somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

কবীরা গোনাহসমূহ: আসুন, জেনে নিই কুরআন সুন্নাহর আলোকে

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহি লা- তারা-হুল উইয়ূ-ন, ওয়ালা- তুখ-লিতুহুজ্জুনূ-ন, ওয়ালা- ওয়াসিফুহুল ওয়াসিফূ-ন। অচ্ছলা-তু অচ্ছালা-মু আলা মাল্লা- নাব্যিা বা'দাহু। মুমিন মুত্তাক্কী ব্যক্তি হবেন নেককার। সদা ভাল কাজে লিপ্ত থাকবেন এটাই প্রত্যাশিত। মাকরূহ বা অপছন্দনীয় কর্মকান্ড পরিহার করে জীবনযাপনের চেষ্টা করবেন। আর সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন, হারাম ও কবীরা গোনাহ-সমূহ থেকে শত যোজন দূরে থাকতে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, শত চেষ্টার পরেও কিছু অপরাধ সংঘটন হতেই পারে। তবে কুরআনুল কারীম এবং হাদিস শরীফের ভাষ্যানুসারে আমরা অবগত হতে পারি, আমাদের ছোটখাট পাপ ও লঘূ ভুলভ্রান্তি আল্লাহ পাক আমাদের নেক কর্মের কারণে ক্ষমা করে দিতে পারেন। এজন্য আমাদের উচিত, কঠিন বা বড় পাপকার্য্যগুলো সম্মন্ধে জেনে সেগুলো থেকে সদা সর্বদা দূরে থাকার জন্য সচেষ্ট হওয়া।

কবীরা গোনাহ কী?

কবীরা গোনাহ কী? কোন্ কোন্ অপরাধ কবীরা গোনাহর আওতায় পড়ে, এর সংজ্ঞা, সংখ্যা এবং পরিচয় নিয়ে উলামায়ে কিরাম বিশদ মতামত পেশ করেছেন। মূলত: যে সকল পাপের বিষয়ে কুরআনুল কারীম অথবা হাদীস শরীফে কঠিন গজব, শাস্তি কিংবা অভিশাপের উল্লেখ করা হয়েছে বা যে সকল কর্মকে কুরআন বা হাদীসে কঠিন অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোকে কবীরা গুনাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও অনেক অপরাধকে অপরাধের প্রকৃতি, অবস্থা এবং ভয়াবহতা বিবেচনায় গোনাহে কবীরার আওতায় আনা হয়েছে। এতদ্ব্যতিত যে কোনো সাধারণ পাপের চর্চা সর্বদা করলে তাও বড় পাপে তথা কবীরা গোনাহে পরিণত হয়।

ইমাম যাহাবী “আল-কাবাইর” গ্রন্থে কবীরা গুনাহ বিষয়ক আয়াত ও হাদীসসমূহ সংকলিত করেছেন। যে সকল পাপকে কুরআন বা হাদীসে বড় পাপ বা কঠিন শাস্তি, গজব বা অভিশাপের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি সেগুলির তালিকা প্রদান করেছেন। আমরা অত্র নিবন্ধে সেগুলো সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপনের প্রয়াস পাব। অত:পর এসবের ভেতর থেকে বিশেষ কতগুলো পাপ যা আমাদের নেক কাজগুলোকে বিনষ্ট করে দেয় সেগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব, ইনশা-আল্লাহ।

এ সকল পাপ বা অপরাধকে আমরা দুইভাগে ভাগ করতে পারি: ব্যক্তিগত বা হক্কুল্লাহ বিষয়কসামাজিক বা হক্কুল ইবাদ বিষয়ক। যদিও উভয় প্রকার পাপই আল্লাহ পাকের অবাধ্যতা ও পরস্পর সম্পৃক্ত এবং কবীরা গোনাহ, তবুও বুঝার সুবিধার্থে এগুলোকে দু’ভাগ করে আলোচনা করছি:

