বাঙালী ও বাংলা
_______মুস্তফা সুজন
♦♦♦১ম খন্ড♦♦♦
বজ্রগুণনের মত একটি অসাধারণ গুণ নিয়ে বাঙালী জাতি সর্বদাই শ্রেষ্ঠত্বের আসনে।কিছু জমিদারি হাব ভাব ছাড়া তাদের মনোভাব অনিন্দ্য।বাঙালী নিয়ে আলোচনার ইতিবৃত্তেই আসে তাদের সৌহার্দপূর্ণ আচরণ। নির্মল জীবন যাপন তাদের সখতুল্য। আরাম আয়েশে কাটানো জীবন কখন পিছু ছাড়েনি তাদের।
এরা যেমন অতিথীপরায়ণ তেমনি বন্ধুত্ব সুলভ।
মূল্যবানের মূল্য চুকিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা।
পুন্ড্র,হরিকেল,সমতট আরো কত জনপদ ঘিরেই তো এদের সূচনা । আর্য অনার্য জনগোষ্ঠী নিয়ে যাদের প্রথম সংসার।কালাবর্তনে বিভিন্ন জনপদ আর সাম্প্রদায়িক স্থান এ বঙ্গে।শত শাসকের উদ্ভব হয়েছিল এ জমিনে। ব্রিটিশ, ইংরেজ,ফরাশি, পাকিদের শাসন চলছিলো যুগ যুগ ধরে। বাঙালির রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কম ছিলো বুঝি নতুবা স্নায়ু চাপে অতিষ্ঠ হওয়ার ফলস্বরুপ ইতিহাস রচনায় দেরি করেছে দীর্ঘ
কালের। নির্বাক জনতা নীলকরের কাহিনী ইস্ট ইন্ডিয়া ইংরেজদের দখলদারিত্ব নির্মম পলাশীর ইতিহাস,ভাষা রক্ষার করুন চিত্র, স্বাধিকার স্বাধীনতার জন্য চরম নির্মমতা অশ্রুসজলে সহ্য করেছে দীর্ঘ কাল।
বাঙলীর এক হওয়ার ভাবনা টা বিশেষ বিশেষিত বিশ্ব নন্দনতত্ত্বে। কোন ঠাসা বাঙালির একটা বিশ্বাস ছিলো একবার জেগে ওঠার সময় হবে। নির্মমতার জীবন যাপন করতে তারা অভ্যস্ত থাকায় বাংলা ভাষা রক্ষা এবং স্বাধীকার স্বাধীনতার দাম তুলেছে কড়ায় গন্ডায়। তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলো নিরব থাকা মানে প্রহরীর প্রথম অস্ত্র আমরাই। নিজের দুর্বলতায় নিজের নিধন।
প্রতিবাদের স্বভাবটা জাগ্রত হতে সময় লাগলেও প্রতিবাদগুলো বিশ্বে নন্দিত প্রতিবাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ।
নুন খেয়ে গুন গাওয়ার মত গুতো খেলে জুতো মারা স্বভাবটা যখন এসেছে তখন এদের জয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পলাশীর প্রতারনা, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতার যুদ্ধ এর চকচকে দৃষ্টান্ত।পরের কল্যাণে
জীবন দেওয়া যখন শিখেছে তখন জয়ই তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে ফেরারি আসামী খোঁজার মত।
একটা বিষয় নিগূঢ়ভাবে উপলব্ধি করেছে বাঙালী, অবহেলিত পরাধীন জীবন যাপনে জন্মের কোন স্বার্থকতা নেই।এ লক্ষ্যে একটাই ভাবনা তাদের জীবন যাক তবুও বাঁচলে বীরের বেশে বাঁচবো । সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাঙালী সহজাত প্রবৃত্তির বলে ঐক্যমত হয়ে সকল বাধার দেয়াল টপকেছে নির্দ্বিধায়। পরিসংখ্যান হিসেব করলে বাঙালীকে বুদ্ধিমত্তার তালিকায় শীর্ষে দেখলে চোখ দাঁড়ানোর কিছুই নেই। প্রতিক্ষেত্রে বাঙালীর বুদ্ধির জয় হয়েছে সর্বাগ্রে। সীমিত জনশক্তি স্বল্প সমরাস্ত্র সরঞ্জাম হলেও বুদ্ধির পাকে জয় এসেছে নানা বিপাকে।
সম্প্রতি সমসাময়িক বিষয় বাঙালী আলোচনার তুঙ্গে। যে বাঙালী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জয় করেছে পরাজয়ের পাহাড়। আজ সেই বাঙালী নিজেরাই ঐক্য ভুলে নিজের পিছনে নিজেরাই কাটি দিচ্ছে। সর্বস্তরে অসহ্য এক হাহাকার
ধ্বনি। বাংলার জমিন এখন ১২০ডিগ্রি জ্বরে পুড়েছে। কুইনিককে সারানোর অবস্থা
!.ওষুধ খাওয়ানোর লোক নেই সবাই সহিংস ভাইরাসে আক্রান্ত! অভ্যন্তরীণ ভাবমূর্তি নিজেরাই ক্ষুণ্ন করছে। নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মত। দখলদারিত্ব নিয়ে যত বিবাদ। মাকে যেমন ভাগ করা যায় না তার কাছে যেমন সকল ছেলে সমান, সবাই সমান অধিকার পাওয়ার যোগ্য তবে কেন দেশকে নিয়ে বিবাদের রোষানল?স্বদেশেকে তো মা বলে মেনেছো কত কাল আগেই। মা সন্তান কে যেমন আদর করে তেমনি এ দেশের দিকে তাকালে ও মায়ের মত মমতায় ঘেরা।
জাতি হিসেবে অসীম সম্মানের তাই বাঙালার মাটিকে।