পাত্র পক্ষ গেছে পাত্রী দেখতে।
পাত্র-পাত্রীর দেখাদেখি হলো,
টুকটাক কথাবার্তাও। দুজন দুজনকে
পছন্দও করলো। উভয় পরিবারের
কোনো সমস্যাও নেই, দুটি পরিবারই
সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার।
আর্থিকভাবে দুটি পরিবারই স্বচ্ছল।
তো, আদর-আপ্যায়ন এর একপর্যায়ে মূল
কথা শুরু হলো। আমাদের সমাজে
এখনো যা হয় আর কি! উভয় পক্ষের
আলোচনা সংক্ষেপ। পাত্রের বড়
মামা কথা শুরু করলেন।
-দেখুন, "মেয়ে মাশাল্লাহ ছেলে
এবং আমাদের পছন্দ হয়েছে। মেয়ে
সুন্দরী, শিক্ষিত, গুনী, সমাজে
আপনারাও প্রতিষ্ঠিত পরিবার।
আমি কোনো সমস্যা দেখিনা,
ছেলেও মাশাল্লাহ লাখে এক!
আপনারা তো জানেন ছেলের
বংশের কত নাম ডাক, শিক্ষিত গুনী
ছেলে। খারাপ কোনো অভ্যাসও
নেই আমাদের ছেলের। তো কথা
হচ্ছে.. আমরা কিন্তু শিক্ষিত,
সম্মানীত পরিবার। যৌতুক ফৌতুক
ঐসবের কথা চিন্তাও করবেন না,
আমাদের কোনো দাবী-দাওয়াও
নেই।"
কথা শুনে মেয়ে অভিভাবক তো
মহাখুশি!
মেয়ের বাবা বললেন তাহলে তো
কোনো সমস্যাও নেই বেয়াই
সাহেব, তাহলে আমরা বিয়ের দিন
তারিখ ঠিক করে নিই?
ছেলের বড় মামা আবার বলতে শুরু
করলেন:
- তা তো অবশ্যই, তাতো অবশ্যই ।
"কিন্তু কথা হচ্ছে এটা, মেয়ে নতুন
বাড়িতে যাবে, পুরোনো পালঙ্কে
কি আর ঘুমোতে পারবে, দেখতে
কেমন খারাপ দেখা যায় না! একটা
নতুন পালঙ্ক তো দরকার.. কি বলেন?
মেয়ের জন্যই তো! আর মেয়ের প্রায়
সাজগুজের তো দরকার হতে পারে,
তাই একটা ড্রেসিং টেবিল তো
দিতেই হবে! মেয়ে নতুন বাড়িতে
যাবে, পোশাক-আশাক রাখার জন্য
তো একটা আলমারি অবশ্যই দরকার,
সাথে ওয়াডরোবও! বাংলাদেশে
গ্রীষ্মকালে যে হারে গরম পরে,
একটা ফ্রিজে কি আর হয়! দিয়েন
একটা ফ্রিজও দিয়েন! আর ঘরে
মেয়ে দিনে প্রায় একা একা
থাকবে, বিনোদনেরও তো একটা
ব্যাপার স্যাপার আছে, নাকি। এখন
আগের জমানার টেলিভিশন গুলো
কি আর চলে; কি বলে যে... এলইডি বড়
কতগুলো টেলিভিশন আছে না, ঐটাও
একটা দিয়েন! এইসব আবার যৌতুক
ভাববেননা বেয়ান সাহেব, সব তো
মেয়ের জন্যই! আমাদের ছেলের
মাশাল্লাহ সব আছে! তয় নতুন ব্যবসা
বানিজ্য চলতেছে, একটু টাকা
পয়সার ব্যাপার স্যাপার আছেনা!
একটু দেখবেন আর কি ছেলেকে!
