আপনি একজন মুসলমান। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়েন। অথবা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাড়িতে পড়েন । অথবা কখনো কখনো নামাজ পড়েন অথবা শুধু জুম্মার নামাজ নিয়মিত পড়েন অথবা নামাজ পড়েন না।
এই সব ধরনের মানুষই নিজেকে মুসলমান মনে করেন। প্রধানত এই কারনে যে আপনি একটি মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েছেন, তাই আপনি মুসলিম। আপনি আপনার ধর্ম বুঝে নেন নি। ধর্ম আপনাকে আপনা আপনি বেছে নিয়েছে। তাই বুঝে অথবা না বুঝে আপনি একজন মুসলিম।
আল্লাহতে বিশ্বাস করেন। মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী মানেন। আল্লাহ এবং রাসুল যা নির্দেশ করেছেন তা মেনে চলার পর, সেই ‘আবশ্যকীয়’ (ফরজ) প্রাথনা করার পর রাসুল সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম যে বাড়তি প্রার্থনা করেছেন তাঁর সেই ‘বাড়তি’ প্রার্থনাকে “সুন্নাহ” মনে করেন। এবং সেই “সুন্নাহ”কে পালন পরার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। অথবা আপনি হয়তো আল্লাহ এবং রাসুলের নির্দেশিত প্রার্থনার নির্ধারিত বিধানসমূহের কিছু পালন করতে চেষ্টা করেন এবং কিছু করেন না। অথবা আপনি হয়তো আল্লাহ এবং রাসুলকে ভয় করেন ঠিকই কিন্তু আপনার মনে অনেক প্রশ্ন আছে। অথবা আপনি হয়তো আল্লাহ এবং রাসুলের নির্দেশিত প্রার্থনার কিছুই পালন করেন না। কিন্ত আল্লাহ এবং তার রাসুলকে বিশ্বাস করেন। অথবা আপনি হয়তো আল্লাহ এবং রাসুলকে ভয় করেন না সত্যি কিন্তু অবিশ্বাস করেন না এবং আপনার মনে অনেক প্রশ্ন আছে। নিজেকে অবশ্যই আপনি মুসলমান দাবী করেন বা ভাবেন।
এই সকল শ্রেণীর মুসলমানের মধ্যে যারা চিন্তা করেন তাদের জন্য এই লেখা এবং এই আহ্বান।
আপনি হয়তো একজন কোরানে হাফেজ। ‘মাশা-আল্লাহ’। সৌভাগ্যবান আপনি। অথবা আপনি নিয়মিতই কোরান পড়েন। অথবা মাঝে মাঝে পড়েন। অথবা আগে পড়তেন এখন পড়া হয় না। অথবা সারা জীবন কোরআন পড়েছেন এবং আল্লাহর রহমত পেয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। হয়তো কোরআনের কিছু বুঝেছেন অথবা সারা জীবন কোরআন পড়েছেন এমন অনেকে আছেন বোঝেন নি আল্লাহ কোরানে কি বলেছেন। বোঝেন নি কোরানে আপনার জন্য আল্লাহ কি নির্দেশ রেখেছেন।
আমার বিশ্বাসী মুসলমান ভাই ও বোনঃ
একবার কি এটা মনে করতে পারেন যে, কোরআন এইমাত্র নাযিল হলো। অর্থাৎ আপনি যখন কোরআন পড়ছেন তখনই মাত্র এটা মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর কাছে নাযিল হয়েছে এবং আপনি তা তার মুখে শুনতে পাচ্ছেন।
ঠিক ঠিক এভাবে কি কোরান সম্পর্কে একবার চিন্তা করে দেখবেন? নিজেকে কি একবার সেই সময়ে নিয়ে যেতে পারবেন? আমরা তো অনেক সাইন্স-ফিকশন ছবি দেখি, অনেক ইতিহাস-ভিত্তিক ছবি দেখি হর-হামেশা। নিজেকে সেই ইতিহাসের সময়ে নিয়ে যাওয়া কি খুব কঠিন আমাদের জন্য?
