবস্থিত, যা লেগন এবং মডফ্ল্যাটগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি। পার্ক এর উপকূল সমুদ্র থেকে বিভিন্ন বাধ দ্বীপ দ্বারা সুরক্ষিত। তাদের মধ্যে ব্যারিট দ্বীপে বেলাভুমি রয়েছে, যাকে অবলম্বন করে সৈকত রয়েছে। পূর্বের পূর্বদিকে, টাভিরা দ্বীপের লবণ প্যানগুলি ফ্লামিংগোস, ওয়েডিংবিল এবং অন্যান্য ওয়েডিং পাখি আকর্ষণ করে। ফারোর উত্তর-পশ্চিমে আলমসিল গ্রাম, যা সেন্ট লরেন্স চার্চের জন্য পরিচিত, এটির অভ্যন্তর অষ্টাদশ শতকের আঁকা সিরামিক টাইলগুলির দ্বারা সজ্জিত।
কখন ভ্রমন করবেন?
উষ্ণ গ্রীষ্ম এবং হালকা শীতকালে ফারোতে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ জলবায়ু রয়েছে। এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে দেখার জন্য একটি জনপ্রিয় সময়। এই সময়ে কোন বৃষ্টি থাকেনা। রিয়া ফর্মোসা ফেস্টিভাল (জুলাই-অগাস্ট) সঙ্গীত এবং বিপুল পরিমাণে সীফুড উপাদানের বিশিষ্ট। তিভিরা উৎসবে গ্রীষ্মে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কনসার্ট এবং অন্যান্য পারফরম্যান্সের মাধ্যমে পর্তুগিজ সংস্কৃতি উদযাপন করে।
এখন দেখবেন বছরের বিভিন্ন মাসের তাপমাত্রা :
সর্বোচ্চ / সর্বনিন্ম
জানুয়ারী ১৬ ° ৮ °
ফেব্রুয়ারি ১৭ ° ৯ °
মার্চ ১৯ ° ১০ °
এপ্রিল ২০ ° ১১ °
মে ২৩ ° ১৪ °
জুন ২৬ ° ১৭ °
জুলাই ২৯ ° ১৯ °
আগস্ট ২৯ ° ১৯ °
সেপ্টেম্বর ২৭ ° ১৮ °
অক্টোবর ২৩ ° ১৫ °
নভেম্বর ২০ ° ১১ °
ডিসেম্বর ১৭ ° ৯ °
ঘুরাঘুরির জন্য তাপমাত্রা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, তাই দিলাম তাপমাত্রার তালিকা ।
আমি আর আমার সফর সঙ্গী সাজ্জাদ ভাই উল্লেখ্যদিনে সময়মতো কোলন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছে যাই। চেকিংয়ের ঝামেলা যেহেতু ছিলোনা, আমরা সোজা ঢুকে গেলাম এয়ারপোর্টে। ঠিক বিকেল ৫টাতে বোর্ডিং গেট খুলে দেয়া হলো, প্লেনে উঠে শুরু হলো অপেক্ষার পালা। এক জায়গাতে বেশীক্ষণ বসে থাকা যায়না, বোরিং লাগছিলো বলে ট্যাবটা বের করে এই লেখাটা লিখতে বসলাম। লিখতেও পারছিলাম না ঠিকমতো কারন পাশের ডায়বেটিক যাত্রী, উনি বারবার বের হচ্ছিলেন। বাধ্য হয়ে লেখা বন্ধ করে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের বই পড়তে শুরু করলাম। ঠিক পর্তুগাল সময় সন্ধ্যা ৮টায় ফারো এসে পৌঁছালাম । ফারোতে সময় জার্মানির সময় থেকে ১ ঘন্টা পেছানো। ফারো পৌঁছে ঊবার অর্ডার করে হোটেলে যেতে পৌঁছালাম । হোটেল ছিলো আটলান্টিকের একদম পাশে। সাগরের শা শা বাতাস উপকূলে আছড়ে পড়ছিলো। কত সুন্দর শ্রুতিমধুর ছিলো সাগরের গর্জন । আবার ঊবার ডেকে ফারোর সেন্ট্রালে গেলাম, উদ্দেশ্য আটলান্টিকের সী ফুড খাওয়া। বেশ ছিমছাম সাজানো গুছানো এক রেস্টুরেন্টে ঢুকে অর্ডার করলাম, সী ফুড। ৮-১০ রকমের সামুদ্রিক মাছ এলো প্রায় ২৫ মিনিট পরে, অসম্ভব সুস্বাদু ছিলো মাছ গুলো। সাইড ডিশ হিসেবে ডেজার্ট এবং সী ফুড স্যুপ ছিলো। খেয়ে দেখে প্রায় রাত ১১ টার দিকে হোটেলে ফিরে আসি। বাকি দিন গুলোর গল্প একে একে লিখবো।
আমার পর্তুগাল হয়ে স্পেন ঘুরতে যাওয়া , সমস্ত কিছু ধারাবাহিক ভাবে থাকবে পরবর্তী ব্লগ গুলোতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৫