আছমত আলী পালোয়ান। বয়স ৯০। আমার দাদা- রেকায়াত আলীর ( ১০৮ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন) একজন জুনিয়র বন্ধু। পেশাগতভাবে তিনি ইউনিয়ন ভুমি অফিসে ছোটখাটো চাকুরী করতেন। সেই হিসেবে কোথায় কার কতটুকু জমি আছে তা আছমত আলীর মুখস্থ। পেশাগত জিবনে তিনি খুব দায়িত্ববান ছিলেন।
আছমত আলীকে আমি সর্বদা হাসি খুসি দেখেছি। খুব সাধা-মাটা ভাবে জীবন যাপন করেন। তার চাহিদা খুবই কম। ছবিতে তিনি ছোট পরিসরের একটা বিয়েতে বিনা পয়সায় রান্না করছেন( ছবিঃ ঈদুল আযহা ২০১৪)। তিনি খিচুড়ি খুব ভাল রাঁধেন। আজ থেকে ২৫ বছর পুরবে বিদ্যানন্দপুর ব্রিজ এর দক্ষিন পাশে (তখন ব্রিজ ছিলনা) নদীর পারে বইশাখ মাসের গরমে ব্রিস্টির জন্য দুয়া অনুস্থান আয়োজন করা হতো। এই অনুস্থানে শিন্নি খাওয়ানো হতো কলা পাতায় করে। আর এই পুরা অনুস্থান আয়োজন করতেন আছমত আলী। পালোয়ান হিসেবে আছমত আলী হারাইন এর দিনে শিয়াল মারবার নেত্রিত্ত দিতেন!!! এছাড়াও তিনি সখ করে জালের নৌকা নিয়ে নদীতে শখ করে মাছ ধরতে যান তার জুনিয়রদের নিয়ে। যেমনটা আমার দাদা রেকায়াত আলী এক সময় করতেন। আছমত আলী আমার দাদার শখের মাছ ধরার নৌকায় মাছ ধরতে যেতেন তার সহযোগী হিসেবে। এই মাছ কখনো বিক্রি করা হয় না, সবাই মিলে ভাগকরে নেয়া হয়।
আছমত আলী আর একটি বিশেষ কাজ করেন। তা হল মানুষ মারা গেলে লাশ গোসল করানো, কবর তৈরি করা ও দাফন করা। আবার মরহুমের নামে চল্লিশা অনুস্থানের আয়োজন আছমত আলীকে ছাড়া কল্পনা করা জায় না। তবে আছমত আলী জীবিত অবস্থায় নিজেই তার নামে খাবারের ও দুয়া অনুস্থানের আয়োজন করেছেন। প্রক্রিতপক্ষে এটাই ইসলামের নিয়ম।
বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে আছমত আলীর মত সাদা মনের মানুষ বিরল। আল্লাহর নিকট দুয়া করি আছমত আলী সুস্থ ভাবে কাজের মধ্যে বাকি জীবন বেচে থাকুক এবং পরকালে জান্নাত লাভ করুক। আমীন!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৬