ব্লগে সর্বশেষ এসেছিলাম জুলাই মাসে। ৯ জুলাই একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। এরপর কি সমস্যা হয়েছে কিছুই বুঝতে পারিনি। কোনভাবেই আমি আমার ব্লগে লগইন করতে পারছিলাম নাহ। সঠিক পাসওয়ার্ড দেয়ার পরেও আমার পাসওয়ার্ড ভুল দেখাচ্ছিলো। ইমেইলের মাধ্যমে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে আবারো চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তবুও লগইন হচ্ছিলো না। বরাবরের মতই পাসওয়ার্ড ভুল দেখাচ্ছিলো। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম নাহ। দুয়েকজন পরিচিত ব্লগারের সাহায্য চেয়েছিলাম ইমেইলের মাধ্যমে। উনারা যথাসম্ভব চেষ্টা ও সাহায্য করেছেন। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, কোনভাবেই সফল হতে পারিনি। এমনিভাবে দুই মাস কেটে গেল। এরপর গত কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই দেখি ব্লগে লগইন হচ্ছে। খুব সম্ভবত আমার ডিভাইসের কোন প্রবলেম ছিল। যাইহোক, অবশেষে প্রবলেম সলভড হলো।
দুই মাসে আগে সর্বশেষ যখন ব্লগে ছিলাম তখন লেখা চুরি নিয়ে ব্লগ খুব সরগরম ছিলো। এছাড়াও পারস্পরিক কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ি, ঝগড়া বিবাদ এসব তখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিলো। ব্লগের প্রতি একধরণের বিরক্তিও এসে গিয়েছিল। এতদিন পর ব্লগে এসে ভেবেছিলাম হয়তো সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। এই ব্লগটিতে প্রতিনিয়ত লেখা চুরির অভিযোগ, পারস্পরিক আক্রমণাত্মক পোস্ট কমেন্ট করা এখন কমন একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কবে এই অবস্থা থেকে আমরা বের হতে পারবো? এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?
লেখা চুরি বা কপি করাটাও এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। গতমাসে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে বাৎসরিক ম্যাগাজিন প্রকাশিত হলো। বিগত দুই বছরই ম্যাগাজিনটির সম্পাদনা পরিষদের সদস্য হিসেবে আছি আমি। তো, যথাসময়ে লেখা আহবান করে ফেসবুকে পোস্ট দিলাম এবং প্রতিটি ক্লাসেও লেখা আহবানের নোটিশ দেয়া হলো। নির্ধারিত সময়ে প্রচুর লেখা হাতে পেয়েছিলাম আমরা। আমি আমার সহযোগী সদস্যদের নিয়ে লেখা বাছাই করতে বসলাম। একেকটা লেখা পড়ি আর পোলাপাইনের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হই। অনেকেই একাধিক লেখা জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে একটা মেয়ের নামে ৮টা লেখা পেলাম। লেখাগুলো পড়তেই খটকা লাগলো। কিছু কিছু লেখা দেখলেই বুঝা যায় যে এগুলা কপি করা লেখা। সবাইকে নকল লেখা ধরার জন্য একটা সহজ উপায় অবলম্বন করতে বললাম। যে লেখাটায় খটকা লাগবে সেটার কয়েকটা লাইন গুগলে সার্চ করলেই কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। তো মেয়েটির লেখাগুলো গুগলে সার্চ করে দেখা গেল সে রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা দুটো কবিতা পুরো কপি পেস্ট করে দিয়েছে। অন্যান্য লেখাগুলোও বিভিন্ন বই থেকে সংগ্রহ করা।
প্রযুক্তির এই যুগে লেখা চুরি করাটা যেমন সহজ, তেমনি চোর ধরাও খুব একটা কঠিন না। নির্ধারিত সময়ে ম্যাগাজিন বের হলো। এর কিছুদিন পর সেই মেয়েটি আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে অনেক কথা শুনালো। সে কত কষ্ট করে এতগুলো লেখা লিখেছে। আর আমি তাঁর একটাও লেখা কেন রাখলাম না। এই নিয়ে কত শত অভিযোগ করলো। আমি বেশি কিছু কইলাম না। চুরি করছে তো করছে। তার উপর আবার বড় গলায় গলাবাজি শুরু করলো। একেই তো বলে চোরের মার বড় গলা। আরে চুরুনী, চুরি করলি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা, কোন অখ্যাত লেখকের হলেও না হয় আমরা ধরতে পারতাম না। চুরি করাটাও ঠিকমত শিখলিনা এখনো।
সবশেষে, সামুতে সকলের নিকট সুস্থ ব্লগিং কামনা করি। সবাই ভালো থাকুন।সুস্থ থাকুন। সুন্দর থাকুন। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৪