ঠিক সেভাবে একবার একটু ভাববেন যে আপনি মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর একজন সাহাবী বা সহচর বা পরিচিত বা গোত্রের বা ওই শহরের অধিবাসী এবং আপনি মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে সব সময়ই চিনতেন, তার চরিত্র জানতেন।
তারপর হঠাৎ করে একদিন তিনি এইভাবে গায়েবী থেকে প্রাপ্ত কথাবার্তা শুরু করে দিলেন। অর্থাৎ কোরানের যে আয়াতটি আপনি এইমাত্র পড়লেন বা শুনলেন, তা এইমাত্রই নাযিল হয়েছে এবং মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম তা আপনাকে শোনাচ্ছেন, আপনি তার সহচরদের একজন। ভাবুন তো আপনি তখন কি করবেন?
নিশ্চয়ই আপনি সেই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করবেন। সেই আয়াতের মধ্যে আল্লাহ কি নির্দেশ দিয়েছেন তা শুনবেন এবং সেই মুহূর্ত থেকে সেইভাবে জীবন যাপন করবেন। ঠিক যেভাবে তার সাহাবারা সেই সময়ে করেছেন। কারন সেই সাহাবারা যেভাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করেছেন এবং আল্লাহর রাসুলকে বিশ্বাস করেছেন আপনি ও তো আজ ভাবছেন আপনি আল্লাহকে বিশ্বাস করছেন এবং আল্লাহর রাসুলকে বিশ্বাস করছেন, তাই না?
আরো চিন্তা করুন, আর একটু গভীরভাবে, এক একটি আয়াত নাযিলের পর রাসুলের অনুসারীরা কিভাবে সেই আয়াতকে চিন্তা করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন, ধারন করেছেন, কিভাবে এক একটি আয়াত নাযিলের পর তাদের পুরো জীবনে, পুরো জীবন ব্যবস্থায় সেই আয়াত, বা সেই নির্দেশ প্রভাবিত করেছে।
এবার আমি আপনাকে প্রশ্ন করিঃ
আচ্ছা বলুন তো এই কোরআন কি শুধু সেই সময়ের কিছু ‘বিশেষ’ মুসলমানের জন্যই ‘বিশেষভাবে’ নাযিল হয়েছে? অথচ আপনি তো বিশ্বাস করেন যে এই কোরআন পুরো বিশ্বের মানুষের জন্য নাযিল হয়েছে এবং এই কোরআন কেয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য পথের নির্দেশনা এবং জীবনের নির্দেশনা।
তাহলে বলুন, এই কোরআনের এক একটি আয়াত নাযিল হওয়ার ঠিক পর পর যেভাবে সাহাবারা তার অনুসরন করেছেন, পরবর্তী সময়ের মুসলমানদের জন্য কি তার ব্যতিক্রম কোন ‘বিঁধান’ আল্লাহ বা তার রাসুল বলে দিয়েছেন?
এমন কোন কোরআনের আয়াত কি আছে যেখানে আল্লাহ বলেছেন, মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর জীবিত অবস্থায় আল্লাহর যে বিধান বা নিয়ম করা হয়েছে, তা পরবর্তী সময়ের ‘মুসলমান’দের ঘরে জন্ম নেয়া ‘মুসলমান’দের জন্য তা শিথিল করা হয়েছে?
অথবা এমন কোন হাদিসের উল্লেখ কোন সহীহ বা কোন ‘জঈফ’ অথবা এমনকি কোন ‘জাল’ হাদিসে ও কোথাও কেউ উল্লেখ করেছেন যে, মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ইসলাম যেহেতু প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে, তাঁকে অনুসরন কারী সাহাবারা আল্লাহ এবং রাসুলের নির্দেশ অনেক কঠিন ভাবে পালন করেছেন অতএব এখন থেকে মুসলমানদের সকল বংশধররা বংশানুক্রমে মুসলমান বলে আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে এবং তাদের জন্য কঠোর ভাবে আল্লাহ এবং রাসুলের বিধান পালন না করলে ও চলবে। বিংশ/একবিংশ শতাব্দীতে অনেক কঠিন জীবন, সুতরাং সেই সময়ের মুসলমানদের ঘরে জন্ম নেয়া মুসলমানদের জন্য আল্লাহর এবং রাসুলের বিধান শিথিল করা হলো এবং সেই কঠিন সময়ের মুসলমানদের আল্লাহর বিধান পালন করার জন্য তাদের শুধু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লেই চলবে।
খুঁজুন, খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এমন কোন কিছু, তারপর নিশ্চিত হোন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, এইরকম কোন নিশ্চয়তা না পাওয়ার আগে আল্লাহ আজকের “মডারেট মুসলমান” হয়ে যেন আপনার মৃত্যু উপস্থিত না করেন। জীবন পন করে খোঁজার চেস্টা করুন, আল্লাহ অথবা তার রাসুল “মডারেট মুসলমান” নামে কোন বিধান কোন নথিতে রেখেছেন কিনা। নতুবা আপনি তো জানেন, আল্লাহ আপনার জন্য কি রায় রেখেছেন ‘বিচারের দিনে’।
আজকে আপনি এবং আমি, আমরা, যারা মনে করি মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়েছি তো আমি মুসলমান, তাদের জন্য কি এমন কোথাও কোন ‘বিঁধান’ আছে যে মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলেই আল্লাহ তাকে মুসলমান বলে গণ্য করবেন?
