ভালোবাসি তোমায় অনেক বেশি ভালোবাসি। আরে আমরা তো বিয়ে করবোই। এখন এগুলা করলে কিছু হবে না, আর তুমি তো শুধু আমারই। সহজ সরল সাদা সিধে মেয়ে এই কথা গুলো বিশ্বাস করে যদি নিজের সব কিছু বিলিয়ে দেয় বিয়ের আগেই, তাহলে সেই মেয়েই নিজের সব কিছু হারিয়ে ফেললো। অতঃপর বর্ত্তমান যুগের প্রেমিক তার প্রেমিকা কে গ্রাস করতে একটুও দেরি করলো না। কিছুদিন পর নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রেমিক তার প্রেমিকার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে প্রেমিকা কে চরিত্রহীন বানিয়ে দিলো। কি আজব এই দুনিয়া!! তারপর লোকে বলতে লাগলো ঐ মেয়ের বিয়ে হবে না, ঐ মেয়ের চরিত্র ভালো না, ঐ মেয়ে চরিত্রহীন। কে বলে এইসব? যে তার প্রেমিকার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে সেই বলে এইসব! হ্যা এটাই সত্য। আমাদের মন মানসিকতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমরা যখন চরিত্র কি এটাই জানি না তখন অন্য কাউকে চরিত্রহীন বলা আমাদের মোটেও সোভা পায়না।
নম্রতা, ভদ্রতা, সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, শালীনতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, মানুষের প্রতি সম্মানবোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, মিতব্যয়িতা ইত্যাদি গুণাবলী যে ব্যক্তির মধ্যে থাকবে সেই ব্যক্তিই সুন্দর, ভালো এবং সৎচরিত্রের অধিকারী।
আবার, মিথ্যা বলা, প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা, লোভ লালসা, পরনিন্দা, ওয়াদা ভঙ্গ এসব বৈশিষ্ট্য যাদের মাঝে বিদ্যমান তারাই অসৎচরিত্রের অধিকারী এবং চরিত্রহীন।
আচ্ছা তাহলে কি শুধু যৌনতাই চরিত্রহীন বানায়? আর বাকি গুলো নয়? বিশ্বাস শব্দ টা সৎচরিত্রের একটা অংশ আর মেয়েটা বিশ্বাস করেই তার সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছিল ছেলেটার কাছে, কিন্তু ছেলেটা তার কথা রাখেনি। তাহলে চরিত্রহীন কে হলো? ছেলেটা নাকি মেয়েটা?
হ্যা আমি মানছি মেয়েটার ভুলছিল যে, সে বিয়ের আগে যৌনসম্পর্ক করতে গেলো কেন? কিন্তু তা না করে উপায়ও ছিল না। মেয়েটার মানুষ নামের অমানুষ প্রেমিক এমনটা করতে বাধ্য করেছে। তার প্রেমিক যদি না চাইতো, তাহলে কি সে আদৌ যৌনসম্পর্ক করতে পারতো? পারতো না। মেয়েটা কি নিজ থেকে বলেছিল যে আসো আমার সাথে যৌনসম্পর্ক করো? না বলেনি। এখানে প্রেমিক চরিত্রহীন প্রেমিকা নয়।
আবার দেখা যায়, ভালো ছেলেরা খারাপ মেয়ের পাল্লায় পড়ে। খারাপ ছেলে যেমন আছে তেমনি খারাপ মেয়েও আছে। খারাপ মেয়েদের বেলায়ও একই কাহিনী ঘটে। ছেলে ভালো হলেও ভালো থাকতে পারেনা। কাউকে ভালোবাসার আগে যাচাই করা খুব দরকার যে, সে ভালো না খারাপ।
আমার মাথা কাজ করেনা। দূর থেকে কি ভালোবাসা যায়না? ভালোবাসতে কি স্পর্শ করতে হয়? আমার কাছে এসব ভালোবাসা মনে হয়না এসব নোংরামি ছাড়া আর কিছুই নয়। যেদিন থেকে বিয়ের আগপর্যন্ত দূর থেকে ভালোবাসতে পারবে সকল নারী-পুরুষ, সেদিন থেকে একটি শান্তিময় সমাজ গঠিত হবে।
আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। আমরা যেদিন ভাবতে শিখবো, শুধু যৌনতাই চরিত্রহীন বানায় না। সেদিন থেকে এক সুন্দর পৃথিবী তৈরি হবে। যদি কোন মেয়ে কোন ছেলের কাছে প্রতারিত হয়, বিশেষ করে যৌনতা। তাই বলে সে চরিত্রহীন হয়না। চরিত্রহীন তো সেই ছেলে যে, বিয়ের আগেই তার প্রেমিকার সাথে যৌনসম্পর্ক করেছে।
আমাদের সমাজে বেশিরভাগ প্রেমিক নামের কলঙ্ক বাস করে। তারা ভালোবাসায় খোঁজে যৌনতা। ভালবাসা কখনো যৌনতা হতে পারে না। ভালোবাসা ভালোবাসাই। যৌনতা বিয়ের পরের একটা পর্ব বিয়ের আগে নয়। তাই আসুন নারী কে সম্মান করতে শিখি নারীর সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করি তাহলেই সুন্দর সমাজ গঠিত হবে।
রি-পোস্ট
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:২০