বিয়ে করতে চান?
সর্বগুণ সম্পুর্ণা?
কি দরকার ভাই ট্যালেন্টেড মেয়ে বিয়ে করে অবরোধবাসিনী করে রাখার.....
..বলে না! শুচের মাথা চোখা হয়ে বের হয়!আপনি আপনার বউর চোখা মাথা ভোতা করে রাখতে চাইলেও সে উস খুস করবে তাকে প্রকাশ করার জন্য..সংসারে ভাই শান্তি পাবেন না.
.রান্না,বাজারের ফর্দ আর বাচ্চাকাচ্চা সামলানোর জন্য একটা সাধারণ ঘরোয়া অন্তপুরোবাসিনী কম শিক্ষিত মেয়ে বিয়ে করেন..সুখি হবেন....
.কিছু মেয়ে হয়তো আপনার থুক্কু সমাজের দিকে তাকিয়ে নিজেকে মাটিচাপা দিবে..ভাই কাউরে ভালোবাসলে তার সত্তারে ভালোবাসেন শরীররে না...শাড়ি লিপিস্টিক আর নিরাপদ বিছানা নারীর চাহিদা না।.নারী পুরুষ আমি চিনি না.. আমি চিনি মানুষ.. প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে যেমন নারী থাকে তেমন সফল নারীর পিছনেও পুরুষ থাকা চাই...নারী হিসেবে কারো সপ্নপুরনের শক্তি যেমন হবো তেমনি নিজের স্বপ্ন ও পুরণ করতে চাই..আর কিছু সফলতার উত্তরসুরিও রেখে যেতে চাই
আপনার প্রতি অনুরোধ ভাই...আপনার যদি সঙ্গ দেয়ার ক্যাপাসিটি না থাকে.. প্রচন্ড কনজারভেটিভ হন এবং সাপোর্ট করার শক্তি বা মানষিকতা না,সন্দেহ বাতিক থাকে তো ট্যালেন্টেড মেয়ে বিয়ে করবেন না...সমস্যা গুলা আমি বলি শুনেন..
১.মেয়ে যদি ডিবেটর হয়.
..আপনি তো ভাবছেন..বাহ..এমন মেয়েইতো চাই! মিষ্টি করে কথা বলে রাগ ভাঙাবে...ভুল ভাবছেন..আসলে সে ঝগড়া করবে না বরং যুক্তি দিয়ে বোঝাবে আপনাকে,আপনি চাইলেই কিছু একটা ভুজুং ভাজুং বুঝিয়ে দিয়ে তাকে ধোকা দিতে পারবেন না..ভিষণ সাহসী হবে. সে একশটা পুরুষের সামনে দাড়িয়ে বক্তব্য দিবে..কখনো দেখবেন নেত্রীত্বদিচ্ছে,তার পরিচিতি হবে ব্যাপক,কখনো কখনো নারীমুক্তি বা সেক্সুয়াল টপিকে উন্মুক্ত ডিবেট করে, হারিয়ে আসবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে...আপনি যদি নিজের ঘরের বউকে একশ পুরুষ নারীর সামনে গলা উচুকরে কথা বলা..আপনার বউয়ের সামাজিক পরিচিতি সাপর্ট না করতে পারেন, আল্লার ওয়াসতে ডিবেটর বিয়ে কইরেন না
আসলে যে ডিবেটর সে হাজার টা মানুষের সাথে চলে অভ্যস্ত তো..দেখবেন তার ম্যানেজ করারার ক্ষমতা..ছোট খাটো বিষয়ে ছাড়দেয়ার ক্ষমতা বা উদারতা.. অন্যলেভেলের...পজিটিভিটি আর বাস্তববাদি হওয়ার দরুন সে আপনার মেয়ে কলিগ বা কাজিন দেখে অকারণ সন্দেহ করবে না কিংবা পরিবারের কার জন্য কত খরচ করছেন হিসেব চাইবে না..বরং নিজেও খরচ শেয়ার করবে..আপনার সিচুয়েশন বুঝবে আরো আরো ফায়দা.কিন্তু ওগুলো বাদ.আজ শুধু লসই বলবো..
