আজকের শিশুরাই কিনতু আমাদের দেশের আগামী দিনের ভবিষৎ । আজকে শিশু যারা তারাই আগামীতে বড় হবে এবং সমাজের দায়িত্ব গ্রহন করিবে । সে জন্য আজকে শিশু যারা তাদের কে নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে এবং তাদের কে জাতির বড় ধরনের স্বার্থে যোগ্য নাগরিক হিসেবে বেড়ে ওঠার সুযোগ ও সুবিধা দিতে হবে । পৃথিবীর অন্যনান্য উন্নত মানের দেশ গুলোতে শিশুদের কল্যান ও বিকাশের জন্য নানান ধরনের পরিচর্যার ক্রেন্দ্রের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আমাদের দেশে অশিক্ষা ও দারিদ্র্যর কারনে বেশির ভাগ শিশুদের উপযুক্ত কোন পরিচর্যা করা হয় না । আমাদের দেশের বেশির ভাগ পরিবারে দেখা যায় দরিদ্র ও অসহায়ৎ কারনে শিশুদের যে বয়ছে বই ,খাতা হাতে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেখানে তারা স্কুলের পরিবর্তে সাংসারিক অভাব মেটানোর জন্য তাদের কর্ম জীবনে ব্যস্থ হয়ে যেতে হচ্ছে । এবং নিয়োজিত হতে হচ্ছে কোন না কোন ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে ।
শিশুশ্রম তাই আমাদের দেশে এখন খুব সাধারন ব্যপার হয়ে দাড়িয়েছে । আমরা কেউই আমাদের দেশের এই শিশু গুলোর আগামী সর্বনাশা ভবিষৎতের কথা ভাবি না ।
আমাদের দেশে অর্থে অভাব যে পরিবার সে পরিবারের শিশুদের খুব ছোট থেকেই অর্থের তাগিদে কর্ম জীবনে মনযোগ দিতে হয় । অভাবি পরিবারে এমনি হয় পরিবারে অধিক ছেলে মেয়ে হওয়ার কারনে অসচ্চল বাবা,মা, তাদের ছেলে, মেয়েদের ঠিকমতো খাবার দাবার দিতে পারেন না ও অভাবি পরিবার তাদের ছেলে,মেয়েদের শিক্ষার কোন ব্যবস্তা করে দিতে পারেন না । বাবা,মা র আর্থিক অভাবের কারনে শিশুরা অল্প বয়সেই শ্রমদিতে বাধ্য হয় । যে কোন কাজে অল্প বেতনে শিশুরা নিয়োজিত হয়ে যান । শিশুদের কাজের ক্ষেত্র গুলো বেশির ভাগ এমনই হয় যেমন,বাসাবাড়ির কাজ,,হোটেলে ধোয়ামোছার কাজ,,গ্যারেজে ওয়ার্কসপে গাড়ি মেরামতের কাজ,,এবং গ্যাস ওয়েল্ডিংয়ের মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ ও নালা নর্দমায় টোকাইর কাজ,ইট ভাংঙ্গা,পাথর ভাংঙ্গা সহ আর নানান ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আমাদের দেশের শিশুদের দিয়ে করানো হয় । আমাদের সমাজে এক ধরনের অসৎ লোক আছে যারা শিশুদের দিয়ে নানান অসৎ কাজ করান ও অসৎ কাজে লিপ্ত করেন । আবার হয়ত বা সমাজের কিছু অসাধু চক্র আছেন যারা অর্থের লোভ প্রনয় দেখিয়ে শিশুদেরকে দুরে কাজে দেওয়ার কথা বলে বিদেশে পাচার করে দেয় । বিদেশে সেই শিশুদের দিয়ে উটের জকিন সহ নানা ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হয় ।
শুধু মাত্র ক্ষুধা ,,অভাব অনতন,,দারিদ্র,,অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের জন্যই আমাদের দেশের শিশুরা শ্রমসাধ্য কাজে নিয়োজিত হচ্ছে ।আন্তরজাতিক শিশু বিষয় আইনঃ এখন পৃথিবীর সব দেশে শিশু-অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে আন্তরজাতিক পর্যায় বিবেচিত হয়েছে । জাতিসংঘ এ বিষয় শিশু-অধিকার সংক্রান্ত নীতিমমালা পনয়ন বা ঘোষনা করেছেন । জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেও এই সনদ পত্রে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ । সে জন্য আমাদের দেশে শিশুদের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্র সরকারের বিশেষ গুরুত্ব বা বিশেষ ভূমিকা পালন করা অতি জরুরী বা প্রয়োজন । শিশু অধিকারের আইনের আওতায় আঠারো বছরের নিচ পযন্ত বয়সী সকলকে শিশু হিসেবে গন্য করা হয়েছে । শিশু অধিকার আইনে স্পষ্ট লেখা বা উল্লেখ আছে যে কোন ঝুঁকি পূর্ণ কাজ ,,অর্থনৈতিকভাবে শোষন করছে এবং শিশুদের ভবিষৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঝুঁকে পড়ছে । আমাদের দেশের শিশুদের সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে যেসব বিপদ সেসব বিপদ থেকে আমাদের দেশের শিশুদের রক্ষা করতে হবে আর এ রক্ষার আমাদের দেশের রাষ্ট্রিয় সরকার ও সরকারের পাশ্বে পাশ্বে আমাদের সকলকে এগীয়ে আসতে হবে ।দেশের সকল শিশুদের সকল প্রকার হয়রানি ও নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে হবে।
সকল শিশুকে শিক্ষা লাভের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে ।
