অদ্ভুত একটা অভ্যাস আমার, বাসে বসে কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করলেই ঘুম চলে আসে। হল্যান্ডে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এখন বাসায় ফেরার পালা। অপরুপ সুন্দর দেশ হল্যান্ড । আমি গিয়েছিলাম নেদারল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমের ছোট সুন্দর শহর মাসট্রিখট ( Maastricht ) এ। মাসট্রিখট মূলত বিশ্ববিদ্যালয় শহর বা ইউনিভার্সিটি-সিটি। নেদারল্যান্ড এমনিতে গ্রীষ্মকালে অপরুপ সৌন্দর্যে সাজে। মনে হয় প্রকৃতি তার সকল সৌন্দর্য তখন আশির্বাদ স্বরূপ নেদারল্যান্ডকে দান করে। মাইলের পর মাইল লাল, হলুদ সহ বিভিন্ন টিউলিপের সমাহার। সকালে যখন যাত্রা শুরু করি জার্মানির কোলন শহর থেকে, তখন তাপমাত্রা ছিলো -১ ডিগ্রি। সকাল ১০ টায় কোলন থেকে জার্মানির সীমান্তবর্তী শহর আখেনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি।
বলে রাখি, আখেনে জার্মানি, নেদারল্যান্ড এবং বেলজিয়ামের সীমান্ত এসে মিলেছে। বাংলাদেশে হানিফ সংকেত সাহেব একবার ইত্যাদিতে আখেনের এই বর্ডার পিলারে একটা প্রতিবেদন করেছিলেন, পিলারের তিন দিকে তিন দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক। আখেনে এসে পৌঁছাই ১১:১৫ তে। কিছুক্ষন ঘুরে , ছবি তুলে নেদারল্যান্ডের বাসে উঠি। বাস ড্রাইভার জার্মান জানেন না ভালো, তবে সে আমাদের ৬.৫০ ইউরো করে টিকেট দেয় একটা ওয়ানওয়ে ডে টিকেট, যা দিয়ে নেদারল্যান্ডের লিমবার্গগামী যে কোন বাসে রাত ৩:৫৯ মিনিট পর্যন্ত চড়তে পারবো। আমার সফরসঙ্গী মেধাবী দুজন মানুষ; সাজ্জাদ ভাই এবং ইনাস আপু ।
যেহেতু টিকিটটা ডাচ ভাষায় লিখা কিছু লেখা জার্মান জানা আছে বলে আন্দাজ করে বুঝতে পারি, মাসট্রিখটে এসে পৌঁছাই মোটামুটি বেলা ১টার দিকে। নেমেই আমি টিকিট নিয়ে রাইজেসেন্ট্রুমে গিয়ে জেনে নিলাম যে টিকিট টা রিটার্ন টিকিট কিনা, লোকটা জানালো যে টিকিটটা রিটার্ন টিকেট না এবং হাসি দিয়ে আমাদের ৩ টা রিটার্ন টিকেট উপহার হিসেবে দিলো। আমাদের খুশি আর দেখে কে !
আমরা ঘুরতে বের হয়ে গেলাম শহর। যদিও আমাদের কাছে নেদারল্যান্ডের ডে টিকেট ছিলো, আমরা হাঁটাকেই প্রাধান্য দিলাম। হেঁটে আমরা ৫ ঘন্টায় শহরের অনেক বিখ্যাত স্থাপনা ঘুরে দেখলাম।
ছবির মতো সুন্দর এক শহর Maastricht । আসলে এর সৌন্দর্যের বর্ননা লিখে শেষ করা যাবেনা। ইনাস আপুর কাছে নাকি এ শহর জার্মানির থেকেও বেশী সুন্দর লেগেছে।
নেদারল্যান্ড আসলেই খুব সুন্দর এক দেশ, সামনে যাবো আমস্টারডাম এবং রোটারড্যাম এ। ততদিন পর্যন্ত ভালো থেকো নেদারল্যান্ড ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