প্রতিশোধ-দ্যা রিভেঞ্জ ৩ > প্রেম, বন্ধুত্ব ও ধোকার গল্প...
লেখকঃ নিলয় আহসান নিশো
..
...
(১)
..
...
আজ শুক্রবার...
আমি আর সামির মেসেই শুয়ে আছি।আমার অফিসের কাজ গুলো সামির কে করতে দিছি।আমি আর সামির বেষ্ট ফ্রেন্ড। আমরা একসাথে MBA করছি।আমি MBA এর পাশাপাশি জব করি আর সামির জব করে না।তাই আমার অফিসের কাজের চাপ বেড়ে গেলে সামির আমাকে সাহায্য করে।
আজকেও তাই করছিল।
..
...
হঠাত দরজায় নক হল।আমি ওয়াশরুমে ছিলাম তাই সামির গিয়ে খুলে দিল।আমি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখি অপ্সরী এসেছে।সাথে অনেক রান্না করেও এনেছে আজ শুক্রবার তাই।ওহ হ্যা.. অপ্সরী হল সামিরের একমাত্র ছোটবোন।সামিরের বাসা বেশি দূরে না তবুও সে মেস এ থেকে পড়ালেখা করে।আর তাই মাঝেই মাঝেই অপ্সরী আমাদের দুজনের জন্য রান্মা করে নিয়ে আসে।
..
...
আমাকে দেখে অপ্সরী বলে উঠলো কেমন আছো...
আমি বললাম ভাল...
তারপর ৩জন মিলে খাবার খেয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম।হঠাত অপ্সরী সামিরকে বলে উঠলো...
ভাইয়া আমার কিছু শপিং করতে হবে.. নিয়ে যাবে আমাকে?
সামির বললো আমি পারবো না... আমি নিলয়ের অফিসের প্রেজেন্টেশন করছি।এক কাজ কর... তুই নিলয় কে নিয়ে যা।আমি এইসব শপিং ভাল পারি না।
নিলয় ওগূলোতে এক্সপার্ট..
বলেই আমাকে অপ্সরীরর সাথে শপিং এ পাঠালো...
..
...
মেসের বাইরে এসেই একটা রিক্সা নিলাম... আর অপ্সরী আমার একটা হাত জরিয়ে ধরে কাধে মাথা রাখলো...
কি ভাবছেন?
এটা কি হল...
আরে এটাই হবার ছিল...
আমার প্রেজেন্টেশন করার দরকার নাই...তবুও সেটা সামির কে দিয়ে করাচ্ছি কারন আমরা আজকে ঘুরতে যাবো..
আর হ্যা আপনারা যা ভাবছেন ঠিক তাই... অপ্সরী আর আমি প্রেমিক প্রেমিকা..। আর অপ্সরী রান্মা করে সামিরের জ্ন্য না আমার জন্যই নিয়ে আসে...
..
...
:এভাবে আর কয়দিন লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করবো নিলয়?
:ভাইয়া কিন্তু টের পেয়ে যাবে...
:হা হা হা তোমার ভাইয়া টের পেয়ে যাবে নয়....টের পেয়ে গেছে... সবাই বলে না... ২টা জিনিষ লুকানো যায়না...
প্রথম.....মদ খেয়ে মাতাল হলে
দ্বিতীয়... প্রেমে পড়লে...
আর তুমি খাওয়ার সময় আমার দিকে যেভাবে দেখছিলে তাতে তোমার ভাইয়া সব বুঝে গেছে...
:ভাইয়া বুঝুক সমস্যা নাই... ভাইয়া আমাকে অনেক ভালবাসে...
..
..
চল আজকে আমাকে তুমি আহসান মঞ্জিল ঘুরিয়ে দেখাবে...। আচ্ছা চল আমার জান পাখি টা...
বলেই নিলয় অপ্সরী কে আহসান মঞ্জিল দেখাতে নিয়ে যায় আর সন্ধ্যারর আগেই ফিরে আসে।
এসে দেখে সামির রেডি হয়ে আছে।
সামির নিলয় কে বললো
তুই মেস এ থাকিস আমি অপ্সরী কে বাসায় রেখে একটা ছোট কাজ আছে করেই ৯টার মধ্যে ফিরবো...। বলে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় আর এই সুযোগে অপ্সরী আমাকে একটা টাইট হাগ দেয়... আর সামিরের গলার আওয়াজ শুনে লজ্জায় মুখ লুকায়.....
..
...
