(জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির কাছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট-এর পক্ষ থেকে প্রদত্ত খোলা চিঠির বক্তব্য সামান্য সংশোধিত আকারে দেওয়া হল)
সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে। অধিভুক্ত কলেজসমূহকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভাগীয় পর্যায়ে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অধিভুক্ত করে একে গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার জন্য মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজর্বল ইসলামকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করেছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে যে কলেজগুলো রয়েছে সেগুলো আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অধিভুক্ত ছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে কলেজগুলির শিৰার সার্বিক কার্যক্রমে নানা সংকট সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও তাদের নিজস্ব কার্যক্রমের বাইরে অনেকগুলি কলেজের শিৰা কার্যক্রম, পরীৰা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করতে হিমশিম খায়। সংকট মোকাবেলায় সবগুলি কলেজকে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের সাথে অধিভুক্ত করার জন্য ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন আমাদের সংগঠনের পৰ থেকে বলা হয়েছিল যে, কলেজগুলির শিৰা কার্যক্রমে সৃষ্ট সংকটের মূল কারণ খুঁজে বের করে যথাযথ পদৰেপ না নিয়ে শুধুমাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিয়ে গেলেই সমস্যার সমাধান হবে না বরং সংকট প্রকট হবে। এতগুলি কলেজকে অধিভুক্ত করে এটি শিৰা প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী একটি বোর্ড ভিন্ন কিছু হবে না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কিন্তু এ বিষয়গুলিকে আমলে না নিয়ে সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেই সমাধানের কাজ সেরে ফেলে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের ভবিষ্যদ্বাণী আজ সত্যে পরিণত হয়েছে। সারাদেশে কলেজ পর্যায়ে অনার্স, ডিগ্রি এবং মাস্টার্স প্রোগ্রাম সুচারুরূপে পরিচালনা করা এবং উপযুক্ত ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, সারাদেশের কলেজগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুর্ব হয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্বেচ্চাচারী, স্বৈরাচারী, অবৈধ, নিয়ম-বিধি লংঘনকারী একটি বোর্ডে পরিণত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আবারও সরকার মূল সমস্যাকে আড়ালে রেখে শুধুমাত্র বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমেই সমাধানের পথ খুঁজতে চাচ্ছে। আমরা মনে করি এভাবে দেশের উচ্চশিৰার প্রধান ৰেত্রকে আরও বিপদের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটের দু’টি দিক আছে। তা হলো- একাডেমিক ও প্রশাসনিক। সবদিক থেকেই এই প্রতিষ্ঠানটি স্থবির হয়ে গেছে। তবে বর্তমানে যে দিকটি নিয়ে খুবই আলোচনা হচ্ছে তা প্রধানত প্রশাসনিক, একাডেমিক দিক নিয়ে তেমন তৎপরতা নেই। বিশেষত কলেজসমূহের শিৰা পরিচালনার ৰেত্রে মারাত্মক সংকট নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই। এৰেত্রে প্রধান সংকটগুলো হলো - ভয়াবহ শিৰক সংকট, স্বতন্ত্র পরীৰা হল না থাকা ও ক্লাসর্বমের ব্যাপক সংকটের ফলে বছরে মাত্র ৩ মাস ক্লাস হওয়া, লাইব্রেরি-সেমিনারে সিলেবাসভিত্তিক বই না থাকা, অধিকাংশ কলেজে আবাসন ব্যবস্থা না থাকাসহ উচ্চশিৰা ৰেত্রে আনুষঙ্গিক অপরিহার্য অবকাঠামোর ব্যাপক সংকট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত আয়োজন দেশের অধিকাংশ কলেজে নেই। এ সমস্ত সংকটের ফলাফল হিসেবেই কলেজগুলির শিৰাব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। কলেজসমূহের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত আয়োজন নিশ্চিত করতে না পারলে এ সংকটের সমাধান কখনোই সম্ভব নয়। বিশেষ করে অতিদ্র্বত স্বতন্ত্র পরীৰাহল নির্মাণ ও পর্যাপ্ত শিৰক নিয়োগ ও ক্লাসর্বম নির্মাণ করা অত্যাবশ্যক। এৰেত্রে আমাদের সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ১৯৯৯ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহের সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত শিৰক নিয়োগ, স্বতন্ত্র পরীৰাহল নির্মাণ ও ক্লাসর্বম নির্মাণসহ ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের লৰ্যে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় কলেজভিত্তিক আন্দোলনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারকলিপি পেশ, প্রায় ১ লৰ শিৰার্থীর স্বাক্ষর সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, সারাদেশের সংশিৱষ্ট শিৰার্থী-শিৰক-অভিভাবকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে নিয়ে ২০০৩ সালের ২ এপ্রিল ঢাকার পল্টন ময়দানে কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়, সারাদেশের কলেজসমূহে ২০০৪ ও ২০০৫ সালের জুলাই মাসে ব্যাপক শিৰার্থী ও শিৰকদের সমর্থনে ও অংশগ্রহণে দু’টি সফল ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রশাসনিক দিক থেকে অব্যবস্থাপনা, খামখেয়ালিপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি ও দলীয়করণের যে সমস্যা তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত প্রকট হলেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একেবারে আলাদা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে স্বায়ত্তশাসনের ধারণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাধাহীন ও নিয়ন্ত্রণমুক্ত গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন পরিবেশ ছাড়া উচ্চশিৰা ও গবেষণা সম্ভব নয়। এৰেত্রে একাডেমিকভাবে স্বাধীনতা যেমন জর্বরি, ঠিক তেমনি প্রশাসনিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত সমান গুর্বত্বপূর্ণ। কিন্তু, বাংলাদেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগের বিধিমালা থাকলেও আমরা দেখেছি তা লঙ্ঘন করে প্রত্যেকটি সরকার লাগামহীনভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দলীয়করণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদ উপাচার্য থেকে শুর্ব করে ঝাড়ুদার পর্যন্ত প্রত্যেকটি পদে সরকারি দলের লোকদের নিয়োগ করা হয়। দলীয় ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিৰার কী হাল হয় তা আমরা বিগত দিনে বিশেষ করে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে নিয়োগকৃত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের কর্মকাে- স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ বাস্তবতা থেকে ভিন্ন হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না বরং এখানে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। শিৰা ও গবেষণায় যোগ্যতা যা-ই থাক সরকারি দল বা সরকারের প্রতি আনুগত্যের মাপে অনেকেই এখানে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা সরকার বা দলীয় চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে গত ১৬ বছরে অসংখ্য অযোগ্য লোককে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এখানে যারা প্রভাষক থেকে শুর্ব করে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত আছেন তারা কাদের পড়াচ্ছেন বা তারা কি গবেষণা করছেন? খতিয়ে দেখলে পাওয়া যাবে যে এদের অধিকাংশেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিৰক হিসেবে নিয়োগ পাবার যোগ্যতা নেই। কিন্তু, তারা শর্তানুযায়ী কোন ধরনের গবেষণা ও প্রকাশনা ছাড়াই বছরের পর বছর পদোন্নতি পেয়ে অধ্যাপক পর্যন্ত হয়ে গেছেন। এই অসাধু ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন না করে অনিয়ম ও দুর্নীতি করবে এটাইতো স্বাভাবিক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোর ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। বছরে একবার পরিদর্শন, সার্বক্ষণিক মনিটরিং, কলেজের বার্ষিক রিপোর্ট গ্রহণ-প্রকাশ ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আইনেই উলেৱখ রয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তদন্ত আর কলেজের অনুমোদন প্রদানের উদ্দেশ্যে জীবনে একবার পরিদর্শন ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের পা কোন কলেজে একাধিকবার পড়েছে সে নজির নেই। তার ফলে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনিয়ম-দুর্নীতি ও দলীয়করণের খপ্পরে পড়েছে। আর এ থেকে মুক্ত করতে হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে দলীয়করণমুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে হবে।