ক. হক্কুল্লাহ বিষয়ক কবীরা গুনাহসমূহ

১. ঈমান বিষয়ক: শিরক, কুফর, নিফাক, বিদ‘আত, আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপত্তা-বোধ করা, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, তকদীরে অবিশ্বাস করা, গনক বা জ্যোতিষীর কথা সত্য মনে করা, অশুভ, অমঙ্গল বা অযাত্রায় বিশ্বাস করা, মক্কার হারামে যে কোনো প্রকার অন্যায় করার ইচ্ছা, যাদু শিক্ষা বা ব্যবহার, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জবাই করা, নিজের জীবন, সম্পদ, ও সকল মানুষের চেয়ে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বেশি ভালবাসায় ত্রুটি থাকা, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামে মিথ্যা হাদীস বলা, নিজের পছন্দ-অপছন্দ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সুন্নাত ও শরীয়তের অনুগত না হওয়া, বিদ‘আতে লিপ্ত হওয়া, আত্মহত্যা করা।

২. ফরয ইবাদত পরিত্যাগ বিষয়ক: সালাত পরিত্যাগ, যাকাত প্রদান থেকে বিরত থাকা, ওজর ছাড়া রমযানের সিয়াম পালনে অবহেলা, জুমু‘আর সালাত পরিত্যাগ করা, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হজ্ব আদায় না করা, ধর্ম পালনে অতিশয়তা বা সুন্নাতের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ইবাদত করা, সালাতরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে গমন করা।

৩. হারাম খাদ্য ও পানীয়: মদপান, মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত ও শূকরের গোশত ভক্ষণ করা, স্বর্ণ বা রৌপ্যের পাত্রে পান করা।

৪. পবিত্রতা ও অন্যান্য অভ্যাস বিষয়ক: পেশাব থেকে পবিত্র না হওয়া, মিথ্যা বলার অভ্যাস, প্রাণীর ছবি তোলা বা আঁকা, কৃত্রিম চুল লাগান, শরীরে খোদাই করে উল্কি লাগান। পুরুষের জন্য মেয়েলী পোশাক বা চাল চলন, টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পোশাক পরা, সোনা ও রেশমের ব্যবহার, গোফ বেশি বড় করা, দাড়ি না রাখা। মেয়েদের জন্য পুরুষালী পোশাক বা আচরণ, সৌন্দর্য প্রকাশক পোশাক পরিধান করে, মাথা, মাথার চুল বা শরীরের কোনো অংশ অনাবৃত রেখে বা সুগন্ধি মেখে বাইরে যাওয়া।

৫. অন্তরের বা মনের পাপ: অহংকার, গর্ব করা, নিজেকে বড় ভাবা, নিজের মতামত বা কর্মের প্রতি পরিতৃপ্ত থাকা, রিয়া, হিংসা, কোনো মুসলিমকে হেয় বা ছোট ভাবা, ক্রোধ, প্রশংসা ও সম্মানের লোভ, সম্পদের লোভ, কৃপণতা, নিষ্ঠুরতা, দ্বীনী ইল্ম পার্থিব উদ্দেশ্যে শিক্ষা করা, ইল্ম গোপন করা।

এগুলোর মধ্যে কিছু পাপের সাথে মানুষের অধিকার জড়িত। মিথ্যা হাদীস বলা এমনিতেই ভয়ঙ্করতম পাপ। সাথে সাথে এ মিথ্যা দ্বারা যারা বিপথগামী হয় তাদের সকলের পাপের ভাগ পেতে হয় উক্ত মিথ্যাবাদীকে। যাকাত প্রদানে অবহেলা করলে একদিকে আল্লাহ পাকের অবাধ্যতা ও ইসলামের রুকন নষ্ট করা হয়। সাথে সাথে সমাজের দরিদ্রদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ইলম গোপন করলে সাধারণত সমাজের মানুষেরা অজ্ঞতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং এ আলিম তাদের অপরাধের জন্য দায়ী থাকেন।

যাদু ও মিথ্যা বলার অভ্যাস যদি কারো কোনো ক্ষতি না করে তাহলেও তা কবীরা গোনাহ। পক্ষান্তরে কারো কোনো প্রকার ক্ষতি করলে তা দ্বিতীয় একটি কবীরা গোনাহের দ্বার খুলে দেয়। দু'টি কবীরা গোনাহের পাপ একত্রিত হয় এক ব্যক্তির আমলনামায়। অনুরূপভাবে অহংকার, হিংসা, কাউকে হেয় ভাবা ইত্যাদি ব্যক্তিগত কবীরা গোনাহ হলেও সাধারণত এগুলোর অভিব্যক্তি ব্যক্তির বাইরে প্রকাশিত হয়ে অন্যদের কষ্ট দেয়। তখন তা আরো অনেক হক্কুল ইবাদ সংশ্লিষ্ট কবীরা গোনাহের মধ্যে ব্যক্তিকে নিপতিত করে। কৃপণতা যদিও মানসিক পাপ ও ব্যাধি, কিন্তু সাধারণত এ ব্যধি মানুষকে বান্দার হক নষ্ট বা ক্ষতি করার অনেক পাপের দিকে প্ররোচিত করে।