বিয়েটা কিন্তু ভালো কোনো
কমিউনিটি সেন্টারে হতে হবে,
আর আমাদের তো আত্মীয়-স্বজন একটু
বেশি, এলাকাভিত্তিক সমাজও
মেইনটেইন করতে হয়.. তাই বরপক্ষের
মেহমান কিন্তু ২০০০জন খাওয়াতে
হবে! আর কাবিন এর টাকা ধরবেন
পাঁচলাখ। উসুল বাবদ তিন লাখ টাকা।
আমরা মেয়েকে তো কিছু
সর্ণালঙ্কার দিবো।"
...এদিকে পাত্রীর অভিভাবক আর
কি বলবে! এমন ভালো ছেলে কি
হাতছাড়া করা যায়! একটু এদিক
সেদিক করে মেনে নেয় আরকি।
মেয়ের ভালো ভবিষ্যৎ এর জন্য এটুকু
ত্যাগ নাহয় করলো!
এমন ঘটনা আমাদের সমাজে এখনো
বিদ্যমান। কি এলিট শ্রেনী, কি
হতদরিদ্র শ্রেনী, রকমভেদে এসব
প্রথা এই একবিংশ শতাব্দীতেও
চলছে।
-যৌতুক ( ইংরেজি : Dowry) হল কন্যার
বিবাহে পিতামাতার সম্পত্তির
হস্তান্তর প্রক্রিয়া। যৌতুক সাধারণত
কনে মূল্য ও স্ত্রীধন সংশ্লিষ্ট
ধারণার সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত। যদিও
কনে মূল্য বা কনে সেবা বর বা তার
পরিবার কর্তৃক কনের পিতামাতার
নিকট পরিশোধিত হয়, অর্থাৎ যৌতুক
বর বা তার পরিবারকে পদত্ত কনের
পরিবার কর্তৃক হস্তান্তরিত সম্পদ।
একইভাবে, যৌতুক বিয়ের সময় বরের
কর্তৃক নববধূর নির্দিষ্ট সম্পত্তি এবং
যা তার মালিকানা এবং
নিয়ন্ত্রণে থাকে।
.
.
১.সাধারণ অর্থে যৌতুক বলতে
বিয়ের সময় বরকে কনের অভিভাবক
কর্তৃক প্রদেয় অর্থ বা মূল্যবান
সামগ্রীকে বুঝায়। এছাড়া বর কনের
আত্মীয়, অভ্যাগত অতিথিরা
সাধারনত স্বেচ্ছায় নবদম্পতিকে
দিয়ে থাকেন যা তারা তাদের
নতুন সংসারে সুবিধামত ব্যবহার
করতে পারে। হিন্দু আইনে যৌতুককে
নারীর সম্পত্তির উৎস বলা হয়। এতে
তার নিরঙ্কুশ অধিকার স্বীকৃত। হিন্দু
সামাজে নারীরা পুরুষদের মতো
একই ভাবে সম্পত্তির
উত্তারিধকারী হতো না। তাই
অনেক আগে থেকেই হিন্দু সমাজে
নারীদেরকে বিয়ের সময়ে যৌতুক
দেবার প্রচলন ছিল। কালক্রমে তা
বিয়ের পণ হিসাবে আভির্ভূত হয় যা
একসময় কনে পক্ষের জন্য এক কষ্টকর
রীতি হয়ে দাঁড়ায়।
২.১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধক আইন
অনুসারে ”প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে
যদি কোন পক্ষ অপর পক্ষকে বিয়ের
আগে-পরে-চলাকালীন যে কোন
সময় যে কোন সম্পদ বা মূল্যবান
জামানত হস্তান্তর করে বা করতে
সম্মত হয় সেটাই যৌতুক বলে বিবেচ্য
হবে।”
৩.তবে বিয়ের সাথে সরাসরি
সম্পর্কিত নন এমন কেউ ৫০০ টাকা বা
তার চেয়ে কম মূল্যমানের কোন বস্তু
উপহার হিসাবে কোন পক্ষকে
দিলে তা যৌতুক হিসাবে
বিবেচিত হবে না। তবে বিয়ের শর্ত
হিসাবে এই সমপরিমান কোন কিছু
আদান প্রদান করলে তা যৌতুক
হিসাবে বিবেচিত হবে। নারী ও
শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ অনুসারে
বিয়ে স্থির থাকার শর্ত হিসাবে
বা বিয়ের পণ হিসাবে প্রদত্ত অর্থ
বা প্রদান করা হবে এই মর্মে কোন
শর্ত যে কোন সম্পদকে যৌতুক
হিসাবে বিবেচিত হবে। তবে
মুসলিম সম্প্রদায়ের বিয়ের ক্ষেত্রে
বিয়ের মোহরানা যৌতুক হিসাবে
বিবেচিত হবে না। প্রচলিত আইনে
যৌতুক দেয়া বা নেয়া উভয়ই
শাস্তীযোগ্য অপরাধ হিসাবে
বিবেচনা করা হয়েছে। অপরাধ
প্রমানিত হলে এক থেকে পাঁচ বছর
পযন্ত জেল বা জরিমানা অথবা উভয়
দন্ড হতে পারে। যৌতুক দাবী করার
জন্যও একই সাজা হতে পারে।
৪.বাংলাদেশের সমাজে
যৌতুকের জন্য নারীর প্রতি অসম্মান
ও অত্যাচারের অনেক ঘটনা ঘটে।
এমনকি যৌতুকের দাবীতে স্বামী
বা তার আত্মীয় স্বজনদের দ্বারা
অত্যাচারের পর হত্যাকান্ডের
ঘটনাও বিঢ়ল নয়।
.