সামির কিছু না বলে স্বাভাবিক ভাবেই অপ্সরীকে বলে...
আমি নিচে আছ...তুই তাড়াতাড়ি আয়.....
আমি অপ্সরীরর কপালে একটা চুমু দিয়ে বিদায় দিলাম...
(২)
..
...
গল্পটা শুরু একটি বিয়ে বাড়ীতে।আমার বন্ধুর চাচাতো বোনের বিয়ে। যেহেতু বন্ধুর বোনের বিয়ে তাই বিয়ের ৩দিন আগেই আমরা যাই।তারপর বিয়ের বিভিন্ন কাজ বাড়িঘর সাজানো, ডেকোরেশন সব করছিলাম আমরাই।তো আমি গেট সাজাচ্ছিলাম ফুল দিয়ে আর ঝাড়বাতি লাগাচ্ছিলাম মই এ উঠে বিয়ের আগের দিন।হঠাত হাত ফসকে পেরেক মারার হাতুরি টা পড়ে যায়।হাতুরি টা তুলার জন্য মাথা নিচু করতেই চোখ আটকে যায় এক পরীর উপর।দুধে আলতা গায়ের রঙ তাতে ধবধবে সাদা থ্রি পিছ এ স্বর্গের অপ্সরীর মত লাগছিলো।
..
...
সেই অপ্সরী হাতুরিটা তুলে আমার দিকে ধরে কতক্ষন ছিল জানিনা টের পেলাম তখন যখন সেই হাতুরিটার বারি পড়লো আমার হাতের উপর। সেই থেকে শুরু হল বিয়ে বাড়ী বাদ দিয়ে সেই অপ্সরী কে খুজে চলা।
পেয়েও গেলাম কিছুক্ষন এর মধ্যে কিন্তু সমস্যা ছিল একটা।
আমি যে বন্ধুর সাথে তার চাচাতো বোনের বিয়েতে গিয়েছি অপ্সরী টি আমার সেই বন্ধুর আপন ছোট বোন।ইন্টার ১ম বর্ষের ছাত্রী।
আর এদিকে আমার MBA প্রায় শেষ।অবশ্য MBA এর পাশাপাশি আমি চাকরিও করছি আর আমার বন্ধু শুধু MBA করছে।
..
...
তবুও কিভাবে কি হয়ে গেল।আমি এমনিতেই অনেক মিশুক স্বভাবের।আর পুরো বিয়ে বাড়িটা আমি একাই মাতিয়ে রেখেছিলাম।আর রাতের দিকে ফ্রি সময়ে ছাদে সবাইকে নিয়ে গিটার বাজিয়ে গান করেছি প্রতিদিন।কিন্তু ২দিন দেখি নি অপ্সরীকে।তার মানে অপ্সরী সেদিনেই এসেছিল বাসায়।
এদিকে আমার বন্ধু সামির আমার গুনগান সব সময় সবার কাছে করতেই থাকে। তাই হয়তো আমার জন্য একটু সুবিধাই হয়ে যায়। বিয়ের রাতে আমি অপ্সরীকে আমার মনের কথা বলে দেই আর অপ্সরী ও রাজি হয়ে যায়।
বিয়ের পরের ৫দিন পর্যন্ত আমি & আমার বন্ধু তাদের বাড়িতেই থেকে যাই আর আমার বন্ধু কে ফাকি দিয়ে চুটিয়ে প্রেম করতে থাকি আমার অপ্সরীর সাথে।
..
...
আমি & আমার অপ্সরী মনে করেছিলাম যে আমরা সবাইকে ফাকি দিয়ে প্রেম করছি কিন্তু সামিরের আম্মু আমাদের বিষয় টা আঁচ করতে পেরে সামির কে বলে। সামির তখন তার আম্মুকে বলে আম্মু নিলয় অনেক ভাল ছেলে। তাদের বিষয়টা আমি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছি। নিলয় কে নিয়ে তোমাদের ভাবতে হবে না।
..
...
সেই থেকে আমার আর আমার অপ্সরীর প্রেম চলছে।আমার অপ্সরী তার ভাইয়ার সাথে দেখা করার নাম করে আমাদের মেস এ এসে আমার সাথে দেখা করে যায়।আর সামির যেহেতু জানে তাই আমার অপ্সরী আসলে সে বুঝে যায় যে ভাইয়ের সাথে যেমন তেমন আমার জন্যই সে আসছে।
..
...
(৩)
..
...
