১। কিন্ডারগার্টেনে পড়া ছোট্ট রবিনকে হোমওয়ার্ক হিসেবে কিছু অঙ্ক দিয়েছেন ম্যাডাম। ছোট্ট রবিন ড্রয়িংরূমে বাবার কাছে গিয়ে আবদার করে, "আমার হোমওয়ার্কের অঙ্কগুলো করে দাও না, বাবা।"
খবরের কাগজ থেকে মুখ তুলে রবিনের বাবা বললেন, "অঙ্কগুলো তুমি বরং নিজেই করো, কারণ তোমার হোমওয়ার্ক আমি করে দিলে ঠিক হবে না।"
বাবার চেয়ারের হাতল ধরে, কাঁধ নাড়াতে নাড়াতে রবিন বলে, "কিন্তু তুমি তো চেষ্টা করে দেখতে পার।"
২। তিন ব্লন্ড রেস্টুরেন্টে গেল তাদের সাফল্য উদযাপন করতে। খুশিতে ঝলমল করছে তাদের চেহারা, পান-ভোজনের সাথে সাথে খুব হাসাহাসি করছে সবাই।
"সম্মানিত ভদ্র মহিলাগণ, কী নিয়ে আপনারা এত হাসাহাসি করছেন, জানতে খুব ইচ্ছে করছে আমার। " স্মিত হেসে তাদের কাছে এসে দাঁড়ায় বারটেন্ডার।
"ওহ, অবশ্যই!" উত্তর দেয় এক ব্লন্ড।" এই মাত্র গাণিতিক এই পাজলটার সমাধান করলাম আমরা। এটা করতে আমাদের সময় লেগেছে মাত্র এক মাস, যদিও পাজল বক্সের গায়ে লেখা ছিল '৬ থেকে ৯ বছর!"
৩। সম্ভাবনাময় এক তরুণ পিএইচডি স্টুডেন্ট ফাইন্যাল পরীক্ষায় তার থিসিস পেপার প্রেজেন্ট করছে। পদার্থবিদ্যার একটা তত্ত্ব ধরে এগুতে এগুতে এক পর্যায়ে আবিষ্কার করল সে F = -MA প্রমাণ করে ফেলেছে।
নিজের কাজে স্টুডেন্ট খুব বিব্রত বোধ করতে লাগল। বিব্রত হলেন তার থিসিস সুপারভাইজর, বিব্রত হলেন পরীক্ষা কমিটির পর্যবেক্ষগণ। অপ্রস্তুতভাবে কাশতে কাশতে ছাত্র বললো, "পেছনে কোথাও ছোট্ট একটা ভুল করে এসেছি আমি!"
কমিটিতে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকা গণিতবিদ বললেন, " ইয়াংম্যান, ভুলটি তুমি হয় একবার করেছ, না হয় বিজোড় সংখ্যক বার করেছ।"
৪। কনফারেন্স বিরতিতে কৌতুক বলে আড্ডা দিচ্ছেন কতিপয় গণিতবিদ। নিজেদের কৌতুকগুলি গণিতবিদগণ এত ভালো জানেন যে প্রতিটি কৌতুকের জন্য তারা একটি করে সিরিয়াল নম্বর নির্ধারণ করে দিয়েছেন, এবং সময় বাঁচানোর জন্য সম্পূর্ণ কৌতুক না বলে কেবলমাত্র কৌতুকের সিরিয়াল নম্বরটি উচ্চারণ করেন তারা।
"৪৯৩," চিৎকার করে উঠলেন একজন পুরুষ গণিতবিদ। অন্যেরা এর সমর্থনে উচ্চ হাসিতে ফেটে পড়ে।
"৭২৪," চিৎকার করলেন একজন মহিলা গণিতবিদ। অন্যেরা এতেও প্রাণখুলে হাসতে থাকে।
"৫৮৯," চিৎকার দিলেন আরেক গণিতবিদ। অধিকাংশ গণিতবিদ তাতে মৃদু হাসলেন মাত্র। কিন্তু তরুণ এক গণিতবিদ হাসতে হাসতে মেঝেতে গড়াগড়ি খেতে লাগল, একেবারে হিস্টিরিয়াগ্রস্ত হয়ে গেল সে।
কৌতুককারী গণিতবিদ অবাক হয়ে তরুণের কাছে এগিয়ে এসে বলল, "জন, আমার কৌতুকে এত ভয়ঙ্কর মজার কী পেলে তুমি!"