.
ইসলাম ধর্মে যৌতুক : ইসলামে যৌতুক
প্রথার কোনো স্থান নেই। নারী
নিগ্রহের এ প্রথা ইসলামী
বিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম
নারীকে মর্যাদার আসন দিয়েছে।
বিয়ের সময় স্ত্রীর কাছ থেকে
যৌতুক নেয়া নয় বরং স্ত্রীকে মোহর
দেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আদেশ প্রদান
করেছে ইসলাম। পবিত্র কোরানের
#সুরা_নিসার ৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ
করা হয়েছে, ‘তোমরা নারীদের
তাদের মোহর, স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে
প্রদান করবে।’ ইসলাম শুধু যৌতুক প্রথার
বিরোধীই নয়, বিয়েশাদির
ক্ষেত্রে সব ধরনের অপচয়ের
বিপক্ষে। রাসুল (সা.) ইরশাদ
করেছেন, সেই বিয়েই সর্বাধিক
বরকতময়, যে বিয়েতে ব্যয় খুব
সামান্যই হয়। রাসুল (সা.) নিজে
বিয়ে করেছেন সাধারণভাবে,
নিজের প্রিয় কন্যা হজরত ফাতেমা
(রা.)- কে বিয়ে দিয়েছেন
একইভাবে। বিয়েতে অপব্যয় পাত্র-
পাত্রীর পরিবারের জন্য কষ্টকর
পরিণতি ডেকে আনে। সামাজিক
সম্মান রক্ষার অজুহাতে অনেকে
বিয়েতে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় করে
অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন
হন। যা ইসলাম কোনোভাবেই
অনুমোদন করে না। যৌতুককে শোষণ
এবং নারী নিগ্রহের হাতিয়ার
হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যৌতুক
আদায়ের জন্য স্ত্রীর ওপর দৈহিক
নির্যাতন চালানো এমনকি হত্যার
ঘটনাও ঘটে। অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে
এ ধরনের অমানবিক আচরণ সম্পূর্ণ অবৈধ।
রাসুল (সা.)-এর সময় কিংবা
পরবর্তীতে ইসলামী সমাজে কখনো
যৌতুক চালু ছিল বলে কোনো প্রমাণ
পাওয়া যায় না। এ বিধান কোরান-
হাদিসের পরিপন্থী বিধায় তা
বর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের
একান্ত কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত।
পবিত্র কোরানে অপরের সম্পদ
অন্যায়ভাবে ভোগ করার
ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করা হয়েছে। বিবাহযোগ্য মেয়ের
অভিভাবকরা তাদের মেয়ের
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে যৌতুক
দিতে বাধ্য হন। যারা যৌতুক নেন
তারা অন্যায়ভাবে এ অর্থ বা সম্পদ
নেন। এটি অবৈধ এবং
সুনিশ্চিতভাবে গুনাহের কাজ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে যৌতুকের
মতো গর্হিত ও নিন্দিত পথ থেকে
দূরে থাকার তৌফিক দান করুন।
.
.
