লোকের হাতে হাতে প্রযুক্তি পৌঁছায়া যাওয়ার যেমন উপকারিতা আছে তেমন অপকারিতাও আছে অনেক...
কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক নিউজ যেমন প্রচার হইয়া যায় তেমন আবার ভুয়া নিউজও ছড়ায় ম্যালা..
এই যেমন ধরেন রোহিঙ্গাদের সাথে ঘইটা যাওয়া নৃশংসতার বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিও মানুষের হাতে হাতে পৌঁছাইলো কিন্তু পরে দেখা গ্যালো প্রচুর ভুয়া, অন্য ঘটনার কোনো ছবি, এমনকি ফটোশপ করা ছবিও রোহিঙ্গাদের সাথে ঘটা নৃশংসতা বইলা প্রচার চালাইছে সুবিধাবাদী অথবা হুজুগে পাবলিক..
কিছুদিন আগে বামরা আন্দোলন করলো, রেজিস্টার বিল্ডিং এর গেইট ভাইঙ্গা ভিসি স্যাররে বাইর করলো.. পরে সেইখানে ছাত্রলীগ উপস্থিত হওয়াতে একটা ক্যাচাল তৈরি হইলো.... কালকে দেখলাম সেই ঘটনার ভিডিও রে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা বইলা চালায়া দিতেছেন একটা সুবিধাবাদী মহল.... আর হুজুগে বাঙালি শেয়ার দিয়া তাগো উদ্দেশ্য সফল কইরা দিতেছে নিজেদের অজান্তেই...
রাত্রে একটা নিউজ দ্রুত ছড়াইলো.. আমার হলের প্রেসিডেন্ট নাকি এক মাইয়ার ঠ্যাং এর রগ কাটছে.. অবাক হইলাম... ছাত্রলীগ কবে থিকা শিবির হয়া উঠলো!
সারারাত হলের বাইরে ছাত্ররা আন্দোলন করলো... রাতেই সেই নেত্রীরে প্রথমে দল থিকা, পরে হল আর ইউনিভার্সিটি থিকা বহিষ্কার করা হইলো...
সকাল হইতে না হইতে আসল খবর জানা গেলো....
আসলে কেউ ওই মেয়ের রগ কাটে নাই.... নেত্রীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই মেয়ে জানলার কাচে লাত্থি মাইরা পা কাইটা ফেলছে এবং চমৎকার নাটক সাজাইছে যে তার পায়ের রগ কাইটা দেওয়া হইছে... এবং প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় এই কথা দ্রুত ছড়াইলো..... সারারাত ছাত্ররা হলের বাইরে আন্দোলন করলো এইটা জাইনা যে নেত্রী এক সাধারণ ছাত্রীর পায়ের রগ কাইটা দিছে...
ইফফাত বিভিন্ন সময় দলীয় মেয়েদেরকে চর থাপ্পড় মারতো সেজন্য তারে দল থিকা বহিষ্কার করা যাইতেই পারে সেইটা অন্য আলোচনা কিন্তু এই যে মিথ্যা নাটক এইটা যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেইটা তো স্পষ্ট..... আর এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা খবর বাতাসের গতিতে যারা ছড়াইলো.... এদেরকে চিন্হিত করা জরুরী.... কি তাদের উদ্দেশ্য সেইটাও জানা জরুরী.....
সম্ভবত হুজুগে বাঙালিদের এবার আরেকটু সচেতন হবার সময় হইছে... কান চিলে নিছে শুইনা কানে হাত না দিয়া বেহুদা চিলের পিছে দৌড়ায়া আর কত সময় নষ্ট করবেন!
লাস্টলি শুধু একটা কথাই বলি , কোটা সংস্কার আন্দোলন কোনো মেধাবীদের আন্দোলন না.... কোনো মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনার আন্দোলন না..... কোনো রাজাকারের আন্দোলন না.... কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন না....
প্রথমত এটি মিডল ক্লাশ এবং লোয়ার মিডলক্লাশের আন্দোলন যারা সরকারি চাকরি পাইতে চান এবং নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটাইতে চান..... এই আন্দোলনের সাথে বেশীরভাগ ছাত্র এবং একদল সদ্য বেকার জড়িত বলে একে অনেকাংশে ছাত্র আন্দোলন বলা যাইতে পারে....
কিন্তু যে বা যারা এইটারে ছাত্রলীগ, ছাত্রদলের রাজনৈতিক খাতে প্রবাহের চেষ্টা করতেছেন.... গুজব ছড়াইতেছেন..... তাদের থেকে সাবধান থাকেন নাইলে আপনাদের আন্দোলন অধিকার আদায় তো করতেই পারবে না বরং বেহাত হয়ে রাজনৈতিক নেতাদের ঝুলিতে গিয়ে আশ্রয় নিবে..... কোটা সংস্কার আন্দোলনরে ভোটের রাজনীতির খাতে প্রবাহিত হইতে দিয়েন না.... একবার যখন ক্যাম্পাসের মাটিতে রক্ত ঝরাইছেন তখন দাবি আদায় না কইরা রাজপথ ছাইড়েন না.... আপনার রক্ত নিয়া কাউরে রাজনীতি করতে দিয়েন না
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৪