মাস তিনেক পর,
সামির নিলয় দের MBA ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হয়েছে।
সামির বাসায় এসেছে আজ সপ্তাহ খানেক হল, কিন্তু তার পিচ্চি পরীটা মানে তার একমাত্র ছোটবোনের তেমন দেখা পাচ্ছে না।সবসময় চঞ্চল বোনটা হঠাত চুপ চাপ হয়ে গেছে।সারাক্ষন চুপচাপ হয়ে ঘরের কোনে আনমনে বসে থাকছে।সামির ভাবলো নিলয়ের MBA শেষ হয়ে গেছে আর নিলয় ভালভাবে চাকরিতে মন দিয়েছে এজন্য ওকে হয়তো সময় দিতে পারছে না তাই তার মন খারাপ।
..
...
সামির তার ছোট বোনের রুমে গিয়ে তার সাথে কথা বলে,
বলে কি হয়েছে আমার ছোট্ট পরীটার। আমার পরীটার মন খারাপ কেন? নিলয় কি কিছু বলেছে?
:না ভাইয়া নিলয় কিছুই বলে না
:বলে না মানে?
:মানে নিলয় মাস খানেক থেকে আমার সাথে কোন যোগাযোগ করছে না।আমার সাথে কথা বলে না।
:কেন কি হয়েছে? ঝগড়া হয়েছে তোদের?
:না ভাইয়া। ভাইয়া তুমি এখন যাও আমার শরীর টা একটু খারাপ লাগছে।
: কি হয়েছে? জ্বর আসছে নাকি?
বলেই সামির তার বোনের কাছে যেতে চায় আর তখনি তার বোনের বমির হতে নেয়। আর সে মুখ টা চেপে ধরে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
.
সামির মহা চিন্তায় পড়ে যায়।
তখন কার মত সামির সেখান থেকে চলে আসে।
..
...
রাত ১০:৩০মিনিট...
সামির আবার তার বোনের রুমে যায়।তারপর বলে কি হয়েছে আমাকে একটু বল।
: কিছু না ভাইয়া... তোরা আমাকে মাফ করে দিস..
: আরে পাগলী বোন আমার কি হয়েছে সেটা বলবি তো আমাকে নাকি?
:আমি বলতে পারবো না ভাইয়া... নিলয় আমার নিলয় ভাইয়া...
:কি হয়েছে আমাকে একটু বল...
: ভাইয়া আমি প্রেগন্যান্ট.... আর এটা জানার পর থেকে নিলয় আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
.
সামিরের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।তার পিচ্চি লক্ষি বোন টার সাথে নিলয় এটা করতে পারে না। সামির তার বোন কে বললো আরে চিন্তা করিস না আপুনি... আমি নিলয়ের সাথে কথা বলবো।নিলয় অনেক ভাল ছেলে নিলয় সব মেনে নিবে।আর আমি তোদের বিয়ের ব্যবস্থা করবো ধুমধাম করে।
:ভাইয়া আমি নিলয় কে না পেলে মরে যাবো... আমি মরে যাবো নিলয় কে না পেলে...
:চিন্তা করিস না আপুনি... আমি তোর নিলয় কে তোর কাছে এনে দিবো...
বলেই তার রুম থেকে বেরিয়ে আসে।
আর পরের দিন সকালেই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
..
...
(৪)
..
...
সামির ঢাকায় এসেই নিলয়ের বাসায় চলে যায়।নিলয় তখন অফিসে।বিকেলে অফিস থেকে ফিরলে ফ্রেশ হয়ে সন্ধার পর সামির কে নিয়ে আড্ডা মারতে বের হয়।
আড্ডা মেরে রাতে বাসায় ফেরার আগে সামির নিলয় কে বলে
.
:নিলয় তোকে আমার কিছু কথা বলার আছে।
:বল কি বলবি।
:ব্যাপার টা একটু সেনসিটিভ নিলয়।
:আচ্ছা চল ওখানে বসেই বল..
নিলয় আর সামির সামনে একটা মাঠমতন ফাকা যায়গায় গিয়ে বসে পড়ে।
..
...
সামির বলা শুরু করে...
:নিলয় অপ্সরীর সাথে তোর কথা হচ্ছে না নাকি শুনলাম
:হ্যা, আমি এখন আমার ফিউচার নিয়ে ভাবছি, এসব রিলেশন আর কমিটমেন্ট নিয়ে ভাবার সময় পাচ্ছি না এখন।
:নিলয় তুই কি কিছু লুকাচ্ছিস.. তুই ভাল করেই জানিস অপ্সরী প্রেগন্যান্ট...
