স্বীকারোক্তি
সাহস করে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারিনা
তোমার মত আমিও তোমাকে যা বলেছি
তা সত্যি ছিল শতভাগ।
যেভাবে দিন যায় যাচ্ছিল ভালোই,
একা থেকে থেকে কারো কাছে থাকা
হাতের মুঠোতে কারও আঙুলের মৃদু সঞ্চারণ
খুব যে বেশী ভাবনায় এসেছে তাও নয়;
কিন্তু যেদিন শুনলাম আমার সাময়িক স্বেচ্ছা অন্তর্ধানে
তোমার চোখে জল
সেদিন থেকেই বুকের মধ্যে কাঁপন অনুভব করি আমি;
তারপর থেকেই তোমাকে ছুঁয়ে দেখার, স্পর্শ করে
পাশাপাশি হেঁটে যাওয়ার ইচ্ছে
আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায় সারাক্ষণ।
অনেক দ্বিধা-সংকোচে তোমাকে যখন ফোন দিলাম
কাঁপাকাঁপা তোমার সেই কন্ঠ, গোঙানীর মত অথচ দৃঢ় প্রত্যয়ের
'তুমি একা একা কেমন করে দেখে রাখবে তোমাকে!
আমরা যখন কাছাকাছি থাকবো, একসাথে থাকবো
আমরা শুধু নিজেদের জন্য বাঁচব
লোকে স্বার্থপর কিংবা যা বলে বলুক'।
তুমি মায়ের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলেছ অনেকবার,
এটা হৃদয় থেকে উৎসারিত এমন তাগিদ যা বলে দিতে হয়না।
অনেকদিন পর মায়ের সাথে কথা হল আজ,
ব্যক্তিগত অনেক প্রশ্নেরই সদুত্তর নেই আমার কাছে;
দু'প্রান্তের নীরবতা ভেদ করে কিছুক্ষণ পরে মাকে যখন বললাম
'তোমার শরীর ভাল যাচ্ছেনা ইদানিং- খুববেশী শুনছি এসব,
নিশ্চয় খাওয়াদাওয়া ঠিকমত করনা'।
মা বললেন 'ভাল থাকার জন্য খাওয়াদাওয়াই সব নারে বাপ';
তারপর কিচ্ছুক্ষণ নীরবতা,
আমি মায়ের চোখের জলের ঘ্রাণ পাই;
ওপাশ থেকে টেলিফোনের লাইন কেটে যায়।
ঐদিনও ঠিক এমনি তোমার লাইনও কেটে গিয়েছিল;
ভালবাসায় মৌনতা যতটুকু ছুঁয়ে যায় হৃদয়
হয়ত অতটুকু ছোঁয়না কথোপকথন।
আমার বোধের মানচিত্র থেকে সভ্যতার বুলি খসে পড়ে
তোমার জন্য সামান্য স্বার্থপরতায়
কোন লাবন্যই হারাবেনা এই সবুজ অরণ্য
এই বোধ থেকেই তোমার দিকে হাত বাড়িয়েছি
অনেকবার উচ্চারিত শব্দটাই নিখাঁদ মমতায় বল,
বল 'ভালবাসি'।
ভালবাসার জন্য কতটুকু 'স্বার্থপর' হওয়া যায়
জানুক এই বিশ্বচরাচর।
১৫ই অক্টোবর ২০১৮
যুক্তরাজ্য।