নেই। কস্মিনকালেও এরকম কিছু আপনি খুঁজে পাবেন না। কারন এমন কিছু অবশ্যই নেই। আপনি ও তা জানেন।
বরং আছে এর উল্টোটা। এই আয়াতটি পড়ুনঃ
সুরা ০২, বাকারাঃ গাভী : আয়াত ঃ ২০৮
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
Muhsin Khanঃ
O you who believe! Enter perfectly in Islam (by obeying all the rules and regulations of the Islamic religion) and follow not the footsteps of Shaitan (Satan). Verily! He is to you a plain enemy.
Bangla
হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
এই আয়াতটি আল্লাহ কাকে উদ্দেশ্য করে নাযিল করেছেন? এটা কি সরাসরি আপনার সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ নয়, যাকে আপনি বিশ্বাস করেন?
এবার নিচের আয়াতটি পড়ুনঃ
সুরাঃ ৩, আলে ইমরানঃ ইমরানের পরিবারঃ আয়াত ১০১
وَكَيْفَ تَكْفُرُونَ وَأَنتُمْ تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ آيَاتُ اللَّهِ وَفِيكُمْ رَسُولُهُ ۗ وَمَن يَعْتَصِم بِاللَّهِ فَقَدْ هُدِيَ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
Muhsin Khan
And how would you disbelieve, while unto you are recited the Verses of Allah, and among you is His Messenger (Muhammad SAW)? And whoever holds firmly to Allah, (i.e. follows Islam Allah's Religion, and obeys all that Allah has ordered, practically), then he is indeed guided to a Right Path.
Bangla
[si]আর তোমরা কেমন করে কাফের হতে পার, অথচ তোমাদের সামনে পাঠ করা হয় আল্লাহর আয়াত সমূহ এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছেন আল্লাহর রসূল। আর যারা আল্লাহর কথা দৃঢ়ভাবে ধরবে, তারা হেদায়েত প্রাপ্ত হবে সরল পথের।
চিন্তা করুন আল্লাহর কি নির্দেশ। “যারা আল্লাহর কথা দৃঢ়ভাবে ধরবে”, আল্লাহ তাকে হেদায়াত করেন, তার পরিপূর্ণ এবং সহজ সরল বর্ণনা। কিভাবে সহজভাবে আল্লাহ বর্ণনা করেছেন। কোরআনের এই সহজ বর্ণনার বিষয়ে আল্লাহ নিজেই বারবার কোরআনেই বলেছেন। পড়ুন নিচের আয়াতঃ
সুরাঃ ৫৪ কামারঃ চাঁদঃ আয়াতঃ ১৭
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
Muhsin Khan
And We have indeed made the Quran easy to understand and remember, then is there any that will remember (or receive admonition)?
Bangla
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?
