উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এবারের পাবলিক পরীক্ষায় অবাঞ্ছিত প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানাধরণের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে, কড়া নিয়মকানুন জারী করা হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়েছে কি??? এতকিছুর পরেও ঠিকই প্রশ্নফাঁস হয়েছে,কিছু ছাত্র-ছাত্রী ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পেয়েছে। আবার প্রশ্নফাঁসকারী একটা দুটো চক্র নানাবিধ বিস্ময়কর সরঞ্জামসহ ধরাও পড়েছে। তারপরেও প্রশ্ন ফাঁস হবে, কিছু শিক্ষার্থী- শিক্ষক-অভিভাবকরা যেকোনো মূল্যে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের পেছনে দৌড়াবেন।আসলে এভাবে হয় না, হাজারটা পন্থা অবলম্বন করেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাবে না।কারণটা কি?? প্রশ্ন ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঠিকমতো পড়াশোনা না করেও পাশ করা যায়, ভালো রেজাল্ট করা যায়, কারণ প্রশ্ন ফাঁস হবেই,কেউ না কেউ 'দায়িত্ব নিয়ে' প্রশ্ন ফাঁস করবেই!!! আর সেটা কিছু টাকা খরচ করে কিনে ফেললেই কেল্লা ফতে!!! আর কিছু অসাধু শিক্ষক-অভিভাবক-টাউট-বাটপারের কাছে তো পড়াশোনা মানেই লাভক্ষতির ব্যবসা!!! তাই প্রশ্ন ফাঁস হলেই তো লাভ,ক্ষতিটা কি হবে!!! এখন আর শত চেষ্টা করলেও প্রশ্নফাঁস ঠেকানো যাবে না!!! এসব স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মাথায় এটা কাজ করে না, প্রশ্ন ফাঁসের কারণে জাতির কত বড় সর্বনাশ হচ্ছে!!! শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় বিমুখ হচ্ছে, মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে পাশ করার চেষ্টা করা শিক্ষার্থীদের ভিড়ে হেরে যাচ্ছে, পড়াশোনার প্রতি, মেধাচর্চার প্রতি বিমুখ হচ্ছে।আর শিক্ষার্থীদের তো অনেক আগেই ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে পড়াশোনা মানেই প্রচুর মানসম্মত বই পড়ে মেধাচর্চার মাধ্যমে নৈতিকতা ও মূল্যবোধসম্পন্ন প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে প্রকৃত মানুষ হওয়া-স্বশিক্ষিত হওয়া,শেখানো হয়েছে পড়াশোনা মানে মেধাচর্চা নয়,অর্থহীন প্রতিযোগীতার মাধ্যমে কতগুলো পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যেকোনো মূল্যে সামান্য কয়েকটা সার্টিফিকেট অর্জন। তাই আমরা সবখানে 'শিক্ষিত মানুষ' দেখতে পাই, কিন্তু 'প্রকৃত মানুষ' খুব কমই দেখা যায়।এটা যে আমাদের জাতির জন্য কতবড় ক্ষতি, কতবড় ব্যর্থতা এটা জাতির কর্ণধারদের মাথাতেই নেই,আমরা সাধারণ মানুষ কি করে বুঝবো!!!একে তো প্রশ্ন ফাঁস করে যেকোনো মূল্যে পাশ করা শিখিয়ে দেশটাকে এমনিতেই দশবছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে তারপর আবার সবখানে 'কোটাপ্রথা' দিয়ে মেধাবীদের আটকানো হচ্ছে-এই জঘন্যতম কোটাপ্রথা বাতিলের দাবিতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে,এতে গোলাগুলি করে, মারপিট করে, অন্যায়ভাবে নির্যাতন চালিয়ে যেকোনো মূল্যে তাদেরকে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে!!! অবশ্য এ আর নতুন কি!!! যে দেশের অর্বাচীন শিক্ষামন্ত্রীকে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গেম খেলতে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী যা খুশি তাই করলেও সব চুপচাপ মেনে নেওয়া হচ্ছে, বালখিল্যটাইপ কথাবার্তা বললেও কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয় না সেদেশে এসব তো হবেই!!! যখন ভোট ডাকাতি করে,লোকবল-অস্ত্রবল-আইনবল দেখিয়ে মানুষের মুখবন্ধ করে হাত-পা বেঁধে অন্যায়ভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করা যায়, তখন দেশের ভবিষ্যৎ, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গোল্লায় গেল না কই গেল তা কি ক্ষমতাসীনদের দেখার সময় আছে?!!! দেখেই বা কি হবে!!! কিন্তু এভাবে আর কতদিন???
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫৫