somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

শাস্তির নতুন সংজ্ঞা: ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র দর্শনের অতিক্রমণ

১৭ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলায় অনেক প্রাচীন একটি প্রবাদ আছে, “পাপ বাপকেও ছাড়ে না।” বাংলার প্রাচীন ও জনপ্রিয় এই প্রবাদ এখনো অনেক প্রাসঙ্গিক। এই জনপ্রিয় প্রবাদ কে প্রথম বলেছিলো? বা, কোন ধর্মের ধর্মগ্রন্থে লেখা ছিলো তার সঠিক খোঁজ পাওয়া যায় না। বাংলার প্রাচীনকাল ধরা হয় বৈদিক যুগ (খৃষ্টপূর্ব ২,৫০০ অব্দ থেকে শুরু হয়েছিলো) থেকে শুরু করে মহাভারতের কাল ও কালীদাসের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো। মানে খৃষ্টপূর্ব ২,৫০০ অব্দ থেকে সর্বোচ্চ পঞ্চম/ষষ্ট শতাব্দী পর্যন্ত বাংলার প্রাচীকাল হিসেবে ধরা যেতে পারে।

বর্তমান বাজারে ‘Revenge of Nature (প্রকৃতির প্রতিশোধ)’, ‘Karma (সংস্কৃতিতে ‘कर्म’, যার অর্থ কাজ, কর্ম, ক্রিয়া) এই দর্শনগুলো অনেক বেশি আলোচিত হলেও “পাপ বাপকেও ছাড়ে না” প্রবাদটি অনেক বেশি পুরনো এবং প্রকৃতির প্রতিশোধ এবং কার্মার ক্ষেত্রে যা বলছে তা যেন আগেই কেউ একজন বলে গেছিলেন। এমনকি ১৯৭০ সালে আধুনিক এবং জনপ্রিয় আমেরিকান প্রবাদ “what goes around, comes around” – এর দর্শনও বাংলার প্রবাদ “পাপ বাপকেও ছাড়ে না” কে সাবস্ক্রাইব করে। সুতরাং এতগুলো দর্শন বাংলার একটি প্রবাদ “পাপ বাপকেও ছাড়ে না” কে সাবস্ক্রাইব শুধু করে না, আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হিসেবে আমাদের কাছে তুলে ধরে।

কিন্তু আমি দীর্ঘদিন চেষ্টা করেছি এই দর্শনের বিপরীতে লেখার জন্য। বহু অনলাইন আর্টিকেল খুঁজেছি কিন্তু যথেষ্ট শক্ত কোন প্রমাণ সহ লেখা পাওয়া যায় নি। বরং লেখক ও দার্শনিকরা এটাকে আরো বেশি ‘Ambiguous (দ্ব্যর্থক)’ করে তুলেছেন। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে আমি পুরো বিষয়টিকে খারিজ তো করতে পারবো না কিন্তু জ্যাক দেরিদার ‘Deconstruction’ দার্শনিক ও সাহিত্যিক বিশ্লেষণ পদ্ধতি দিয়ে ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র ‘ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট’ উপন্যাসের পানিশমেন্টের (শাস্তির) দীর্ঘদিনের যে প্রায় আদর্শিক শাস্তি হিসেবে সমাজে বা রাষ্ট্রে বিদ্যমান তাকে কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবো।

‘ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট (Crime & Punishment)’ উপন্যাসটি বেশ জটিল। আমি এখানে সরলীকরণ করছি, এবং ধরে নিচ্ছি রাসকলনিকভের অপরাধ হিসেবে এখানে হত্যা করা বুঝানো হয়েছে এবং শাস্তি হিসেবে মানসিক যন্ত্রণা এবং সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত করানোকে বুঝানো হয়েছে। মানসিক যন্ত্রণা, আর্থিক সমস্যা, সামাজিকভাবে নিচু অবস্থান, যে কোন ‘Hierarchy (যাজকতন্ত্র)’ পিরামিডের সবচেয়ে নিচে অবস্থান করা, একা হয়ে যাওয়া, পরিবার হীন থাকা, জেল খাটা, দীর্ঘদিন কয়েদখানা তে নির্যাতিত হতে থাকা এবং সর্বশেষ কোন না কোন ভাবে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করা। এই সমস্তই আদর্শিক শাস্তি হিসেবে আমরা ধরে থাকি।

কিন্তু আমি যদি বলি, অপার সম্ভাবনা, অঢেল টাকা, প্রচুর বিলাসিতা, অবাধ স্বাধীনতা এসবও এক ধরণের শাস্তি হতে পারে। এমনকি যে সেক্স (যৌনতা) করার জন্য একাধিক পার্টনার (সঙ্গী/সঙ্গিনী) পাচ্ছে সেও খুশী হতে পারবে না, এটাও এক ধরণেত শাস্তি হতে পারে। তাহলে একরকম তালগোল পেকে যেতে পারে, এসব আদর্শিক শাস্তি নয় বলে আমার বলা কথাগুলো অনর্থক মনে হতে পারে। কিন্তু একটু মনোযোগ দিলে আপনিও খুঁজে পাবেন আমি যা যা উল্লেখ করেছি তা আদর্শিক শাস্তি না হলেও অনেক বড় বড় শাস্তি হতে পারে! প্রশ্ন হলো, কীভাবে?

