অষ্টম শ্রেণীর দিশার চার মাসের দুষ্ট-মিষ্ট প্রেম ভাঙল চার দিনে। মেয়েটির প্রথম প্রেম। ভেবেছিল এটাই প্রথম আর এটাই শেষ। আফসোস, চার মাসের ভার না সইতে পেরে দিলো গলায় দড়ি।
প্রিতির এক বছরের প্রেমকে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পালিয়ে বিয়ে করা সংসার। সেই সংসারে প্রেম এখন জানালা দিয়ে পালিয়েছে। বিয়ের আগের “প্রেমিক” আর বিয়ের পরের “স্বামীর” দুটিকে যেন কোনভাবেই এক করতে পারছে না প্রিতি। প্রেয়সী থেকে হয়েছে দাসী। সে এখন অভিভাবকের আশীর্বাদহীন সম্পর্কের শাস্তি ভেবে চুপ মেরে পড়ে আছে।
কনক এর সাড়ে পাঁচ মাসের প্রেমের আজ মিউচুয়াল ব্রেক-আপ। তাদের আর এক সাথে হচ্ছেনা কোনও কিছুই। না কথার মিল না মতের না পছন্দের। একটাই মিল বেড়িয়েছে কেবল আর সেটা হচ্ছে, দুজন-দুজনের সাথে আর হচ্ছেনা। ভাললাগছেনা। সুতরাং, মিউচুয়াল ব্রেক-আপই শ্রেয়।
এক যুগ প্রেমের পর রিতার বিয়ে হয়েছে। সংসার বেশ সুখের বলেই জানে সক্কলে। দুটো ছেলে-মেয়ে, তাদের কী সুন্দর দেখতে! ছেলেটা মায়ের মতো আর মেয়েটি বাবার মতো। সংসার ভীষণ সুখেরই ছিল। ঠিক ততোদিন অব্দি যতদিন রিতার এক যুগের প্রেমিক-সাত বছরের স্বামীর অন্যত্র পরকিয়ায় লিপ্ত থাকার খবর খানা রিতার থেকে আড়াল ছিল।
মৌমিতার তিন বছরের প্রেমের পরিণতি মিলল প্রেমিকের প্রতারণায়। বন্ধু-পরিবার-সমাজ তাকে এখনও হাসি-খুশি মেয়ে বলেই জানে। মেয়েটির হাসি ভীষণ সুন্দর। সে হাসিতে তার দুঃখ লুকাতে জানে। এই কাজে সে এক্সপার্ট।
বিয়ের আগেই অন্তসত্বা নবনীর দিন-রাত্রির সঙ্গী হয়েছে "ডীপ" ডিপ্রেশন। প্রেমিক করেছে প্রত্যাখ্যান। হয়েছে নিরুদ্দেশ।
শাহানার সাড়ে আট বছরের সংসারে আদৌ কোন নতুন প্রানের সঞ্চার হয়ে উঠেনি বলে সতিন জুটেছে কপালে। শাশুড়ি জায়গা দিয়েছে ননদের ঘরে। সতিন অবশ্য শাহানার সম্মতিতেই এসেছে। তবে তা মুখের সম্মতি, মনের সম্মতি নয়।
পঁয়ত্রিশ বছরের মমতা “খালা” নিত্যদিনের মতো সাত সকালে বেড়িয়েছেন অন্যের বাড়ির কাজ সারতে। রাস্তার পাশের ডাস্টবিন থেকে তার কানে ভেসে এলো বাচ্চার কান্নার আওয়াজ। এত এত নোংড়ার মাঝে দেখতে পেলো একটি ফুল মতন শিশু কন্যা।
লাবণ্য বিয়ের তিন বছর পরেই ঘটে যাওয়া এক রোড এক্সিড্যান্টের ফলস্বরূপ পড়ে আছে প্যারালাইজড হয়ে। এগারো বছরের সংসারে সাথি শুধু হুইলচেয়ার টাই নয়। সঙ্গী হয়ে আজও ভালবেসে পাশে আছে তার স্বামী। স্বামীর কাছে লাবণ্য কোন অবহেলার বোঝা হিশেবে নয় বরং, আছে ভালোবাসার দায়িত্ব হয়ে। ভালবাসা যেমন বিয়ের প্রথমে ছিল,এখনও ঠিক তেমন টাই রঙিন আছে। জানালা দিয়ে পালাতে পারেনি কোনভাবেই।
এত এত ভালবাসাহীন প্রেমের প্রদীপ নিভে যাওয়া অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মাঝে যে গুটি কয়েক ঘর "প্রেম" ও "ভালবাসা" এ দুটির দ্যুতিতেই দ্যুতিময় হয়ে আছে তার মধ্যে লাবণ্যর ঘর একটি “অন্যতম আলোকিত ঘর”। যেখানে প্রেম ও ভালবাসা মনের সুখে বসবাস করে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:০৮