শিশুদের মৌলিক অধিকার গুলো শুধু সনদ পত্র পযন্তই সীমাবদ্ধ । আমাদের দেশের শিশুগুলো ভবিষৎ গড়ে উঠছে অমানবিকতায় ।বর্তমান সময়ে অনেকদেশেরই হাজার হাজার শিশুদের প্রতিতা দিন প্রতিতা মুহুত্ত কার্টছে বা পাড় হচ্ছে অনিশ্চয়তার ভিতরে।
যেমন ধরে নেওয়া যাক এখন বাংলাদেশের জনসংখার ৪৮%দ্রারিদ্রসীমার নিচে বাস করছে । পরিবারের আর্থিক চাপের কারনে শিশুরা শ্রমে নিয়োজিত হচ্ছে ।হতে পারে দ্ররিদ্র পরিবারে অধিক শিশু জম্মের হারের কারনে শিশুশ্রমের অন্যতম কারন ।
বাংলাদেশের সরকার শিশুশ্রম প্রতিরোধের জন্য সীমিত আকারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছিলেন ।
যেমনঃ---- (ক) শিশুদের শিক্ষার বিনিময় খাদ্য কর্মসূচি ।
(খ)মেয়েদের জন্য কমপক্ষে এস এসসি পযন্ত অবৈতনি শিক্ষা পবর্তন ।
(গ) বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা এবং বিনা মূল্যে শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা ।
(ঘ) উপবৃত্তি কার্যক্রম প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করা ।
(ঙ) পোষাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রমিকদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা বা চালু করা ।
সরকারের এসব নীতিমালার পাশে আর কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা যেতে পারে
যেমনঃ------(ক) আমাদের দেশে ভিবিন্ন যে (এন জি ও N G O ) প্রতাষ্ঠান গুলো আছেন তারা অপ্রতিষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষা-কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে আসতে পারেন । এ ব্যবস্থায় পথ শিশু ও অবহেলিত শিশুদের সম্পৃক্ত করতে পারেন ।
(খ) কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটাতেও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে বিশেষ মর্যাদা দিতে হবে ।
(গ) আমাদের সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে শিশুদের যে কোন ঝুঁকিপূণ্য কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে । আর এ বিষয়ে সরকারের শিশু মন্ত্রণালয়ে মনিটারিং ব্যবস্থা গ্রহন করিতে হবে ।
(ঘ) আমাদের সকলকে শিশুশ্রমের ক্ষতিকর বিষয় গুলোর ব্যপারে গন সচেতন বাড়াতে হবে ।
(ঙ) শিশু পাচারের ব্যপারে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে । শিশু পাচারকারীদের কঠর শাস্তি প্রাধান করিতে হবে।
(চ) দ্রারিদ্র বিমোচন কর্মসূচিতে দরিদ্র শিশুদের সম্পৃক্ত করতে হবে । এদের সাহায্যের জন্য অন্য কোন কর্মসূচির ব্যবস্থা নিতে হবে ।
(ছ) দরিদ্র শিশুদের মৌলিক অধিকার অন্ন,বস্ত্র,শিক্ষা,চিকিৎসা,আশ্রয় নিশ্চিত করতে হবে । সরকারকে ও তার পাশে দেশের সকল জন সাধারনকে শিশু অধিকার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে ।
(জ) শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হবে । বিশেষ করে অনেক সময় দেখা যায় শিশুদের কোন আচরনের কারনে শিশুটির পিতা,মাতা,শিশুটির উপরে শাসন নামে যে নির্যাতন চালাচ্ছেন এতাও বন্ধ করতে হবে । এই বিষয় গুলোর ব্যপারে আমাদের সাধারন মানুষের
সচেতন ও সতর্ক অবলম্বন করতে হবে ।
বাংলাদেশে শ্রমবাজারে শিশুশ্রম একটি বিরাট অংশ জুড়ে আছে । তাই হঠাৎ করে শিশুশ্রম বন্ধ বা নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয় সুতারাং এর জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে ।
শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার আগে দেখতে হবে শিশুরা কেন শ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে এর কারন গুলো চিহ্নিত করতে হবে । আর সেই কারন গুলো চিহ্নিত করে বাস্তবমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুশ্রম হ্রাস করতে হবে । বাংলাদেশ জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ সই হিসেবে বাংলাদেশের সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহন করিতে হবে ,তেমনি জনগনকে শিশুশ্রমের ভবিষৎ পরিণতি ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত করতে হবে তবেই বাংলাদেশে শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করি ।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই শিশুশ্রম মুক্তির দাবীতে আমার এ লেখা……………………..