২.পড়ুয়া মেয়ে
আপনি হয়তো ভাবছেন পড়ুয়া মেয়ে মানে নিশ্চই আগে কোন রিলেশন টন করে নাই..মাইয়া পিওর আছে..বেশি পড়ুয়া মানে আপনার পোলা মাইয়াইও সিরাম ট্যালেন্টেড হবে! প্রাইভেটের খরচ বেচে গেলো!
আবারো ভুল ভাবছেন..পড়ুয়া মেয়েরা অনেক ইন্ট্যালিজিন্টতো হয় ই..আর হয় স্বাধীনচেতা..কারণ বইতো নিজেকে চিনতে শেখায়..আর যে নিজেকে চিনে সে তত উদার আর আত্মনির্ভরশীল হতে চায়..আর ঠিক তখনই সে শুধু আপনার অবরোধবাসিনী আদরের বউটি হয়ে থাকবে না..আপনি যদি নারীর স্বনির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক মুক্তির প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাকে সহযোগিতা করতে এবং তাকে উচ্চ শিক্ষিত করতে না পারেন তাহলে পড়ুয়া মেয়ে বিয়ে করবেন না
৩.আর্টিস্ট
আপনি হয়তো ভাবছেন..ছেলে মেয়ের ছবি আকার টিচারের খরচ বেচে গেল! খুব বেশি হলে আপনার বাসায় একটা আর্ট ইস্কুল খুলে দিবেন!
ভুল ভাবছেন..আল্লাহ তাকে তার বাবা মার কাছে এই গুন দিয়ে তাকে পাঠইয়েছে শুধু আপনার ছেলেমেয়েকে শিখানোর জন্য না...তার জগৎ আরো বড়,বিশ্বতার থেকে শিখবে.
সে দেখবেন পেন্সিল আর রংতুলি হাতে জংগলে, রাস্তায়,বস্তিতে, বাজারে, বসে পড়ছে..রাতে সোহাগ করতে গেলে দেখবেন গালে রং লাগিয়ে জংলিদের মত উষ্কখুষ্কচুলে ছবি আকছে..দেশ বিদেশের ফেস্টে ছবি দেখতে চলে যাচ্ছে..অকারণ আর্ট গ্যালারি দেখতে বেরিয়ে পড়ছে যা আপনার কাছে হয় তো একদম মুল্যহীন কাজ..তার কাছে জীবন মরণ ব্যাপার! এত গেল সাধারণ! অসাধারণ আর্টিস্ট হলে তার আর্টএর জন্য আপনাদের স্বপরিবারে জেল জরিমানাও হতে পারে!
৪.ভ্রমন প্রিয়
আপনি হয়তো ভাবছেন হানিমুনে কক্সবাজার আর সেন্ট মার্টিনে দুইরাত তিনদিনের টুর দিয়াই বউর স্বপ্ন পুরণ করে ফেলবেন!
কিন্তু বউ কি আসলে এটা চাইতো! সে তো পৃথিবীর কোনা কোনা সব দুর্গম যায়গা গুলা ক্যামেরা হাতে , ঘুরে ফিরতে চাইতো,দেখতে চাইতো পৃথিবীর সভ্যতার নানা নিদর্শন..দুচারটা যাদুঘর দেখায় তার তৃষ্ঞা মিটাতে পারলেন কি? আপনি যদি তার হাত ধরে তাকে নিয়ে নদীতে সাঁতরাতে না পারেন তো....
৫.কবি লেখক
নাহ..বাজারের ফর্দ লিখার জন্য নিশ্চই আপনার একজন সাহিত্যমনা বউয়ের প্রয়োজন নেই..