তবে উচ্চশিৰার ৰেত্রে প্রায় ১৮ শতাধিক কলেজ অধিভুক্ত করে কার্যক্রম পরিচালনার নজির বিশ্বের কোন বিশ্ববিদ্যালয়েরই নেই। এই নজিরবিহীন কার্যক্রম পরিচালনার চাপেও এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এই চাপ কমাতে কলেজগুলোর বিকেন্দ্রিকরণও সময়ের দাবি। কিন্তু এৰেত্রে প্রায় ১৮ শতাধিক কলেজকে শুধুমাত্র বিভাগীয় পর্যায়ে ৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছেড়ে দেওয়ার খসড়া প্রস্তাবের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ের যথেষ্ঠ অবকাশ রয়েছে। কারণ এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোনটি নতুন এবং খণ্ডিত বিশ্ববিদ্যালয়। যেমন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাবিপ্রবি-তে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও বাণিজ্যের বিষয় থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় হিসেব মৌলিক সকল বিষয় এখানে নেই। দেশের পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহীসহ অনেক কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে পড়ানো হয়। এৰেত্রে কোন যোগ্যতায় এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ঐ সমস্ত বিষয়ে নির্দেশনা দেবে? আর আয়তন ও অবকাঠামোর দিক থেকেও দেশের কোন কোন বড় কলেজ এদের সমকৰ বা কোনটির থেকে বড়। ফলে বিষয় এবং আয়োজনের দিক থেকে একসাথে অনেক কলেজকে অধিভুক্ত করে পরিচালনা করার ৰেত্রে এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাটতি স্পষ্ট। অন্যদিকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনেক কলেজ ও শিৰাপ্রতিষ্ঠান অধিভুক্ত হয়ে আছে। বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানেই ৬৮টি শিৰা প্রতিষ্ঠান অধিভুক্ত আছে এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও কম সংকটে জর্জরিত নয়। ফলে এগুলির সাথে অবস্থান অনুসারে খুব কমসংখ্যক কলেজকেই অধিভুক্ত করা উচিৎ। মানসম্মত ও গবেষণাপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বেশিরভাগেরই অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা অনেক কম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা মাত্র ৩১ টি। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা মাত্র ৩৮ টি। উচ্চশিৰার মান বজায় রাখতে বিশ্বের ভাল ভাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কমসংখ্যক কলেজ অধিভুক্ত করে এবং কলেজসমূহের পরিচালনার ৰেত্রে কলেজের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো নিশ্চিত করে। তাই সবগুলো কলেজকে অধিভুক্ত করতে আরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন রয়েছে।
উচ্চশিৰার সংকট নিরসন ও দেশের উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ সকল শিৰার্থীর জন্য উচ্চশিৰার সুযোগ অবারিত করার জন্য আমাদের সংগঠনের পৰ থেকে দীর্ঘদিন যাবত জেলায় জেলায় স্বায়ত্তশাসিত পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দাবি নিয়ে আন্দোলন চলছে। আমরা মনে করি জেলার সকল কলেজকে এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করলেই কলেজগুলোর জন্য তা সর্বোত্তম সমাধান হবে। তবে সংকটের দ্র্বত ও আপাত সমাধানের লৰ্যে দেশের পুরাতন ও বড় বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী কলেজকে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা উচিৎ। এৰেত্রে বেশ কয়েকটি কলেজের নাম উলেৱখ করা যায়। যেমন: ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বিএম কলেজ, আনন্দমোহন কলেজ, কারমাইকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, করটিয়া সা’দত কলেজ, রাজেন্দ্র কলেজ, আজিজুল হক কলেজ, বিএল কলেজ, এডওয়ার্ড কলেজ, এমসি কলেজ ইত্যাদি। পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিসহ নতুন এসমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কলেজসমূহকে অধিভুক্ত করতে হবে। কারণ, এদের প্রত্যেকটির বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হওয়ার সকল সম্ভাবনাই বিদ্যমান আছে এবং শিৰার্থী ও জনগণের দাবিও দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশে প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ কয়েক লাখ শিৰার্থীর উচ্চশিৰা গ্রহণের জন্য এ কলেজগুলিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা প্রয়োজন। দেশে উচ্চশিৰার ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা মিটাতেও এ সিদ্ধান্তের বিকল্প নেই। এই কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা একটু কঠিন কাজ হলেও অবাস্তব বা অসম্ভব নয়। বরং আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় এভাবেই এগুতে হবে।
তাই পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর চাপ কমিয়ে এবং টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজসমূহকে অধিভুক্ত না করে নতুন পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে তার অধীনে কলেজগুলিকে অধিভুক্ত করে সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া বাস্তবসম্মত হবে বলে আমরা মনে করি। একইসাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করতে হলে এর অধ্যাদেশ সম্পূর্ণ সংশোধন করে সরকারের হস্তৰেপমুক্ত পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০০৯ রাত ২:৩৪