-যৌতুক দেয়া-নেয়া উভয়ই আইনের
চোখে সমান অপরাধ। যৌতুক নেয়া
শাস্তিযোগ্য অপরাধ যা প্রমাণিত
হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড
হতে পারে। যৌতুক আদায়ের জন্য
নির্যাতন করলে বা স্ত্র্রীর মৃত্যু
ঘটালে সর্বোচ্চ শাস্তি, কিছু
সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল,
স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্যাতিত
নারীদের জরুরী স্বাস্থ্যসেবা
দিয়ে থাকে। যেমন: ইউনিয়ন স্বাস্থ্য
ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যাণ
কেন্দ্র জেলা হাসপাতাল,
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল,
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার
(বিভাগীয় পর্যায়ে মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে অবস্থিত)।
-বিভিন্ন বেসরকারী সেবা কেন্দ্র
যৌতুকের কারণে কোন নারী
নির্যাতিত হলে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা
গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ
মহিলা পরিষদের আইনগত সহায়তা
উপ-পরিষদতাদেরকে আইনগত পরামর্শ
ও সহায়তা প্রদান করে থাকেঃ
1. অভিযোগ পাওয়া মাত্র বাদীনি/
বিবাদীর নাম, ঠিকানা ও
অভিযোগ এর বিবরণী সহ একটি ফর্মে
অভিযোগ গ্রহণ।
2. উক্ত অভিযোগের সত্যতা
যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনে তদন্ত
করা হয়।
3. বিবাদীকে অভিযোগের
বিবরণী উল্লেখ করে তার বক্তব্য
পেশ করার জন্য অন্ততঃ পক্ষে ১/২
সপ্তাহ সময় দিয়ে চিঠি দেয়া হয়।
4. বিবাদীপক্ষ তাদের বক্তব্য মহিলা
পরিষদের আইন সহায়তা কমিটির
কাছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রদান
না করলে তাদের
কাছে তারপর আরো ২টি চিঠি
পাঠানো হয়।
5. বিবাদীপক্ষ তাদের বক্তব্য পেশ
করলে উভয় পক্ষের বক্তব্য তাদের
পরস্পরের উপস্থিতিতে শুনানীর জন্য
একটি তারিখ
নির্ধারণ করা হয়।
6. উক্ত নির্ধারিত তারিখে উভয়
পক্ষের বক্তব্য শুনে সালিসীর
মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসার
আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানো হয়।
7. সালিসের মাধ্যমে বিরোধ
মীমাংসায় ব্যর্থ হলে বাদীকে
আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ
দেয়া হয় এবং তাদেরকে
প্রয়োজনে আইনগত সহায়তা প্রদান
করা হয়। যৌতুক নিরোধে বেশ কিছু
প্রতিষ্ঠান আইনগত সেবা দিয়ে
থাকে। যেমন- ঠিকানা ঠিকানা
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ,
কেন্দ্রীয় কার্যালয়, সুফিয়া কামাল
ভবন, ১০ বি/১সেগুনবাগিচা,
ঢাকা-১০০০ ফোন -৭১৬৯৭০১, ফ্যাক্স
৮৮-০২-৯৫৬৩৫২৯, ই-মেইল: [email protected]
ওয়েব : http://www.mahilaparishad.org
মহিলা আইনজীবী সমিতি, ৪৮/৩,
মনিকো মিনা টাওয়ার, পশ্চিম
আগারগাঁও, ঢাকা, ফোন-৯১৪৩২৯৩ ই-
মেইল : http://www.bnwla.org.bd আইন ও
সালিশ কেন্দ্র, ৭/১৭, ব্লক-ই,
লালমাটিয়া, ঢাকা, ফোন-৮৩১৫৮৫১,
৮১২৬১৩৪, ৮১২৬১৩৭ ৮১২৬০৪৭, ই-মেইল :
[email protected] http:/ http://
www.askbd.org/web/ ব্লাস্ট,
১/১পায়নিয়ার রোড/ ওয়াইএমসিএ,
কাকরাইল, ঢাকা, ফোন-৮১৭১৮৫,
৯৩৪৯১২৬ আমাদের স্থানীয় কিছু
প্রতিষ্ঠান যৌতুক নিরোধে আইনগত
সহায়তা প্রদান করে থাকে। যেমন-
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/