প্রচুর সম্ভাবনা

আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিভাবান। ধরা যাক, রাসকলনিকভ অনেক প্রতিভাবান। ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট উপন্যাসেও আমরা তাকে আইনের ছাত্র হিসেবে প্রমাণ লুকানোকে একটি বড় মানদণ্ড হিসেবেও নিতে পারি। কিন্তু অতি প্রতিভাবান ব্যক্তির প্রধান সমস্যা হচ্ছে প্রত্যাশা পূরণ করার চাপে অস্থির থাকা। যদি বর্তমান সমাজে এই অতি প্রতিভাবান ব্যক্তি তিনি তার প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারেন তাহলে ভয়ানক সমস্যায় পড়ে যেতে পারেন। এবং এক ধরণের আত্ম-সংশয়ে ভুগতে পারেন।

আর এই আত্ম-সংশয় থেকে হতাশা ও বিষণ্ণতা তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে অতি প্রতিভাবান ব্যক্তি যদি অনেকগুলো কাজও পেয়ে যান তাহলে কাজের চাপে পিষ্ট হয়ে একরকম যন্ত্রে পরিণত হতে পারেন। এমনকি সমাজ ও রাষ্ট্র তার থেকে যে পরিমাণ আউটপুট চাচ্ছে তা দিতে সক্ষম না হলে সাইকিয়াট্রিস্ট এর শরণাপন্ন হওয়া এবং আত্মহত্যার মতন বিষয়গুলো পর্যন্ত ঘটতে পারে।

অঢেল টাকা

ক্রাইম এবং এন্ড পানিশমেন্ট উপন্যাসে রাসকলনিকভের অঢেল টাকা তো দূর, তিনি তো দারিদ্রতার কবলে পড়ে হাঁসফাঁস করছিলেন। কিন্তু তিনি যদি সত্যিই অঢেল টাকার মালিক হতেন তাহলে কি শাস্তি পেতেন না? পেতেন। কারো অঢেল টাকা থাকা অন্যায় কিছু নয়। কিন্তু অঢেল টাকা মানে আপনাকে এই বিশাল অঙ্কের টাকা রক্ষা করা, বিনিয়োগ করা এবং ব্যয় করার ক্ষেত্রে সবসময় সাবধান থাকতে হবে; যা একসময় ভয়ানক মানসিক যন্ত্রণায় ফেলতে পারে।

অঢেল টাকা মানে জীবনের ঝুঁকি। মানে যদি ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্টের ঐ সুদখোর বুড়ীর চিন্তা করেন তাহলে তার অঢেল টাকাই ছিলো তার মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ। শুধু তাই নয়, অঢেল টাকা জীবনের উদ্দেশ্য কে আরো বেশি জটিল করে তুলবে এবং আইনি ঝামেলা ভয়ানক আকারে বৃদ্ধি পাবে। কাছের মানুষজন পর্যন্ত আপনাকে ভিন্ন চোখে দেখবে যদি আপনি তাদের দারিদ্রতায় সাহায্যে না আসতে পারেন। দস্তভয়েস্কি রাসকলনিকভের অঢেল টাকা দিয়েও এমন উপন্যাস উপহার দিতে পারতেন যা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের অসুবিধাগুলো সামনে নিয়ে আসতো পারতো।

প্রচুর বিলাসিতা

প্রচুর বিলাসিতা ও ভোগবাদ কে একত্রে ব্যাখ্যা করলে আমার জন্য সুবিধা হবে। প্রচুর বিলাসিতার জন্য আপনার আরো ভালো আর্থিক অবস্থা বিদ্যমান থাকা জরুরী। কিছু মানুষ প্রচুর ব্যয় করেন তাদের পছন্দের বিভিন্ন ব্রান্ডের জিনিসপত্র ক্রয় করতে। এতে অপব্যয় বেশি হয় এবং প্রচুর টাকার প্রয়োজন পড়ে। এখন এই টাকা যোগান দিতে পারলে তো ভালো, না দিতে পারলে দেউলিয়া হয়ে যাবেন এবং জেলের ভাত আবশ্যিক হয়ে পড়বে। কিন্তু এই বড় অঙ্কের টাকার যোগান যদি দিতেও পারেন তবুও আপনার ব্যক্তি নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে, চুরি ও ডাকাতি থেকে নিরাপত্তার জন্য সবসময় সজাগ থাকতে হবে।