তরুণ গণিতবিদ হাঁপাতে হাঁপাতে উত্তর দেয়, "এই কৌতুকটা আগে...আগে কখনো শুনিনি আমি!"
৫। কম্পিউটার সায়েন্সের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কমন প্রশ্ন দেয়া হলো: 2 টু দ্য পাওয়ার 2 সমান কতো?"
লেভেল ১, টার্ম ১-এর ছাত্র কোনো চিন্তা-ভাবনা না করেই বলে বসে, "4"।
লেভেল ২, টার্ম ১-এর ছাত্র উইন্ডোজের স্টার্টমেনু থেকে "রান" বাটন প্রেস করে calc লিখে উইন্ডোজের ক্যালকুলেটর অ্যাপ্লিকেশনটি বের করে হিসেব করে, তারপর বলে, "ঠিক 4"।
লেভেল ৩, টার্ম ১-এর ছাত্র ভিজ্যুয়াল বেসিকে একটি ক্যালকুলেটর বানায়, তারপর তাতে ইনপুট দিয়ে আউটপুট হিসেবে বলে, "4.00"।
লেভেল ৪, টার্ম ১-এর ছাত্র সি প্রোগ্রামিং-এ ১০০ লাইনের একটি প্রোগ্রাম লিখে, এটিডিবাগ করে, তারপর রান করে বলে, "4.0e+00"।
লেভেল ৪, টার্ম ২-এর ছাত্র এ ধরণের গাণিতিক হিসেব করার উপযোগী একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বানায়, সেটি ইনস্টল করে, তার উপর একটি প্রোগ্রম লিখে, এবং উত্তর দেয়, "এখানে তো ফলাফল আসছে 4, কিন্তু গতরাতে কুৎসিত বাগটা দূর হয়েছি কিনা সন্দেহ হচ্ছে।"
থিসিস ডিফেন্ড করতে যাওয়া ছাত্র বলে, "কী কুক্ষণেই না কম্পিউটারে পড়তে এসেছিলাম! পাগল স্যারদের পাল্লায় পড়ে কনস্ট্যান্ট মুখস্ত মুখস্ত করতে আর মাথার চুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে জীবন শেষ হয়ে গেল, কোনো আনন্দ-ফুর্তিই হলো না!"