খ. সৃষ্টির অধিকার সংক্রান্ত কবীরা গোনাহসমূহ

কুরআন-হাদীসের আলোকে মানুষের মূল দায়িত্ব দুটি ও পাপের সূত্রও দুটি। প্রথম দায়িত্ব, মানুষ তার মহান প্রভুর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস, অগাধ ভালবাসা ও আস্থা পোষণ করবে এবং এ আস্থা, বিশ্বাস ও ভালবাসা বৃদ্ধিপায় এমন সকল কর্ম আল্লাহ পাকের মনোনীত রাসূলের শিক্ষা অনুসারে পালন করবে। আর এ দায়িত্বে অবহেলা সৃষ্টি করে এমন সকল কর্ম বা চিন্তা-চেতনাই প্রথম পর্যায়ের পাপ।

মানুষের দ্বিতীয় দায়িত্ব, এ পৃথিবীকে সুন্দর বসবাসযোগ্য করতে তার আশেপাশের সকল মানুষ ও জীবকে তারই মতো ভালভাবে বাঁচতে সাহায্য করা। আর এ দায়িত্বের অবহেলাজনিত কর্মই দ্বিতীয় পর্যায়ের পাপ। আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট প্রদান, ক্ষতি করা, শান্তি বিনষ্ট করা বা অধিকার নষ্ট করাই মূলত সবচেয়ে কঠিন অপরাধ। এ জাতীয় পাপগুলো কুরআন-হাদীসে বেশি আলোচনা করা হয়েছে। একই জাতীয় পাপের শাখা প্রশাখাকে বিশেষভাবে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এর তালিকাও অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।



১. ইসলাম নির্ধারিত শাস্তিযোগ্য অপরাধে অপরাধীর (চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি) শাস্তি মওকুফের জন্য সুপারিশ বা চেষ্টা করা।

২. আইনের মাধ্যমে বিচার ছাড়া কোনো মানুষকে হত্যা করা। এমনকি ডাকাতী, খুন, ধর্মদ্রোহিতা ইত্যাদি ইসলামী বিধানে যে অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বলে নির্ধারিত সে অপরাধে লিপ্ত ব্যক্তিকেও কোনো ব্যক্তি নিজের হাতে শাস্তি দিলে তা হত্যা। একমাত্র উপযুক্ত আদালতের বিচারের মাধ্যমেই অপরাধীর অপরাধ, তার মাত্রা ও শাস্তি নির্ধারিত হবে। যথাযথ বিচারে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে অপরাধী মনে করা বা শাস্তি দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টির অধিকার নষ্টকারী কঠিন অপরাধ।

৩. রাষ্ট্রপ্রধান, প্রশাসক বা বিচারক কর্তৃক জনগণের দায়িত্ব, সম্পদ বা আমানত আদায়ে অবহেলা করা বা ফাঁকি দেওয়া।

৪. নাগরিক কর্তৃক রাষ্ট্রপ্রধান, শাসক, প্রশাসক বা প্রধানকে ধোঁকা দেওয়া বা রাষ্ট্রের ক্ষতিকর কিছু করা।

৫. রাষ্ট্র বা সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বা সশস্ত্র বিদ্রোহ।

৬. অন্যায় দেখেও সাধ্যমতো প্রতিকার বা প্রতিবাদ না করা।

৭. ‘বাইয়াত’ অর্থাৎ ‘রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের শপথের’ বাইরে থেকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বা ‘অবাধ্য’ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা।

৮. রাষ্ট্র প্রশাসনের অন্যায় বা জুলুম সমর্থন বা সহযোগিতা করা।

৯. সমাজের মানুষদেরকে কবীরা গোনাহের কারণে কাফির বলা বা মনে করা।

১০. বিচারকের জন্য ন্যায় বিচারে একনিষ্ঠ না হওয়া বা বিচার্য বিষয়ের বাইরে কোনো কিছু দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিচার করা।