এই একই কথা বলা আছে এই একই সুরার ২২, ৩২, ৪০ নম্বর আয়াতে এবং কোরানের অন্যান্য অনেক স্থানে অনেকবার। চিন্তা করুন কতটুকু গুরুত্ব হলে একই কথা আবার এবং আবার এবং আবার বলা যায়।
খেয়াল করুন, এই সহজ কোরআন বোঝার জন্য, কোরআনের সহজতা বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবার আল্লাহ ইঙ্গিত করছেন চিন্তাশীলতার, বুদ্ধিমত্তার।
কোরানের এর আয়াতের মর্মার্থ বোঝার জন্য কি আপনাকে কি অভিজ্ঞ বিশ্লেষক হতে হবে? নিশ্চয়ই না।
তবে তার মানে এই না যে কেউ যে কোন আয়াত এতো সহজেই বুঝে ফেলতে পারবে। হ্যাঁ, একথাটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, অনেক আয়াতই আছে যেটিকে ভালোভাবে বোঝার জন্য আপনাকে কোরআনেরই অন্য আয়াতের সাহায্য নিতে হবে, কখনো সংশ্লিষ্ট হাদিস থেকে তার নাযিলের কারন বা ব্যখ্যা জানতে হবে, কখনো সেই আয়াতের তাফসীর থেকে আয়তের বিষয়বস্তু বা নির্দেশনা সম্পর্কে জ্ঞান নিতে হবে এবং তারপরও অভিজ্ঞ কোরআন বিশেষজ্ঞের ব্যখ্যা শুনতে হবে। তারপরই আপনি হয়তো সেই আয়াতকে বুঝতে সক্ষম হবেন
পড়ুন আরেকটি আয়াত
সুরাঃ ৩৮ ছদঃ আরবী বর্ণঃ আয়াতঃ ২৯
كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِّيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ
Muhsin Khan
(This is) a Book (the Quran) which We have sent down to you, full of blessings that they may ponder over its Verses, and that men of understanding may remember.
Bangla
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।
আল্লাহ বলছেন এই কোরআন আল্লাহ দিয়েছেন যাতে মানুষ তা বুঝতে চেস্টা করে এবং বুদ্ধিমানগণ যাতে বুঝতে পারে। লক্ষ করুন, ইংরেজী শব্দ “PONDER” যার অর্থ আরো ব্যাপক।
অথচ হাহাকার জেগে উঠে বুকে, এই আজ ও, এই দিনে, এখন ও সেই ‘মুসলমান’ আপনার আমার আশেপাশে যারা বলবে কোরআন বোঝা কঠিন। অথবা যে কোন ভাবে আপনাকে অনুৎসাহিত করবে কোরআন না বোঝার জন্য, এরা এ কথা বলে সরাসরি আল্লাহর আয়াতের বিপরীতেই কথা বলছে । অথচ কি আশ্চর্য, আল্লাহর আয়াতের বিপরীতে কথা বলে ও এরা নিজেদের মুসলমান ভাবছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, আল্লাহ তাদের পাপ ক্ষমা করুন।
শুধুমাত্র চিন্তাশীল কোন মুসলমান কি আছেন, চিন্তা করবেন আল্লাহর সহজ ভাবে বর্ণিত নির্দেশ?
সুরা ০২, বাকারাঃ গাভী : আয়াত ঃ ২০৮
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
Muhsin Khanঃ
O you who believe! Enter perfectly in Islam (by obeying all the rules and regulations of the Islamic religion) and follow not the footsteps of Shaitan (Satan). Verily! He is to you a plain enemy.
Bangla
[sb]হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
তাহলে কি বলা হলো, বিশ্বাসীদের প্রতি পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ এবং রাসুলের নির্দেশ পালন করার আদেশ। অতি সহজ এবং সরল ভাবে বর্ণিত কিন্ত অতি দৃঢ় এবং কঠিন নির্দেশ। যে মানুষ মনে করে সে আল্লাহতে বিশ্বাসী তার কি এই আদেশ বোঝার ব্যাপারে কোন দ্বিধা থাকার কথা?
যদি এতে সামান্যতম দ্বিধা আপনার থাকে তাহলে চিন্তা করুন, আপনি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন, কিন্তু ঠিক কতটুকু? নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে আপনার।
এটাই মূল বিষয়। বিশ্বাসটাকে আগে যাচাই করুন আমার মুসলমান ভাই বোনেরা। এটাই জীবনের সবচাইতে জরুরী বিষয়।
আমি শুধু একটি কোরআনের আয়াত এবং একটি হাদিস দিয়ে আপনাকে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসটাকে বোঝার পথে সাহায্য করবো। অতি কঠিন এই বিশ্বাস।
সুরাঃ ৪৭, মুহাম্মাদঃ আয়াতঃ ১২
إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يَتَمَتَّعُونَ وَيَأْكُلُونَ كَمَا تَأْكُلُ الْأَنْعَامُ وَالنَّارُ مَثْوًى لَّهُمْ
Muhsin Khan
Certainly! Allah will admit those who believe (in the Oneness of Allah Islamic Monotheism) and do righteous good deeds, to Gardens under which rivers flow (Paradise), while those who disbelieve enjoy themselves and eat as cattle eat, and the Fire will be their abode.