: আমি জানি অপ্সরী প্রেগন্যান্ট তো আমি কি করবো?
: তুই কি করবি মানে?
: বাচ্চা একটা মেয়ের সাথে এমন করে এখন বলছিস কি করবি? প্লিজ ভাই তুই আমার লক্ষি সোনা পুতুলের মত বোন টাকে বিয়ে করে নে কেউ জানাজানি হবার আগেই।
:তোর মাথা খারাপ হইছে নাকি সামির আমি তোর বোনকেও বলেছি বাচ্চা টা এবর্শন করিয়ে নিতে। আর তোকেও বললাম, বাচ্চা টা ফেল দিয়ে তোর বোন কে পড়ালেখা করা।
:ছি নিলয় তুই কি বলছিস এসব।
:আমি যা বলছি ঠিক বলছি, আমি এখন উঠলাম। কাল আমার অফিস আছে।সামনেই তোর মেস।তুই চলে যাস...
.
বলেই নিলয় সামির কে রেখে উঠে আসে।
সামির ভাবতে পারছে না নিলয় এমন কিছু করবে।নিলয়কে সে তার নিজের ভাইয়ের মত ভাবতো।সেই নিলয় তার কলিজার টুকরা ছোট বোন টার জীবন টা নষ্ট করে দিল।
সামির ভেবে পায় না কি করবে।নিলয় কে লোকজন দিয়ে পেটাবে?
কিন্তু তাতে কি সমাধান হবে?
হবে না?
আর নিলয়ের কিছু হলে তার ছোটবোন টা কষ্ট পাবে অনেক।সামির সব সহ্য করতে পারে কিন্তু তার অপ্সরীর চোখের পানি সহ্য করতে পারে না।আর নিলয়
আর তার বোন যে প্রেগন্যান্ট এটা এলাকায় জানা জানি হলে তার বাবা মায়ের সম্মান ধুলায় মিশে যাবে। আর নিলয় বিয়েতে রাজি নাহলে অপ্সরী যদি ভুলভাল কিছু করে ফেলে।সামির আর ভাবতে পারছে না।তার সামনে তার পিচ্চি অপ্সরীরর মরা মুখ? সামিরের মাথা ঝিম ধরে যায়।আর ভাবতে পারে না সামির। যে ভাবেই হোক নিলয়কে রাজি করাতেই হবে।
..
...
(৫)
সপ্তাহ খানেক পর...
সামির আবার নিলয়ের সাথে দেখা করে।
নিলয়ের হাতে পায়ে ধরে বলতে হলেও আজকে বলবে সামির।তবুও নিলয়কে রাজি করাবে বিয়ের জন্য।
:নিলয় প্লিজ ভাই আমার আমার কলিজার টুকরা আমার পিচ্চি বোন টাকে এত বড় শাস্তি তুই দিস না।
:কিসের শাস্তি রে। এখন কার দিনে প্রেম করলে এমন হয়। এটা খুবই কমন।বাচ্চা টা ফেলে দিলেই হল।
:আমার পিচ্চি একটা বোন আর তার বাচ্চা টা ফেলে দিবো?
কেন আমার বোনের এত বড় সর্বনাশ টা তুই করলি।
এত ছোট একটা বাচ্চার সাথে এমন কিভাবে করতে পারলি?
:কিসের ছোট রে তোর বোন।আর তোর বোনের পেটে যে আমার বাচ্চা সেটা তুই নিশ্চিত কিভাবে?
আরে যে মেয়ে আমার সাথে শুতে পারে সে যে অন্য কোন ছেলের সাথে শোয় নি তার কি গ্যারান্টি?
:সামিরের রাগ মাথায় উঠে যায়।
.
সামির হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে নিলয় কে বলে এটা তুই কি বললি? আমার বোন কি বেশ্যা? আমার পিচ্চি নিষ্পাপ বোনটার সর্বনাশ করতে তোর বিবেকে বাধলো না?
..
...
তোর বোন নিষ্পাপ?
তাহলে আমার বোন টা কি ছিল রে?
:তোর বোন মানে?
:নিহা কে চিনিস?
:কোন নিহা?
: হা হা হা... সেই নিহা যাকে তুই প্রেমের নাম করে অন্তসত্তা করে চলে গেছিলি।
যেই নিহা তিন মাসের সন্তান পেটে নিয়ে তোর কাছে গিয়েছিল আর তুই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলি।
সেই নিহা.. কোথায় সেই নিহা জানিস তুই?