তবে সাহিত্যিক দের প্লাস পয়েন্ট হলো এদের আকাশ বাতাস চাদের আলো খাইয়ে যেমন পেট খারাপ করে দিতে পারবেন!কাচের চুড়ি আর টিপের পাতায় যেমন সে খুশি সে তেমনি আপনার কাছে চিঠি চাইবে, তেমনি অসুবিধা হলো রাত বিরাতে আপনার কাচা ঘুম ভেঙে বিদঘুটে কবিতা শোনাবে,মাঝরাতে ঘুরতে চাইবে ফ্লাডলাইটের নিচে,নৌভ্রমনে যদি আপনি উত্তাল সমুদ্রে তাকে চুল উড়ানোর পারমিশন দিতে না পারেন তো সাহিত্যিক বিয়ে করবেন না..অকারণ অভিমান তো সে করবেই বরং আপনার সারাদিনের ক্লান্তি সে না দেখেই টিপ আর চুড়ি না আনার অভিযোগে আপনার উপর অভিমান করে মহাভারত লিখে ফেলতেই পারে!আপনি যদি ভেবেই থাকেন মেয়ে মানুষ মানেই বুদ্ধি হাটুতে!আপনার সংসারের যদি হাজার দায়িত্বের বোঝা তার থেকে একটু হালকা করে না দিতে পারেন..তারে উৎসাহ দিতে আর অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করতে দিতে না পারেন তো এমন বউ বিয়ে করে সংসার ধ্বংসই করবেন
৪.গায়িকা
আপনার অবসরের বিকালে মিস্টি গান শোনাবে ভাবছেন?
সেতো চায় কন্সার্ট করতে এলবাম বেরকরতে... তার অসংখ ফ্যান এসি হবে.. গিটার নিয়ে নেচে নেচে অসংখ্য মানুষের সামনে গাইবে..
ধরি সে ইসলামি সংগীতশিল্পী...নিজে না নাচলো..শুধু হাত আর আঙুল নাচালো..টিভির পর্দায় নিজের বউকে দেখে যদি গর্ব করার মানষিকতা যদি আপনার না থাকে তো গায়িকা বিয়ে করবেন না
৫.রাধুনী
কি ভাবছেন আপনাকে বিদেশি খাবার রেধে খাওয়াবে! আবারো ভুল....মাস্টার শেফে যেতে না পেরে সে রেধে খাওয়াবে পাশের বাসার ভাবিকে।পাশের বাসার ভাইয়ের আর আপনার কলিগদের মুখে বউয়ের রান্নার প্রশংসা শুনার মানসিকতা না থাকলে..রান্নাকরা প্যাশন এমন মেয়ে ভুলে যান
খুব পাকা রাধুনী না হলে এমন মেয়ে বিয়ে না করাই ভালো...এক্সপেরিমেন্ট করে আপনার পাকস্থলি বিকল করে দিবে। আপনার যদি ডালে লবন কম হলে পাতিল ছোড়ার অভ্যস থাকে তো....আর যদি আপনার খুব ভালো রাধুনী বন্ধবীথাকে বউ তো ভুলেই যান
৬. চন্ঞ্চল +মিশুক
এমন মেয়ে হয় কান্ডজ্ঞান হীন.১০/১২ টা পর্যন্ত ঘুমাবে..ঘরগুছাবে না..পানি ঢালতে গিয়ে আপনার ডায়নিং ভাসায় ফেলবে.ধুড়ম ধাড়াম সোজা রাস্তায় উষ্ঠা খাবে..মাঝ রাস্তায় কোলে উঠার বায়না করবে..ধুলাবালিতে বসে যাবে....আপনার একদম যত্ন নিবে না...আপনি খেতে বসলে আআ করে মুখ বাড়ায় দিবে...দরকারি কাজের মাঝে টেবিলে উঠে নাগীন ডান্স দিবে....শাশুর বকাবকি করলে টকিংটম ছেড়ে দিবে..শাশুড়ি রাগ করলে গালে আপ্পা লাগায় দিবে...আপনার কাজের জিনিসে ইমোজি একে রাখবে..সারা বাসায় চিরকুট লাগিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাবে...রাত তিনটায় লাইট জ্বালায় লিপিস্টিক লাগাবে..আপনার টিফিন বক্সে আস্ত তেলাপোকা দিবে..আপনারে কান ধরে উঠবস ও করাবে...আবার হিজড়া সেজে আপনার অভিমানও ভাঙাবে.বকাদিলে ঠোট ফুলায় কাদবে...জীবন নিয়া এদের মাথা ব্যাথা নাই..মোটেই সিরিরিয়াস না...এরা শুধু ফ্যান্টাসি চায়..আজব সব কাজ করবে
নতুন মানুষের সাথে মিশবে..কখনো রাস্তার পোলাপানকে আপনার দুপুরের লান্চ দিয়ে দিবে..আপনার দেয়া লাল শাড়িটা কোন বন্ধুরে দিয়ে আসবে গফকে গিফ্ট করার জন্য..হাসপাতাল থেকে মাছবাজার, লোকাল থানার ওসি থেকে কাদেরিয়া বাহিনী সব যায়গায় আপনার বউর বন্ধু বান্ধব লিংক থাকবে!