১১. আইন প্রয়োগকারীর জন্য আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করা ও আপনজনদের জন্য হালকাভাবে শাস্তি প্রয়োগ করা।

১২. মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান বা প্রয়োজনের সময় সত্য সাক্ষ্য প্রদান না করা।

১৩. রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ বা ভোগ করা, তা যত সামান্যই হোক।

১৪. মুনাফিককে নেতা বলা।

১৫. জিহাদের মাঠ থেকে পালিয়ে আসা।

১৬. মুসলিমগণকে কষ্ট প্রদান ও গালি দেওয়া।

১৭. যবরদস্তি, মিথ্যা মামলা বা অবৈধভাবে কোনো মানুষ থেকে কিছু গ্রহণ করা।

১৮. হাটবাজার, রাস্তাঘাটে টোল আদায় করা বা চাঁদাবাজী করা।

১৯. মুসলিম সমাজে বসবাসরত অমুসলিম নাগরিককে কষ্ট প্রদান বা তার অধিকার নষ্ট। যে কোনো মানুষকে কষ্ট দেওয়াই কঠিন পাপ। তবে হাদীস শরীফে বিশেষ করে অমুসলিম ও সমাজের দুর্বল শ্রেণীগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ নির্দেশনা তো আছেই।

২০. কোনো মহিলা বা এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা। যে কোনো মানুষের সামান্য সম্পদ অবৈধভাবে গ্রহণ অন্যতম কবীর গোনাহ। তবে মহিলা ও এতিম যেহেতু দুর্বল এজন্য হাদীসে তাদের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে তাদের সম্পদ অবৈধ ভোগকারীর কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

২১. আল্লাহর প্রিয় ধার্মিক বান্দাগণকে কষ্ট প্রদান বা তাদের সাথে শত্রুতা করা।

২২. প্রতিবেশীর কষ্ট প্রদান।

২৩. কোনো মাজলিসে এসে খালি জায়গা দেখে না বসে ঠেলাঠেলি করে অন্যদের কষ্ট দিয়ে মাজলিসের মাঝে এসে বসে পড়া বা
এমনভাবে মাঝে বসা যাতে অন্য মানুষদের অসুবিধা হয়।

২৪. কারো স্ত্রী বা চাকর বাকরকে ফুসলিয়ে সরিয়ে দেওয়া।

২৫. কর্কশ ব্যবহার ও অশ্লীল- অশ্রাব্য কথা বলা।

২৬. অভিশাপ বা গালি দানে অভ্যস্ত হওয়া।

২৭. কোনো মুসলিমের দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে কিছু অর্থলাভ করা।

২৮. তিন দিনের অধিক কোনো মুসলিমের সাথে কথাবার্তা বন্ধ রাখা।

২৯. মুসলিমগণের একে অপরকে ভাল না বাসা বা ভালবাসার অভাব থাকা।

৩০. মুসলিমদের গোপন দোষ খোঁজা, জানা ও বলে দেওয়া।

৩১. নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্যের জন্য তা পছন্দ না করা।

৩২. কোনো ব্যক্তিকে তার বংশের বিষয়ে অপবাদ দেওয়া।

৩৩. পিতামাতার অবাধ্য হওয়া বা তাঁদের কষ্ট প্রদান করা।

৩৪. সুদ গ্রহণ করা, প্রদান করা, সুদ লেখা বা সুদের সাক্ষী হওয়া।

৩৫. ঘুষ গ্রহণ করা, প্রদান করা ও ঘুষ আদান প্রদানের মধ্যস্থতা করা।

৩৬. মিথ্যা শপথ করা।

৩৭. হীলা বিবাহ করা বা করানো।

৩৮. আমানতের খেয়ানত করা।

৩৯. কোনো মানুষের উপকার করে পরে খোটা দেওয়া।

৪০. মানুষের গোপন কথা শোনা বা জানার চেষ্টা করা।

৪১. স্ত্রীর জন্য স্বামীর অবাধ্য হওয়া।

৪২. স্বামীর জন্য স্ত্রীর টাকা বা সম্পদ তার ইচ্ছার বাইরে ভোগ বা দখল করা।

৪৩. চোগলখুরী করা বা একজন মানুষের কাছে অন্য মানুষের নিন্দামন্দ ও শত্রুতামূলক কথা বলে উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক নষ্ট করা।