৬। ৩ নং কৌতুকে উল্লেখিত কনফারেন্সেরই আরেকটি ঘটনা।
কৌতুকের পর কৌতুক বলা হচ্ছে, আর হাসির বন্যা বয়ে যাচ্ছে রূমে, কিন্তু উসখুস করছে তরুণ আরেক গণিতবিদ। বেচারা এই প্রথমবারের মতো কনফারেন্সে যোগ দিয়েছে, কৌতুকের এই সব ব্যাপার-স্যাপার সে জানে না। কিন্তু কেউ তাকে অসামাজিক ভাবুক, এটিও সে চায় না। এ ছাড়া এদের কৌতুক বলা খুব সহজ দেখে আড্ডায় যোগ দিতে তীব্র ইচ্ছা জাগল তার। ফলে মনে মনে একটি সংখ্যা স্থির করে এক সময় সোল্লাসে চিৎকার করে উঠল সে, "৭৭৭।"
অবাক হয়ে লক্ষ করল সে, একটুও হাসল না কেউ। বরং একেবারে পিনপতন নিরবতা নেমে আসল রূমে, আর মাঝে মাঝে অন্যদের বিদ্বেষ, ভর্তসনাপূর্ণ চাহনি, মন্তব্য ভেসে আসতে লাগল তার দিকে। কিছুক্ষণ পর বৃদ্ধ এক গণিতবিদ তার দিকে তাকিয়ে বলল, " দেখো, তোমার বয়স কম, কিন্তু এটা বুঝা উচিত, রূমে যখন সম্মানিত ভদ্রমহিলাগণ রয়েছেন, তখন তাদের সামনে আমরা ডার্টি জোকস বলি না।"
এটি ঠিক গণিতের কৌতুক না। আগের পর্বগুলির দুয়েকটি কৌতুকে একটু বেশি গণিতের ক্ষতিপূরণ হিসেবে:
৭।
দৃশ্য ১: বনের মধ্যে চমৎকার রৌদ্রোজ্জ্বল এক দিন। খরগোশটি তার নিজের গর্ত থেকে বের হয়ে কম্পিউটার চালু করে, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওপেন করে, টাইপ করতে লাগল। হাঁটতে বেরিয়ে খরগোশকে দেখে পা টিপে টিপে তার কাছে আসল এক শেয়াল।
শেয়াল: [থাবা বের করে ধূর্ত হাসি দিয়ে] কী করছিস তুই?
খরগোশ: থিসিস লিখছি আমার, আগামী পরশু জমা দিতে হবে।
শেয়াল: [তাচ্ছিল্যভরে] অ! তা কীসের থিসিস?
খরগোশ: ওহ, আমার থিসিসের বিষয় হচ্ছে "খরগোশরা কীভাবে শেয়ালদের খায়!"
[বিশাল নিরবতা নেমে আসে কথোপকথনে]
শেয়াল: লিখলেই হলো! গুলতানির আর জায়গা পাস না। যেকোনো গাধাও জানে খরগোশরা কখনো শেয়াল খায় না।
খরগোশ: অবশ্যই খায়। আমি প্রমাণ দেখাচ্ছি, এসো আমার সাথে ।
খরগোশ ও শেয়াল খরগোশের গুহায় ঢুকে যায়। কয়েক মিনিট পর শুধু খরগোশ ফিরে আসে, তারপর আগের মতো ওয়ার্ডে লিখতে থাকে।
দৃশ্য ২: একটু পর গুহার কাছে আসে নেকড়ে। খরগোশের লেখা দেখে খুব কৌতূহল জাগে তার।
নেকড়ে: কী লিখছিস রে?
খরগোশ: "খরগোশরা কীভাবে নেকড়ে খায়", তার উপর একটা থিসিস করছি।
নেকড়ে: [অট্টহাসিতে ফেটে পড়তে পড়তে] এ রকম রাবিশ একটা জিনিস নিশ্চয়ই পাবলিশ করার চিন্তা করছিস না তুই! নাকি চিন্তা করছিস?
খরগোশ: রাবিশ না, আমার সাথে এসে দেখে যাও।
দুজনে ঢুকে পড়ে খরগোশের গর্তে, এবং আগের মতোই শুধু খরগোশ ফিরে আসে খানিক পর, মন দেয় থিসিস লেখায়।
দৃশ্য ৩: খরগোশের গুহা। এক কোণায় দেখা যায় শেয়ালের হাড়ের স্তুপ পড়ে আছে, অন্য কোণায় নেকড়ের হাড়ের স্তুপ। আরেক কোণায় বিশালদেহী এক সিংহ বসে বসে দাঁত খিলাচ্ছে।
নৈতিক শিক্ষা: থিসিসের বিষয়বস্তু হিসেব তুমি কী নির্ধারণ করেছ, তা কোনো ব্যাপার নয়। তথ্য-উপাত্তের জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেছ, তাও কোনো ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপার হলো,তোমার থিসিস সুপারভাইজর কে?।