প্রচুর বিলাসিতার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আপনাকে সবসময় নতুন কোম্পানি বা কোন কোম্পানির নতুন নতুন প্রোডাক্টের খোঁজ-খবর রাখা জরুরী হয়ে পড়ে। এতে জীবনের মূল উদ্দেশ্য তলিয়ে যেতে পারে, কারণ আপনি সবসময় নতুন নতুন জিনিস বাজার থেকে ক্রয় করায় ব্যস্ত। দিনশেষে এরাই সবচেয়ে বেশি নিঃসঙ্গতায় জীবন কাটাতে পারে। কারণ এদের কাছের মানুষজন যখন জীবনকে কোন অর্থ দেওয়াতে ব্যস্ত ছিলো তখন আপনি বিলাসিতায় ব্যস্ত ছিলেন।

অবাধ স্বাধীনতা

ধরা যাক, রাসকলনিকভের দুনিয়ায় কোন আইন নাই। কোন বিচারব্যবস্থা নাই। নাই কোন ধর্ম বা রীতিনীতি বা সংস্কার। এই অবাধ স্বাধীনতা প্রধান যে সমস্যা তৈরি করতে পারে সেটা হলো মোরাল সংকট। ব্যক্তির ক্ষেত্রে মোরাল সংকট এবং গ্রুপ বা সমাজের ক্ষেত্রে এথিস্কের সংকট একজন মানুষ দায়িত্ব হিসেবে নির্দেশনা সংকটে ভুগবেন। মানে আপনাকে বেঁচে থাকতে হলে খোদ আপনাকেই নিয়মনীতি তৈয়ার করতে হবে।

কিছু মানুষ তো সিরিয়াল কিলার হয়ে যেতে পারেন। মানে রাসকলনিকভের যে মানসিক যন্ত্রণা তা যদি মোরাল কোর্ট নির্ধারণ করে থাকে তাহলে মোরাল (ব্যক্তির নৈতিকতা) সংকটের কারণে তিনি একাধিক খুন করেও ভাবতে পারেন আসলেই তিনি সুপারম্যান (অতিমানব)। কিন্তু আমাদের ডিকশনারীতে তিনিই হতেন সিরিয়াল কিলার।

সুতরাং কোন ব্যক্তি বা রাষ্ট্রকে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া সম্ভব নয়। ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র আদর্শিক শাস্তি এখানে ‘Null’ & ‘Void' হতে বাধ্য কারণ কেউ যদি অবাধ স্বাধীনতার পৃথিবী কল্পনা করেন তাহলে সমস্যা কোথায়? জপানীজ সিরিজ ‘A Death Note’ এবং কোরিয়ান সিরিজ ‘A Killer Paradox’ কিন্তু এরকম অবাধ স্বাধীনতার বিষয়টি নিয়ে কিছুটা হলেও কাজ করেছে।

অবাধ যৌনতা

অবাধ যৌনতার সাথে শুধু পূর্বের অবাধ স্বাধীনতা যুক্ত করে দেন তাহলে যে দুনিয়া আপনি সামনে কল্পনা করছেন তা কিছুটা ইউটোপিয়ান হলেও এটি কিন্তু আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গীনি কে ঐ অবস্থায় ভাবতে পারছেন না। মানে যাকে আপনি খুব ভালোবাসেন। বর্তমানের দুনিয়া তো অবাধ যৌনতার দুনিয়া এবং অনেকখানি ধর্মের মোরাল বিবর্জিত দুনিয়া। এই নিয়ে আমি পুরো একটি ছোটগল্প লিখেছি যেখানে অবাধ যৌনতার সাথে অবাধ স্বাধীনতা যুক্ত আছে।

বড় সমস্যা হচ্ছে, এই ধরণের সিস্টেমে “জোর যার যৌনতাও তার” হয়ে উঠবে। আবার সুন্দর বা সুন্দরী হওয়া শর্তে, সমাজে যৌনতার ব্যাপক বৈষম্যর সৃষ্টি হবে। দিনশেষে, এমন সমাজ টেকসই সমাজে রুপান্তর হতে কখনোই সক্ষম হবে না। ব্যক্তি এই স্বাধীনতার অবমূল্যায়ন করার জন্য বিবেকের কাছে একদিন ফিরে যাবেন যেটাকে আমি ‘Corrupted Soul’ বলে থাকি। এরা কখনোই আর প্রেমে পড়তে পারবে না।

