প্রিয় মুন্নি দি
আফনেকে না লিখে আর পারলুম না। অনেক দিন থেকে আপনার নাম শুনছি। আগে শুনতাম টিভিতে-পত্রিকাতে। এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ফেবুতে আফনার গুন-কীর্তন দেখলে চোখে জল এসে যায়। একুশে টিভি যখন বিটিভির মতো সারা স্যাটেলাইট ছাড়ায় চলছিল তখন আফনার রিপোর্টিং দেখতাম। সেই সময় আফনার অগ্নিঝড়া প্রশ্নে অনেক মন্ত্রীকে লেজ গুটিয়ে চলে যেতে দেখেছি। এরপর এটিএন বাংলায় দেখা গেল আফনাকে। মূলত টেলিভিশন সাংবাদিকতায় আফনাকে দেখে অনেক আফাই অনুপ্রেরণা পেত আর এই পেশায় যোগদানও করেছে ঢ়েড়। ২০০৫ সালের জুলাই মাসে আমি তখন স্কুল পাশ করে সবে কলেজে পড়ছি। তখন স্বভাবত আমার এলাকার এক দাদু বলেই ফেলল‘‘ দেখ দেখ মেয়েদের দেখে শিক্ষা নে--দেখছিস এই মেয়ে কিভাবে মন্ত্রীদের কাবু করছে। ভাবতাম হুম দাদু উনি অনেক বড় মাপের সাংবাদিক। তখনই আফনার রিপোটিং তুঙ্গে। ২০০৯ সালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সবে ক্লাস শুরু করেছি ঠিক একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে টিভির চ্যানেল পরিবর্তন করতে করতে দেখলাম পিলখানায় গুলির শব্দ। কিছুক্ষণ পর আফনার দেখা পেলাম। আফনের কি সাংঘাতিক সাহস আফনে যখন একটি গামছা দিয়ে মুখ ঢাকা বিডিআর সদস্যের সাক্ষাতকার নিয়ে পুরোপুরি বিডিআর ভাইদের প্রতি সহানূভুতিশীল হলেন। বিডিআর ভাইরা আফনার সহানূতিতে উস্কে উঠে সেই মারনযজ্ঞ চালাইলেন যা আমরা আফনার টিভিতেই দেখেছিলাম। আহা!! সাংঘাতিক আফনি। মুলত তখন থেকে আফনার আলোচনা ঘরে-বাহিরে ছড়িয়ে পরল। ‘র’, ব’ সহ কত এজেন্টের পক্ষে কাজের সঙ্গ প্রকাশ পেল। থাক দিদি সেই সব নাই বলি। আফনে কে বলতে বাধ্য হচ্ছি আফনি যখন এটিএন নিউজে হেড অব নিউজ তখন থেকে আফনার আর এক দফা অবনমন শুরু হলো। আফনার টকশো-টক হতে শুরু করলো আফনে টেরই পেলেন না। আফনার সেই তীক্ষ বুদ্ধিকে যে অর্ধচন্দ অনেকেই দিচ্ছে তাতে আফনার গা সয়ে গেল।
আচ্ছা দিদি আফনার কি মনে আছে ওই যে সেদিন আফনি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কি যেন বলেছিলন?? আফনার বছ--মাহফুজ্জাকে বাঁচানোর জন্য আফনে কি সব কান পড়া মাহফুজ সাহেবকে টিয়ে ছিলেন। আফনার টনিকে এটিএন বাংলার ৯ সাংবাদিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেন। আহা !! কি আফনাদের সহানুভুতি।
দিদি আমি কিন্তু বয়সে আফনের চারভাগের দুই ভাগ। সাংবাদিকতায় অষ্ট বছর চলছে। আফনেদের সামনে রেখে আমরা চলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আর মনে হয় হয়ে উঠছে না। আজ সাভার ট্রাজিডির লুলপ প্রশ্নে আমি হতবাক হয়নি ঠিক একটি কেঁপে গিয়েছিলাম। কেঁপে গিয়েছিল সাংবাদিকতার দেয়াল। ভাবছেন এই পিচ্চি পোলা এতো বকবক করছে কেন? কিন্তু কি আর করুম বলেন?? দিদি আফনার ঘেনিগর্ভ অভিজ্ঞতা নিয়ে আফনার একখান পুস্তক লেখা উচিত ‘ যেটা শিরোনাম হবে ‘‘স্বাক্ষাতকারে মুন্নি তরিকা’’। উজ্জ্বল সাফল্যে আমার অশ্রু বিসর্জন দিতে ইচ্ছে করে ঠিকই কিন্তু চোখের আকুয়াস হিউমার ব্যাটা কাপূর্ন করে। আফনেগো সাক্ষাতকারে মাগার আমরা ছুডু পোলাপান বেশ পাকা হতে শুরু করেছি। কাকে কোন জায়গায় প্রশ্ন করলে জনপ্রিয়তার শীর্ষ উঠা যায়!!! তা জেনেছি। তো দিদি মাইণ্ড কইরেন না.। অনেকে অনেক কথা কইছে সব কথার কান দেয়া ঠিক না । অনেকে দাবাং ওই যে গানটিও গাইবে ‘‘ মুন্নিকে বদনামহোয়ি ডারলিং তেরেলিয়ে----- আফনের মাঝে মাঝে হেমায়তপুর ভ্রমণে আসা উচিত। সেখানে কিছুকাল থেকে হেমায়তপুরের আফনার অনুসারীদের কাছ থেকে বাস্তব অভিজ্ঞা সঞ্চয় করে আফনার ১.৫ কেজির আকাউন্টে ষোল কলা পূর্ণ করা উচিত ...আমাগো কপালেও যখন এটিএন নিউজ অব হেড শব্দটি যোগ হবে আমরা তখন আফনার মতো সাংঘাতিক অবস্থানে এসে আফনাকে স্মরণ করবো। বলবো---মুন্নি প্রডাক্ট।