৪৪. গীবত বা পরচর্চা করা। অর্থাৎ কারো অনুপস্থিতিতে তার মধ্যে বিরাজমান বাস্তব ও সত্য দোষগুলো উল্লেখ করা।

৪৫. অসত্য দোষারোপ করা। অর্থাৎ কারো মধ্যে যে দোষ বিরাজমান নেই অনুমানে বা লোকমুখে শুনে তার সম্পর্কে সে দোষের কথা উল্লেখ করা।

৪৬. জমির সীমানা পরিবর্তন করা।

৪৭. মহান সাহাবীগণকে গালি দেওয়া।

৪৮. আনসারগণকে গালি দেওয়া।

৪৯. পাপ বা বিভ্রান্তির দিকে বা খারাপ রীতির দিকে আহ্বান করা।

৫০. কারো প্রতি অস্ত্র জাতীয় কিছু উঠান বা হুমকি প্রদান।

৫১. নিজের পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলা।

৫২. জেদাজেদি ঝগড়া, বিতর্ক কলহ বা কোন্দল।

৫৩. ওজন, মাপ বা দ্রব্যে কম দেওয়া বা ভেজাল দেওয়া।

৫৪. কোনো উপকারীর উপকার অস্বীকার করা বা অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

৫৫. নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অন্যকে প্রদান থেকে বিরত থাকা।

৫৬. কোনো প্রাণীর মুখে আগুনে পুড়িয়ে বা কেঁটে দাগ বা মার্কা দেওয়া।

৫৭. জুয়া খেলা।

৫৮. অবৈধ ঝগড়া বা গোলযোগে সহযোগিতা করা।

৫৯. কথাবার্তায় সংযত না হওয়া।

৬০. ওয়াদা ভঙ্গ করা।

৬১. উত্তরাধিকারীকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা।

৬২. স্বামী বা স্ত্রী কর্তৃক তাদের একান্ত গোপনীয় কথা অন্য কাউকে বলা।

৬৩. কারো বাড়ি বা ঘরের মধ্যে অনুমতি ছাড়া দৃষ্টি করা।

৬৪. কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে সাহায্য বা ক্ষমা চাইলে আর তার প্রতি বিরক্ত থাকা অথবা তাকে ক্ষমা বা সাহায্য না করা।

৬৫. যা কিছু শোনা হয় বিচার বিশ্লেষণ ও সত্যাসত্য নির্ধারণ না করে তা বলা।

৬৬. বঞ্চিত ও দরিদ্রদেরকে খাদ্য প্রদানে ও সাহায্য দানে উৎসাহ না দেওয়া।

৬৭. ব্যভিচার, সমকামিতা বা যৌন অনাচার ও অশ্লীলতা।

৬৮. নিরপরাধ মানুষকে, বিশেষত মহিলাকে ৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষাীর সুস্পষ্ট সাক্ষ্য ছাড়া ব্যভিচার বা অনৈতিকতার অপবাদ দেওয়া।

৬৯. সমাজে অশ্লীলতা প্রসার করতে পারে এমন কোনো গল্পগুজব বা কথাবার্তা বলা বা প্রচার করা। এর মধ্যে সকল পর্নোগ্রাফি, ছবি, অশ্লীল উপন্যাস ও গল্প অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর প্রচার, বিক্রয়, আদান প্রদান সবই কবীরা গোনাহ।

উপরে বর্নিত সকল পাপই অত্যন্ত ক্ষতিকর। কুরআন ও হাদীসে এগুলোর ভয়ঙ্কর শাস্তি ও খারাপ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কোনো কোনো পাপ নেক আমলের ফলে আল্লাহ ক্ষমা করতে পারেন। আবার কোনো কোনো পাপ সকল নেক আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। এ সকল ইবাদত বিনষ্টকারী পাপের অন্যতম শিরক, কুফর, অহঙ্কার, হিংসা, অপরের অধিকার নষ্ট করা, গীবত করা ইত্যাদি। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে বর্নিত পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন। মহা মহিয়ান প্রভূর অন্তহীন রহমতের ছায়াতলে আশ্রয়দানে ধন্য করুন। আমীন।

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:১২
২৩টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×