somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেকায়দা অবস্থায় একদিন .... :) ;) :P

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একা একা মার্কেট করতে আমার ভালো লাগে না । না, এইজন্য না যে আমি খুব একাকী বোধ করি, এই কারণে যে আমি কনফিউজড হয়ে যাই । যা দেখি, তাই ভালো লাগে । এর একটা উদাহারণ দিই । গত রোজার ঈদের দুই সপ্তাহ আগে এরকম বাসা থেকে একা একা মার্কেটে গিয়েছিলাম । উদ্দেশ্য দুইটি প্যান্টের কাপড়ের পিস কেনা । আম্মু সাথে আসতে চেয়েছিল কিন্তু আমি আম্মুকে না করেছি । কেন, আমি বড় হইছি না ? এখন থেকে যা কিনি, সব একা একাই কিনবো । তো এই চিন্তা করেই দোকানে যাই । আর গিয়ে কাপড়ের যেই পিস দেখি, সেটাই ভালো লাগে । কিন্তু নিতে তো হবে দুই পিস, সব তো আর নেব না । তো একটা কালো কালারের তেলা একটা কাপড়ের পিস নিলাম আর আরেকটা কোনরকম । আমার হিসেবমতে, অনেকটা বিশ্বজয় করে নেবার মত ব্যাপার এটি । তো বাসায় এসে সেই কাপড়ের পিস দেখে আম্মু আর বোনগুলোর সে কি হাসাহাসি । আমি অবশ্য জেদ করেই ঐ কাপড় আর না বদলিয়ে ঐটা দিয়ে প্যান্ট বানাই । কিন্তু দুই মাস পরেই দেখি, প্যান্ট ছেঁড়াও সারা । তো সেবারের মত সিদ্ধান্ত নিলাম এবার থেকে আম্মুকে নিয়েই যাবো, বড় হয়েছি তো কি হয়েছে । আম্মুর কাছে তো আমি সেই ছোটই । কিন্তু এবারও কুরবানির ঈদের আগে আম্মুর একটু ব্যস্ততার কারণে একা একা মার্কেট করতে বের হলাম । আসলে কাহিনী কিন্তু এটা না, কাহিনী আরও মজার ।

মার্কেটে এসেই ঢুকলাম একটি কাপড়ের দোকানে । উদ্দেশ্য ভালো কোন পাঞ্জাবী থাকলে দেখা । ঐ দোকানে শুধু ছেলেদের না, মেয়েদের কাপড়ও পাওয়া যায় । তো পাঞ্জাবী দেখতে দেখতেই হঠাৎ চোখ পড়লো দুইটি মেয়ের দিকে । তারা দোকানের কাছে কোন একটি কাপড়ের দাম জিজ্ঞেস করছিল । দোকানী হয়তো দাম বেশি বলেছে, এই কারণেই মেয়ে দুইটি দেখলাম ঐ দোকান থেকে বেরিয়ে গেল । মেয়ে দুইটির পিছু নেবার ইচ্ছা জাগলো মনে । তো যেই ভাবা, সেই কাজ । এভাবে তাদের পিছন পিছন প্রায় আট-দশ দোকান ঘুরে ঘুরে যখন হয়রান হয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আবিস্কার করলাম যে আসলে ওদের কিছুই কেনার ইচ্ছা নেই । খালি দাম শুনে বাজার যাচাই করাই হল উদ্দেশ্য । হঠাৎ মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসলো । ওদের সাথে কথা বলার । যেই ভাবা, সেই কাজ ।

- এই যে শুনছেন ? (আসলে যেই মেয়েটিকে দেখে বেশি ভালো লেগেছে, তার সাথেই কথা বলতে এগিয়ে গেলাম)
- (মেয়ে দুইটিও হঠাৎ আমার ডাক শুনে অবাক হয় কিন্তু ঐ মেয়েটিই ডাকে উত্তর দেয়), জি, আমাদের বলছেন ?
- হ্যাঁ, বিশেষ করে আপনাকে ।
- আমাকে, মানে, বুঝলাম না তো । আমি তো আপনাকে কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়েনা । আচ্ছা, আমরা কি পূর্বপরিচিত ?
- না, পূর্বপরিচিত না । কিন্তু কথা বললে এখন পরিচিত হওয়া যাবে সহজেই ।
- কিন্তু অপরিচিত কারও সাথে কথা বলাটা কি ঠিক হবে ?
- আচ্ছা, ওসব বাদ দেন । একটা কথা সরাসরি জিজ্ঞেস করি, আপনার কি রিলেশন আছে ?
- সরি, আমি আপনাকে বলবো কেন এই কথা ?
- আহা, বলুন না, প্লিজ ।
- (মেয়েটি অত্যন্ত বিরক্তির সাথেই যেন উত্তর দিল) না, নেই ।
- ওহ, তাইলে তো আমার কাজ হয়ে গেছে ।
- কাজ হয়ে গেছে মানে ?
- মানে, আপনাকে আমার ভালো লেগে গেছে । আমার সাথে রিলেশন করবেন ?
- (মেয়েটি এবার যেন টাশকি খাইয়া পইড়া যায় এমন) সরি, কি বললেন ?
- কেন, শুনতে পাননি ? মানে আপনাকে দেখে লাভ এট ফাস্ট সাইট হয়ে গেছে । আপত্তি না থাকলে আমরা তো রিলেশন করতেই পারি ।
- (এবার মেয়েটি একটু সহজ হয়ে) কিন্তু আগে তো আমাদের নিজেদের পরস্পরকে চেনার দরকার, তাই না ? তাছাড়া, কিছু মনে করবেন না, কেন জানি আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমাদের সমবয়সী হবেন । আর তা হয়ে থাকলে আমি একেবারেই নট ইন্টারেস্টেড ।
- আমি একটি নামকরা সরকারী ইউনিভার্সিটিতে থার্ড ইয়ারে আছি । আমার বাবা ব্যবসায়ী, মা গৃহিণী । আর ভাইবোন সব মাশাল্লাহ । এই তো আমার পরিচয় । চলবে না ?
- কি থার্ড ইয়ারে, সরি ভাইয়া, কিন্তু আপনাকে দেখলে না সেটা মনে হয়না ।
- (এবার আমার টাশকি খাওয়ার পালা) সত্যি ? হয়তো । আমি জানি না ।

এতক্ষণ পর মুখ খুললো পাশে থাকা মেয়েটি ।

- ভাইয়া, আপনি যেন কোন ইউনিভার্সিটির কথা বললেন ? আরে, ঐ ইউনিভার্সিটিতে তো আমার ভাইয়াও পড়ে, তাও আবার থার্ড ইয়ারেই তো ।
- (আমি এবার ভীষণ অবাক হয়ে, অনেকটা ঢোক গিলতে গিলতে) ওহ, তাই । কে, বল তো ? কোন ডিপার্টমেন্ট ?
- ঐ যে অমুক , তমুক ডিপার্টমেন্টে পড়ে । আর আপনি তো চিনবেন । ভাইয়া তো তার ডিপার্টমেন্টে ফাস্ট বয় ।

(হঠাৎ ধরা খেয়ে অবস্থা খারাপ আমার, এবার আমার পালানোর পালা) ইয়ে মানে । আপুরা । আমি তো মজা করছিলাম । তোমরা কিছু মনে করোনি তো ? যাই, হ্যাঁ, আবার হয়তো দেখা হবে । বাই । বলেই পিছন ফিরে জোরে হাঁটা শুরু করলাম ।

পিছনদিক থেকে কেন জানি মনে হল যে মেয়েদুটির হাসির শব্দ শুনতে পেলাম ।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×