মহিলা ও পুরুষ সদস্য পৌরসভার
চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কমিশনার
নিকটবর্তী থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা উপজেলা মহিলা বিষয়ক
কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক জেলা
জজের নেতৃত্বে আর্থিকভাবে
অসহায়দের সেবাদান কর্তৃপক্ষ
নিকটস্থ এনজিও/বেসরকারী
প্রতিষ্ঠান যারা এ বিষয়ে
কাজ করছেন মানবাধিকার সংগঠন
সমূহ মহিলা মন্ত্রণালয়ের আওতায়
মহিলা অধিদপ্তরের আইন সহায়তা
সেল। যৌতুক নেয়া ও দেয়ার
ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মহল যেমনঃ
সরকার, আইন- শৃঙ্খলারক্ষাকারী
বাহিনী ও বিচারবিভাগের উচিত
যৌতুক নিরোধ আইন সর্ম্পকে সবাইকে
জানানো ও ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষকে
আইনী সহায়তা প্রদান করতে হবে,
যৌতুক সর্ম্পকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য
গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা
চালাতে হবে। তরুণদের মধ্যে যৌতুক
বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে
তুলতে হবে, যৌতুক বিহীন বিয়েতে
তাদের উৎসাহিত করতে হবে,
তরুণীদের আত্মনির্ভরশীল
হয়ে গড়ে উঠতে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কার্যকর
অংশগ্রহণে জোরদার সামাজিক
আন্দোলন গড়ে তোলা। এজন্য
স্থানীয় এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন
সামাজিক-সংস্কৃতিক সংগঠন
গুলোকে এগিয়েআসতে হবে। নারী
ও পুরুষ উভয়কে সমভাবে শিক্ষিত
হওয়ার সুযোগ প্রদান এবং তাদের সম-
মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
নারীদের অর্থনৈতিকভাবে
স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার
পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
.
.
- আমার মতে যৌতুক হল একটা ব্যথার
দান। আর এই ব্যথার দান গ্রহন করে
কেউ কখনো সুখি হতে পারে না।
আমি মনে করি, যারা যৌতুক নেয়
বা যৌতুকের লালসা করে তারা
কৌতুকের পাত্র ছাড়া আর কিছু নয়।
তাদের অদৃশ্য ভয়ংকর শিং থাকতে
পারে, হিংস্র থাবা দেওয়ার মতো
বিষাক্ত নখের ছোবল থাকতে
পারে, লাল স্কষ্টেপে মোড়া
ককটেলের মতো ধংসের বিস্ফোরণ
দুটি চোখ থাকতে পারে, থাকতে
পারে আরও বেশি কিছু, তবে সে
আমার কাছে এসবের জন্যই কৌতুকের
বা হাসির পাত্র হয়ে গেছে। কারন
এটা একটা মানুষের রূপ হতে পারে
না। এই সব কিছু মানুষ হিসেবে তার
অযোগ্যতাকেই তুলে ধরে আমাদের
সবার সামনে। আসুন, আজ আমরা তরুণ
সমাজ রুখে দাঁড়াই নতুন স্লোগান
নিয়ে।
"যৌতুক নিয়ে কৌতুকের পাত্র হবো
না, কৌতুক করে কাউকে যৌতুক
নিতেও দিবো না"। আসুন, আমরা
যৌতুককে ঘৃণা করি আর
নিজেদেরকে রক্ষা করি। আসুন, এই
জঘন্য ঘৃণ্য শব্দটা আমাদের বাংলা
অভিধান থেকে, আমাদের সমাজ
থেকে একেবারেই তুলে দেই। তাই
চলুন, আমরা নতুন করে শুরু করি-"যৌতুক
নিয়ে নিজেকে ছোট করবো না,
আর যৌতুক দিয়ে প্রিয়জনকেও ছোট
করবো না"। আমাদের ধর্মে যৌতুক
নেই, আছে দেনমোহর। যা বিয়ের
সময় মেয়েদেরকেই দিতে হয়। কিন্তু
আমরা করি এর উল্টাটা। আমরা
আমাদের জীবনকে সুখি ও শান্তিময়
করে গড়ে তুলতে চাইলে অবশ্যই
যৌতুক নিবোও না দিবোও না।
সূত্র: ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:১২