এখানেই ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র 'পানিশমেন্ট' তত্ত্ব একটি আদর্শিক পানিশমেন্ট বা শাস্তি হিসেবে সামনে এসে পড়ে। মানসিক যন্ত্রণা এবং জেল খাটা শুধুমাত্র খুন এবং দারিদ্রতার আশ্রয়ে ঘটে না। সুতরাং পাপ শাস্তি হিসেবে কার জীবনে কীভাবে কাজ করছে সেটা বলা দায়! কেউ বলতে পারেন, “কই! অমুক বা তমুক ব্যক্তি দুর্নীতি করে ধনী হয়েছেন তার তো কোন শাস্তি হচ্ছে না? তিনি তো বেশ বহাল তবিয়তে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন!” এখন এখানে কর্মের প্রতিফলন কোথায়? শাস্তি কোথায়? এই ব্যাখ্যা আমি তো ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট উপন্যাসে খুঁজে পাইনি।

কিন্তু টাকার মধ্যেও শাস্তি আছে, বিলাসিতার মধ্যেও অশান্তি আছে, স্বাধীনতার মধ্যেও পরাধীনতা আছে – তা কিন্তু ফিওদর দস্তয়েভস্কি বা জনপ্রিয় পানিশমেন্ট বা শাস্তির মডেল/তত্ত্ব হতে পারছে না। কিন্তু তাঁর আদর্শিক শাস্তিকে উহ্য করে নয়, বরং এই আদর্শিক শাস্তির সাথে শাস্তির বিভাজনে আরো বহু রকমের শাস্তি যুক্ত করা যেতে পারে। একপেশে চিন্তা চেতনা “পাপ বাপকেও ছাড়ে না” প্রবাদকে উহ্য করে দিচ্ছে। কিন্তু বহু পাপ আছে আর তার শাস্তিও আছে যা কিন্তু সবসময় শুধুমাত্র খুন আর জেলের সাথে সম্পৃক্ত নাও হতে পারে।

এজন্যই শাস্তির আরো ভালো সংজ্ঞা দরকার। প্রায়শই নাটক/সিনেমা/সিরিজে ক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট বই নিয়ে অভিনেতারা যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা হলো আদর্শিক ও আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত শাস্তি।

সন্দেহ নাই, বিবেকের আদালতের সেট্যাপ নিয়ে ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র কোন তুলনা হতে পারে না। কিন্তু এই বিবেকের আদলত অনেক সিলেক্টিভ। দারিদ্রতা ছাড়া যেন এ বিবেকের আদালত কোন রায় দেয় না। খুন ছাড়া এই বিবেকের আদালত শাস্তিও দেয় না। এত বকবক করার কারণ হচ্ছে যে, যা আমরা দেখছি জরুরী নয় তা-ই সত্য। বহু সত্য পর্দার আড়ালে থাকে যা আমরা দেখতে পাই না। আমাদের বিচারও সিলেক্টিভ।

কাউকে ইমিউন করে রাখা অথবা না রাখার বিষয়ে জর্জ অরওয়েল তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘Animal Farm’' -এ বলার চেষ্টা করেছেন, অরওয়েল এই উপন্যাসে দেখিয়েছেন যে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা অনেক কঠিন। খামারের পশুরা যখন বিদ্রোহ করে এবং খামারের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন তারা প্রথমে সমানাধিকার এবং ন্যায়বিচারের আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যায়। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের নেতারা (শূকররা) ক্ষমতার লোভে পড়ে এবং পুরনো অত্যাচারী শাসকদের মতোই অত্যাচারী হয়ে ওঠে।

এই উপন্যাসের মাধ্যমে অরওয়েল দেখিয়েছেন যে, ক্ষমতা এবং বিলাসিতা অনেক সময় শাস্তি হিসেবে পরিণত হতে পারে। ক্ষমতার লোভ এবং বিলাসিতার প্রতি আকর্ষণ মানুষকে নৈতিকতা এবং আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য মানসিক ও নৈতিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে।

অ্যানিমেল ফার্ম উপন্যাস থেকে জর্জ অরওয়েল এর বিখ্যাত উক্তি দিয়ে আজকের লেখা শেষ করছি,

“All animals are equal, but some animals are more equal than others.”


ছবি: DeviantArt
Also Read It On: শাস্তির নতুন সংজ্ঞা: ফিওদর দস্তয়েভস্কি’র দর্শনের অতিক্রমণ
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৩৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×