somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান সময়ে আমার অন্যতম প্রিয় একজনের কাছে আমার একটি খোলা চিঠি

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুই, তুমি কিংবা আপনি সম্বোধন বাংলা ভাষায় নির্দিষ্টতা নিয়ে আসে । অন্যান্য ভাষার চেয়ে হয়তো বাংলা ভাষার মধুরতা এই কারণেই অনেক বেশি । আমার খোলা চিঠির প্রেরককে আমি নিরপেক্ষ সম্বোধন হিসেবে আপাতত তুমি করেই বলছি, কারণ আমি চাই যেন এই চিঠিতে লিঙ্গ, সম্পর্ক এবং বহিঃপ্রকাশগুলো সব অস্পষ্ট থাকুক । ভাবার অবকাশ নেই যে এই চিঠির সূচনা কিংবা সমাপ্তি হয়তো রহস্য কিংবা কৌতূহলের ভরা-জমাট কিছু হবে । আমি জানি না তবে হয়তো আমার লেখায় যা আসবে পরবর্তীতে সেই কথাগুলো আমার ঐ অন্যতম প্রিয় মানুষটার কথা ভেবেই আসবে, এটার নিশ্চয়তা অনায়াসে দিতে পারি আমি । যাই হোক, ভণিতা না করে, আসল কোথায় আসি ।
তুমি হয়তো দেখে থাকবে যে আমি সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি ধীরে ধীরে । এখানে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে কিছু ভুল, ঐসমস্ত ভুলের শাস্তি, পরিবেশ, আশেপাশে থাকা অবিবেচক কিছু মানুষ আর হয়তো সময় নিজেই । তুমি সবসময়ই নিজেকে খোলসবন্দী করে রাখতে পছন্দ করো । আশেপাশের অবিবেচক মানুষগুলোই তোমার অনেক প্রিয় । রাগ, দুঃখ, আবেগ, কষ্ট, কান্না ইত্যাদি বহিঃপ্রকাশগুলো তোমার কাছে বরাবরের মতই ঠুনকো । তুমি ভাবো, ভাবো বৃহত্তর কিছু, কিন্তু পরিধি বা সীমার বাইরে গিয়ে কিছু করার সাধ্য তোমার নেই । তুমি নিজেকে যাচাই করো প্রতিনিয়ত । যাচাই করো তাদের সাথে তুলনা করে, যারা তোমাকে অনেক আপন ভেবে অতিরিক্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটায় নিজ থেকে । তাই তো আপন-পর চেনার কষ্টটুকু না করে একাকী থাকতেই ভালোবাসো তুমি ।
আচ্ছা, এতটা সময় পেরিয়ে এসেও কি আমাকে তোমার কিছু বলার নেই ? কিছু প্রশ্নের উত্তর কি নেয়ার নেই ? যেই প্রশ্নগুলো আমি নিজেকেও নিজে করেছি অনেকবার, উত্তর সাজিয়েছি কিন্তু তুমি ফিরে আসোনি বলে সেই উত্তরগুলোর উপর ধূলা জমা হয়েছে । আমাকে তুমি অনেকবার ডেকেছ, জানি । কিন্তু সাধারণ অন্য কারও থেকে সেই ডাক কেমন যেন ব্যতিক্রম । আমি তাই শুনতে পাইনি । তাই হয়তো উত্তরও দেয়া হয়নি । আচ্ছা, অন্য কারও মন্তব্য শুনে নিজেকে দাড় করানো কি ঠিক ? নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দেয়া কি ঠিক ? কেমন যেন সমীকরণ সব মিলে যাচ্ছে । আমার করে আসা পুরনো ভুলগুলো এখন তোমার অপেক্ষায় ।
তুমি কি জানো এখন কেন তোমার ডাকে আমি সাড়া দিচ্ছি না ? জানো কি, তোমার ছায়া থেকেও অনেক দূর দিয়ে হাঁটছি ? জানার সেই চোখটা তো তুমি ইচ্ছে করেই বন্ধ করে রেখেছ, জানবে কি করে ? আমি আর সেই আগের মত নেই । এখন আমার প্রচণ্ড ব্যাথা । ব্যাথাগুলো তৈরিও হয়েছে আস্তে আস্তে অনেক অনেক কষ্ট জমা হয়ে । তবে তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা আমার আজীবনের । অনেক আপন কেউ যখন রাস্তায় কাঁটা বিছিয়ে রাখে, সেই কাঁটা চোখে ফুটে চোখ পরিস্কার করে দেয়, খুলে দেয় মতান্তরের দরজা । আমি এখন আর আগের মত নিঃশ্বাস নিতে পারি না । আমার আশেপাশেও এখন অনেক অপরিচিত লোকজন । তারা আমাকে কাছে ডাকে, কিন্তু সেই ডাকে সাড়া দেওয়ার অনুমতি আমার হৃদয় আমাকে দেয়না । এক তোমার আপন হতে গিয়ে আমি বাকী সবাইকে হারিয়েছি । আর আজ ......... থাক, সে অনেক পুরনো কথা, তাই না ?
জানো হয়তো, আমার বুক ভেঙ্গে এখন শুধুই কান্না আসে । একটি ভুলের শাস্তি যে আপনকে হারানোর মত এত উচ্চ হতে পারে, তা আমার জানা ছিল না । এখন আর হৈ-হুল্লুড়ের মধ্যে আর আমার যাওয়া হয়না । অতীত বড়ই নিষ্ঠুর । এই অতীতকে পিছনে ফেলেই আমাকে আমার ভবিষ্যতের পিছনে ছুটতে হবে । তোমাকে বলা হয়নি কিন্তু পশ্চাদপদতার কারণগুলোকে আমি এখন উপেক্ষা করতে শিখে গিয়েছি । হ্যাঁ, আমি এখন একাকী বাঁচতে শিখে গিয়েছি । অনেকগুলো কথা যেগুলো তোমাকেই শুধু বলেছি আজ অনেকেই জানে । গোপনীয়তার যে সংজ্ঞাগুলো তোমার কাছে ঠুনকো, সেগুলোও আমাকে পরাজিত করতে পারেনি । পুরোপুরি মাথা উঁচু করে না হোক, কমপক্ষে মাথাটা না নুইয়ে এখন হাঁটতে পারি অনায়াসে ।
জানি, তোমাকে হয়তো আশেপাশে দেখতে পাবো না আর কয়েকদিন পরেই । আমার আসল সংগ্রাম শুরু হবে তখন থেকেই । নিজ সত্তা, পুরোপুরি নিজের সত্তা তৈরি করার যে নিরন্তর সংগ্রামের জন্য আমি ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করছি, সেটি আমি তোমার থেকে গোপনই রাখবো । আসলে জানোই হয়তো, সকলের চোখে ছোট হয়ে যাওয়ার যে কষ্ট হয়, তার থেকে বহু লক্ষগুণ কষ্ট বেশি হয় যখন আমরা নিজেদের কাছে নিজে ছোট হয়ে যাই ।
লেখাগুলো যদি অজান্তে কোনদিন তোমার চোখে পড়ে, তাহলে পড়ো । একাকী, নির্জনে । তোমার চোখে আমি যেমনই হই না কেন, আমার চোখে তুমি ঐ মানুষটিই থেকে যাবে চিরদিন, যেরূপ তোমাকে দেখাবার মত তোমার কাছে আমার প্রত্যাশা ছিল ।

ইতি
তোমারি চির শুভাকাঙ্ক্ষী
একজন ব্যক্তি, যাকে তুমি চিনতে
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×