Bangla
যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।
খুব সহজ সরল কথা। বিশ্বাস করো যে, আল্লাহ বলে কেউ আছে। স্রষ্টা বলে কেউ আছে। অর্থাৎ আমি হচ্ছি সৃষ্টি। আমার একজন স্রষ্টা আছে এটা বিশ্বাস করতে হবে। প্রথম শর্ত।
এবার নিচের আয়াতটি পড়ুন, আগে তো ছিলো শুধু বিশ্বাস, এবার এখানে চলে এসেছে নির্দেশ মেনে চলার কথা। তাও শুধু আল্লাহ এবার একা নন। নিয়ে এসেছেন তাঁর রাসুল। এবং তাঁর নির্দেশ ও মেনে চলতে হবে। দুই শর্ত। দুই অবশ্য পালনীয় শর্ত । কোন অন্যথা নেই।
সুরাঃ ৪, আন-নিসাঃ নারীঃ আয়াতঃ ১৩
تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ ۚ وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ وَذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
Muhsin Khan
These are the limits (set by) Allah (or ordainments as regards laws of inheritance), and whosoever obeys Allah and His Messenger (Muhammad SAW) will be admitted to Gardens under which rivers flow (in Paradise), to abide therein, and that will be the great success.
Bangla
এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য।
খুব সহজ তাই না? শুধু আল্লাহ ও রাসুলের আদেশ মেনে চল, ওয়াদা হলো জান্নাতের। তাহলে এবার দেখুন রাসুল সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কি বলছেন?
সহিহ মুসলিমঃ
ভলিউম ০১, Book of faith: Chapter 16, হাদিস ১৬৮-১৬৯।
Chapter 16.
The Obligation To Love The Messenger Of Allah More Than One's Family, Son, Father, And All Other People; And Mention Of An Absolute Absence Of Faith Regarding One Who Does Not Love Him With Such Love
[168] 69 - (44) It was narrated that Anas said: "The Messenger of Allah said: 'No person is a believer until I am dearer to him than his family, his wealth and all of mankind."
[169] 70 - ( ... ) It was narrated that Anas bin Mâlik said: "The Messenger of Allah (PBUH) said:
'None of you is a believer until I am dearer to him than his son, his father and all of mankind."
এটা কি হলো? রাসুলকে ভালবাসতে হবে, শুধু তাই নয় সেই ভালোবাসা হতে হবে নিজের সন্তান, নিজের পরিবার সর্বোপরি নিজের সমূদয় সম্পদের চাইতে ও বেশী।
প্রথমে ছিলো শুধু আল্লাহতে বিশ্বাস, মনে হয়েছিলো এ আর এমন কি। কিন্তু অবশেষে এতো নিজের পুরো জীবনের উপর দখল, রাজত্ব, শাসন। এবং নয়তো সেটা বিশ্বাসই নয়!
চিন্তা করুন, বিশ্বাসী মুসলমান। চিন্তা করুন। আল্লাহতে বিশ্বাস কি এতো সহজ। যাচাই করুন। নিরিখ করুন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস যাচাই না করে আল্লাহ যেন আপনার, আপনার পরিবারের, আমার এবং আমার পরিবারের কারো মৃত্যু না দেন।
সবশেষে, সারা দিনের ব্যস্ততা শেষে কোরআনের এই আয়াতকে নিয়ে রাতে নিভৃতে চিন্তা করুন।
সুরাঃ ৩, আলে ইমরানঃ ইমরানের পরিবারঃ আয়াত ১০২
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
Muhsin Khan
O you who believe! Fear Allah (by doing all that He has ordered and by abstaining from all that He has forbidden) as He should be feared. [Obey Him, be thankful to Him, and remember Him always], and die not except in a state of Islam (as Muslims) with complete submission to Allah.
Bangla
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।
চিন্তা করুন, “অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।“ এই কথা আল্লাহ সকল মানুষকে উল্লেখ করে বলেন নি। অবিশ্বাসীদের উল্লেখ করে বলেন নি। বলেছেন, ঈমানদারদের।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:০২