জানিস সেই নিহা বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে?
সেই নিহা আমাকে ভাইয়া ডাকতো। মেয়েটার বড় ভাই ছিল না।মা মারা গিয়েছিল সেই ছেলেবেলায় সেই মেয়েটার ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে মেয়েটাকে মৃত্যু মুখে ফেলে দিতে তোর একবারো মনে হয়নি?
নিহাও কারো ছোট বোন। নিহাও কারো কলিজার টুকরা.
..
...
সামিরের এবার সব মনে পড়ে...
সামির একটু প্লে বয় টাইপের ছিল।কয়েক টা প্রেম এক সাথে করতো। নিহার সাথেও সে প্রেম করেছিল। এবং এক পর্যায়ে নিহা প্রেগন্যান্ট হয়ে যায় এবং সামির কে বিয়ের জন্য চাপ দেয়।তখন সামির ঠিক এই কথা গুলোই নিহাকে বলেছিল।
আর নিহা সেদিন কাঁদতে কাঁদতে চলে গিয়েছিল আর বলেছিল সে আর এই জীবন রাখবে না।
সামির তখন সেটাকে সিরিয়াসলি নেয় নি।
আর তার পর MBA ফাইনাল পরিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় নিহার কথা আর মনে হয়ে উঠেনি।
.
তাহলে কি নিহা সুইসাইড করেছিল?
নিলয় নিহার মুখ বলা ভাই?
আর নিহার মৃত্যুর শোধ নিতেই নিলয় তার পিচ্চি নিষ্পাপ বোন টার সাথে এমন করেছে?
সামির সেদিনের মত চলে আসে।
..
...
(৬)
..
...
২দিন পর নিলয়ের কাছে আবার আসে সামির।
নিলয় ভাই আমার আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।নিহার সাথে আমি যা করেছি।তা ভুল করেছি।পাপ করেছি। কিন্ত্য এখন তো আর কিছুই করার নেই।তাহলে কেন তুই আমার শাস্তি আমার নিষ্পাপ বোন টাকে দিবি?
:সামির তোর যেমন কিছু করার নেই আমারো তেমন কিছুই করার নেই।
:প্লিজ নিলয় তুই যা বলবি আমি করবো। তবু আমার বোনে জীবন টা নষ্ট করিস না আমার বাবা মায়ের সম্মান টা ভিক্ষা দে।
..
...
:কি করতে পারবি তুই সামির।কি করতে পারিস তুই তোর বোনের সুখের জন্য?
:সব করতে পারি আমি আমার বোনের জন্য সব...তুই শুধু বলে দেক কি করতে হবে।
:পারবি তো? ভেবে দেখ...
:হ্যা পারবো, আমার বোনের সুখের জন্য তুই আমার জীবন টা চাইলেও আমি দিতে রাজি আছি।
:তোর জীবন টাই লাগবে আমার সামির.. আমার বোনের জীবনের বদলে....দিতে পারবি?
: তুই আমার বোনকে সম্মানের সাথে বিয়ে করবি?
:হ্যা করবো... তুই রাজি?
:হ্যা রাজি কিন্তু আমার বোনের সাথে তোর বিয়ের পর....
..
...
হা হা হা...
:সামির... তো জীবন টা লাগবে আমার আমার বোন টার জন্য... তুই কালকে তোর আব্বু আম্মুকে সাথে নিয়ে তাদের কে তোর পাপের কথা খুলে বলে আমার বোন নিহা কে বিয়ে করার জন্য রাজি করিয়ে নিয়ে আসবি.....
:মানে?? নিহা সুইসাইড করে নি?
:না নিহা কে সেদিন আমি বাঁচিয়েছিলাম। সে সেদিন কলেজের ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে মরতে যায় আর সৌভাগ্য বসত আমি ছাদে ছিলাম সেটা সে দেখে নি।
তাই আমি তাকে বাঁচিয়ে আমার আব্বু আম্মুর কাছে রাখি।
আর তাকে প্রতিজ্ঞা করি তোর সাথেই তার বিয়ে দিবো।
সে এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
:আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি নিলয়।আমি নিহা কে সসম্মানে আমার বউ করে নিতে রাজি। আর কালকেই হবে বিয়ে।
:হ্যা কালকেই তুই সসম্মানে নিহা কে বিয়ে করে নিয়ে যাবি কিন্তু তোর বোন যে প্রেগন্যান্ট সেটা যেন তো বাবা মা বা অন্য কেউ জানতে না পারে... তোর আর নিহার বিয়ের এক মাস পর আমি আমার ফেমিলিকে তোর বাসায় পাঠিয়ে অপ্সরীকে বিয়ে করে নিবো।কিন্তু তার আগে কেউ যেন ঘুনাক্ষরেও না জানে তোর বোন প্রেগন্যান্ট...
