somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুকে এত ভাল লাগে কেন ? বনফুলের ব্যাখ্যা

০২ রা এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিরপেক্ষভাবে বিচার করে যেকোন বুদ্ধিমান লোকই বলতে বাধ্য যে শিশু মাত্রই বর্বর, অমার্জিত, অসভ্য, নগ্ন পশু।আমরা অমার্জিত, অসভ্য, নগ্ন পশু-প্রকৃতির প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষকেতো সহ্য করি না।শুধু যে সহ্য করি না তা নয়, এই সব অমার্জিত, অসভ্য, নগ্ন পশু-প্রকৃতিকে দমন করার জন্য আমরা অর্থাৎ সুসভ্য সমাজ যুগে যুগে নানা কৌশল অবলম্বন করেছি।আইন, আদালত, জেলখানা, ফাঁসিকাঠ, শাস্ত্র, বচন, উপদেশ, নীতিকথা, নরক-ভীতি এগুলোর সবই পৃথকভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে এই পশু-প্রকৃতি দমনের জন্যই ব্যাবহার করছি। অথচ শিশুর মধ্যে সেই বর্বরতাই আমাদের আনন্দ দেয়।

কিন্তু কেন? অনেকর ধারনা, শিশুরা অসহায় বলেই তাদের প্রতি সভ্য মানুষের একটা সহজাত অনুকম্পা আছে, আর এই অনুকম্পাই ক্রমশ অনুরাগে রুপান্তরিত হয়। শুধু শিশুই নয়, আমরা যে নারীকেও তার প্রতি সৌজন্য প্রকাশের জন্য ব্যাগ্র হই তারও মূল কারণ তাদের অসহায় অবস্থা। অসহায় ও অক্ষমকে ভালবেসে, রক্ষা করে, সম্মান করে সভ্য পুরুষ নিজের পৌরুষকেই সার্থক করে। শিশু ও নারী যদি দূর্বল না হত তবে আমরা তাদের এত অত্যাচার সহ্য করতাম না। নারী পুরুষ হলে অথবা শিশু প্রাপ্তবয়ষ্ক হলে আর আমাদের আনন্দ দিতে পারে না। তাদের অক্ষমতাই তাদের অস্ত্র।

আরেকদিক থেকে চিন্তা করলে, মুসোলিনি, হিটলার, আলেকজান্ডার এসব প্রতাপশালী ডিক্টেটররাও তো এক হিসেবে কম বর্বর না, এদেরকে কোনভাবে অসহায়ও বলা যাবে না। অথচ সভ্য সমাজ তো এদের স্বচ্ছন্দে সহ্য করে যাচ্ছে। শুধু সহ্য করে যাচ্ছে না, রীতিমত শ্রদ্ধায় সম্ভ্রমে গলে পরছে।

তাহলে কি, যে যে কারণে আমরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে সহ্য করি, মৃত্যুকে সহ্য করি- শুধু সহ্য করি না, তাদের কেন্দ্র করে নানারকম কাব্য করি এবং তাদের আবির্ভাবের কারন ও যৌক্তিকতা নির্ধারনে ব্যার্থ হয়ে অবশেষে অজ্ঞাত অলৌকিক শক্তির আশ্রয় নিই- সেই কারনেই আমরা শিশু, নারি ও হিটলারকে সহ্য করি এবং তাদের লীলা দেখে আনন্দিত হই?

অর্থাৎ উপায় নেই। অসহায় তারা নয়- আমরাই অসহায়। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অদম্য প্রাণশক্তিকে রোধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। আর নেই বলেই তাদের নানা উপদ্রবের মধ্যে একটা সৌন্দর্য্য, একটা লীলা আবিষ্কার করে নিজেদের অজ্ঞাতসারে আমরা আমাদের অক্ষমতাজনিত লজ্জাকে চাপা দিয়ে জ্ঞাতসারে পুলকিত হয়ে উঠি!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিমকে বিভিন্ন নিয়মে ইবাদত করতে কে বলেছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:৪৭



সূরাঃ ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ার রক্তচোখ: ক্রোধের নগর

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫২


ষড়ঋপু সিরিজের দ্বিতীয় কাহিনী ”ক্রোধ”

রাত্রি নেমেছে শহরের উপর, কিন্তু তিমির কেবল আকাশে নয়—সে বসেছে মানুষের শিরায়, দৃষ্টিতে, শ্বাসে। পুরনো শহরের এক প্রান্তে, যেখানে ইট ভেঙে পড়ে আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২



প্রিয় কন্যা আমার-
ফারাজা, তুমি কি শুরু করেছো- আমি কিছুই বুঝতে পারছি না! রাতে তুমি ঘুমানোর আগে ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমাতে যাও। প্রতিদিন তোমার মুখে ঘুমের দোয়া শুনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৪



পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

'৭৪ সালের কুখ্যাত বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এখন সময়ের দাবী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫


বিগত আম্লিক সরকারের আমলে যে কুখ্যাত আইনের অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করে গায়েব করার চেষ্টা চলতো তা হলো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। এই আইন ব্যবহার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×