৭.অভিনেতা ৮.নৃত্যশিল্পি ৯.মডেল .ব্লা ব্লা ব্লা
আপনি হয়তো ভাববেন বাচ্চা মেয়ে মানুষ করে ফেলতে পারবেন...কিন্তু একসময় আপনি বিরক্ত হয়েয়ে বিকল্প পথ দেখবেন..কোন আদর্শ শান্তশিষ্ট ভদ্রমহিলার খোজ করবেন..এমন মাথামোটারে তার পাগলামীতে সঙ্গদিতে না পারলে..ভুল গুলা ভালোবেসে ক্ষমাকরতে না পারলে এমন বউ ভুলে যান....
আপনার জীবন হলো প্রতিদিনের ডাল, পাবদা মাছের তরকারি, ভাত, সাপ্তায় একদিন বিরিয়ানী,বাজার,মাসে একবার চিড়িয়াখানা,চেনা বিছানা,আর সম্পত্তি বাড়ানো, সন্তান উৎপন্নকরা...এজন্য ট্যালেন্ডেড স্বাধীনচেতা কারোর জীবন নষ্ট করিবেন না
যে যেটা না তারে দিয়ে সেটা আশা করলে তা হবে গরুরে গাছে ওঠানোর মত..গরুরে হালচাষ ই করতে দেন...একটা ট্যালেন্টেড মেয়ে যদি নিজের স্বপ্ন ভুলে আপনাকে সফল করার পিছনে জীবন দিতে পারে আপনি কি এতটুকু কম্প্রমাইজ করে সেই মেয়ের ইচ্ছা সফল করতে পারেন না? সাংসারিক দায়ীত্ব কি একটু ভাগাভাগি করতে পারেন না?
সে শুধু লাগানোর বস্তু না সে একটা মানুষ।।এটা যেদিন বুঝবেন সেদিন দেশ থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা কমবে.. সর্বক্ষেত্রেই,
নারীকে নিজের রক্ষা করা শিখায়দিলে সে আপনার গোলামি করবে না এমনটা ভাবলে আপনাকে বলি..যে নিরাপত্তার জন্য আপনারে ভালোবাসে সে আপনারে ভালোবাসে না,আপনি মরলে সে ছাদ হারানোর কষ্টে বুক চাপড়াবে..ভালোবাসা মনে করে না.
..আরো বেশি নিরাপত্তা পেলে সে সেখানেই যাবে..
ট্যালেন্টেডরা যে সংসার পারে না তা নয়...মেয়ে মানুষকে আল্লাহ বানিয়েছেই সাংসারিক প্রানী করে..প্রতিটা মেয়েই পারে...শুধু আরজি হলো, আপনি পুরুষ মানুষ বলে আরেকটা মেয়ের চোখে নিজের সপ্ন একে দিবেন না..তাকে স্বপ্ন দেখতে দেন..তার জগৎ একটা স্মার্ট ফোন হাতে চার দেয়ালে আটকে দিবেন না..অন্যায় ছাড়া সর্বাঙ্গিন সাপোর্ট করেন...মন মানষিকতা বড় করেন...একথা বলতে সত্যিই লজ্জা নাই যে সমাজের কান্ডারী আপনারাই.....আর যদি না পারেন তো এসব অাধপাগল মেয়েদের বিয়ে করে উদ্ধার করবেন না...
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১৮