.
তাই হবে নিলয়.....
বলেই সামির তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে....
..
...
পরের দিন সামির তার পরিবার কে সব খুলে বলে নিহা কে বউ বানাতে রাজি করে।আর সেদিন রাতেই সামির আর তার পরিবারের সবাই এসে নিহা কে সসম্মানে বউ করে নিয়ে যায়....
..
...
(৭)
..
...
২০দিন পর.......
সামির এবার তার বোন কে নিয়ে ঢাকায় আসে নিলয়ের সাথে দেখা করতে...
কারন ১০দিন পর নিলয়ের তার বোন কে বিয়ে করার কথা....
:নিলয় ভাই.. ২০দিন তো হয়ে গেল..তুই এবার তোর পরিবারকে আমার বাসায় প্রস্তাব নিয়ে পাঠা।
:নিলয় হেসে ঊঠে সাথে অপ্সরী ও....
.
সামির অবাক হয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে...
নিলয় কি তাহলে তাকে ধোকা দিবে??
তার বোনের জীবন টা নষ্ট করে দিবে নিলয়?
.
নিলয় বলে উঠে
:সামির অপ্সরীর লেখাপড়া এখনো শেষ হয়নি... ওকে লেখাপড়ায় মন দিতে দে।
:মানে কি নিলয়...??? কথা কি ছিল? আর এখন কি বলছিস তুই এসব?
: মানে আমি ঠিক ই বলছি....
.
অপ্সরী প্রেগন্যান্ট নয়। আর আমরা প্রেম ও করি নি।সব সাজানো ছিল।মানে অপ্সরী আর আমার সাজানো। হ্যা আমি তোর সাথে নিহার বিয়ে দেবার জন্য তোর পরিবারকে রাজি করানোর জন্যই তোর চাচাতো বোনের বিয়েতে তোদের বাড়িতে যাই।আর তখন তোর বোনের সাথে দেখা হয়।আমি তোর আব্বু আম্মু কে না বলে অপ্সরী কে সব খুলে বলি।
আর অপ্সরী তখন আমাকে বলে আব্বু আম্মু রাজি হলেও ভাইয়া তো মন থেকে নিহা ভাবিকে মেনে নিবে না।
তাই এমন কিছু করতে হবে যাতে ভাইয়া নিজে নিহা ভাবিকে মেনে নেয়।
তোর চাচাতো বোনের বিয়ের পরের দিন আমি অপ্সরীকে ঘুরানোর নাম করে ঢাকায় এনে নিহার সাথে দেখা করাই..
অপ্সরী কে নিহা সব খুলে বলে।তারপর অপ্সরী নিহা কে সান্তনা দিয়ে বলে সব ঠিক করবে সে।
আর বাকি সব প্লান কি কি করতে হবে সব অপ্সরীই আমাকে বলে দেয়।
আর বাকিটা তো তুই জানিস....
..
...
আর হ্যা...
আমি আগে থেকেই বিবাহিত...
আমার বউ মানে তোর ভাবি নিরুপমা... তার আব্বু আম্মুর কাছে থেকে অনার্স শেষ করছে... অপ্সরী নিরুপমার সাথেও দেখা করেছে....
..
...
সামির এবার লজ্জায় কিছুই বলতে পারে না... নিলয় বলে...
ভুল মানুষেরই হয় সামির... খুব কম মানুষ সেই ভুল টাকে শুধরানোর সুযোগ পায়.... আর তোর ছোট বোনতো আমার ও ছোট বোন নাকি???
এমন নিষ্পাপ ফুলের মত একটা বোনের সাথে এমন করতে পারি আমি??
শুধু বদলা নেবার জন্য???
পারি না....
নিলয় তাই বলে তুই এমন করবি? শুধু বদলা নেবার জন্য?
হা হা হা হা
সামির....
.
#বদলা_নেবার_জন্যই_হয়.......
ভাল থাকিস আর আমার লক্ষি বোন টাকে ভাল রাখিস....
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩৩