এখনো পর্যন্ত আমরা তোফাজ্জলের বিচারের কোনো কুলকিনারা করতে পারলাম না বিচার চাওয়ার সময়তাও পেলাম না এর আগেই আমাদের ব্যাস্ত হয়ে পড়তে হলো পাহাড়ের সমস্যা সমাধানের জন্য। পাহাড় থেকে নামতে পারলাম না তারই মাঝে আবার ভারত ইলিশ রপ্তানি নিয়ে নানান ধরনের যুক্তি তর্ক বিতর্ক। আবার আজ শুনলাম তোফাজ্জল হত্যা জড়িত যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সবাই ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী বা ছাত্রলীগের সদস্য। তবে এখন দেশ যে ভাবে চলছে এটাকে আমি দেশ চলা বলতে পারি না।
যেটুকো চলছে বলা চলে চারোদিকে লাশের মিছিল।
সেই জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে অঘুমের মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে আমার। নানান চিন্তাভাবনা একটি রাত ঠিকমত ঘুমাতে পারছি না।
বিশেষ করে জুলাই এর গণ হত্যার বেশ কয়েকটি দৃশ্য একদম কাছে থেকে দেখছি। বিশেষ করে যে মারা গেছে সে যেন বেঁচে গিয়েছিল
কিন্তু বিপদের মধ্যে রেখে যেত মৃত ব্যক্তির সজনদের।
শাহাজাদপুর আমার পাশের বাসার একটা ছেলে বয়স আনুমানিক ১৭কি ১৮ বছর । ছেলেটি বসুন্ধরা একটা ডেলিভারির কাজ করতো,
১৯শে জুলাই শুক্রবার সকাল সাতটায় তার মালিক ফোন দিয়ে বললো ( ছদ্য নাম ) বাবলু আধা ঘন্টার ভিতরে অফিসে আসো কিছু অর্ডার
আছে ওগুলো ডেলিভারি দিয়ে যাও তারপর কাল থেকে এক সপ্তাহ অফিস বন্ধ থাকবে তখন কয়েক দিন তোমরাও ছুটি কাটাবে ।
বাবলু বললো বস কিভাবে আসবো আমাদের এখানে অনেক সমস্যা হচ্ছে আমরা বাসার বাহিরে বের হতে পারছি না চারদিকের শুধু গুলি
আর গুলি চলছে । আমার পক্ষে এই মুহূর্তে আসা সম্ভব না বস ।
অনেক অনুয় বিনয় করে এক প্রকার জোড় করে নিয়ে যায় বাবলুর বস বাবলুকে ।
ছেলেটা ডেলিভারি দিয়ে শেষ করে সকাল আনুমানিক সারে নয়টা কি দশটায় বাসায়
ফেরার পথে নতুনবাজার থানা পার হয়ে অ্যামেরিকান অ্যাম্বাসির সামনে আসার সাথে সাথে প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয় একটা গুলি এসে
বাবলুর মাথার একপাশ উড়িয়ে দেয় । বাবলু জায়গায় ডেড হয়ে যায়। বাবলু কে কয়েকজন ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়,
পরে হাসপাতালে বাবলুর লাশ আনতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার লাশ দিতে চায় না এবং বলে দেয় লাশ নিতে হলে ওসির কাছ থেকে
অনুমতি পত্র আনতে হবে তারপর লাশ দেয়া হবে । পরে প্রায় চার দিন অনেক দৌড়াদৌড়ি করে এবং সাথে অনেক টাকা আনুমানিক ত্রিশ চল্লিশ হাজার টাকা খরচ করে শেষ পর্যন্ত লাশ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা হয় ।
সব শেষ বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে একটাই অনুরোধ সব কিছু লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে । যা হওয়ার হয়ে গেছে আর বেশি হতে দেয়া যাবে না ।আর যদি চলে তাহলে সব পুরে ছাই হয়ে যাবে। তাই দয়া করে এবার লাগাম টেনে ধরতে হবে। এবং লাগাম টেনে ধরুন।