somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রহসনের বিচার, গনহত্যা, ঘাতক হাসিনা এবং মৃত্যুপুরি বাংলাদেশ

০৬ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুদ্ধপরাধের সঠিক ও ন্যায়সঙ্গত বিচারের জন্য পুরো জাতি যখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল ঠিক তখন সমগ্র বাংলাদেশকে হতাশ করে হাসিনা সরকার বিচারের নামে প্রহসনের একটি নাটক মঞ্চায়ন করল। নাটকটি কয়েকটি পর্বে মঞ্চায়িত হয়ঃ
পর্ব ১
নিজ দলের যুদ্ধপরাধিদের না ধরে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করা অভিযোগ প্রমানের আগেই।
পর্ব ২
সরকারের পক্ষ থেকে ভুয়া সাক্ষী হাজির, সাক্ষ্যদানে বাধ্য করা, সাক্ষ্যদানের পরে সাক্ষির আবার তা অস্বীকার করা, সাক্ষীকে ভয়ভীতি দেখানো।
পর্ব ৩
বিচারের প্রক্রিয়াকে অযথা দীর্ঘায়িত করে ক্ষমতার মেয়াদ পার করা যাতে ইস্যুটিকে জিইয়ে রেখে মাঠ গরম করে অন্যসব ইস্যু থেকে জনগণের মনোযোগ ঘুরানো যায়।
পর্ব ৪
সরকারের ভয়ে সাক্ষী দিলেও পরে তা অস্বীকার করায় এবং সত্য সাক্ষ্য দিতে এলে আদালতের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক সাক্ষীকে অপহরন করা (এখন পর্যন্ত যার খোজ মেলেনি)।
পর্ব ৫
স্কাইপি কেলেঙ্কারির মাধ্যমে বিচারের নামে সরকার নির্দেশিত সাজানো নাটকের ঘটনা ফাঁস। যেখানে বিচারপতি পদন্নোতির বিনিময়ে ফাঁসির রায় দিতে সরকারের সাথে আতাত করে যা সে নিজের মুখে বলে। ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর সরকারের নির্দেশে অভিযুক্ত বিচারপতির পদত্যাগের হাস্যকর নাটক পুরো জাতি দেখে অবাক বিস্ময়ে।
পর্ব ৬
স্কাইপি কেলেঙ্কারির পর ট্রাইবুনাল সম্পর্কে দেশে বিদেশে যখন প্রতিবাদের ঝড় উঠল, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, মানবাধিকার গ্রুপ সরকারকে চাপ দিল সুষ্ঠ ও ন্যায়বিচার করার জন্য তখন সরকার শাহবাগে নতুন প্রজন্মের জাগরন মঞ্চের নামে নতুন নাটক মঞ্চায়নের এক অশুভ খেলা শুরু করল।
পর্ব ৭
শাহবাগে প্রজন্ম চত্তর থেকে বিচারের আগেই ফাঁসির দাবী জানানো হয়, একটি নির্দিষ্ট দলের লোকদের ধরে ধরে জবাই করে সকাল বিকাল নাস্তা করার ঘোষণা দেওয়া, সকল মিডিয়ার একযোগে লাইভ কভারেজ দিতে থাকা, সরকারের পুলিশ-র্যা ব-স্পেসাল ক্যাডার বাহিনি দিয়ে পাহারা দেওয়া, ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার চক্র কর্তৃক শাহবাগ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া, সরকারের পক্ষ থেকে স্পেশাল বিরানির ব্যবস্থা, সরকারি দলের নেতা ও বাম নেতাদের প্রজন্ম মঞ্চ থেকে বক্তব্য দান এবং বিরোধী দল ও মতকে অব্যাহত হুমকি দান।
পর্ব ৮
অবশেষে সরকারের নির্দেশনায় পরিচালিত শাহবাগ আন্দোলনকারিদের দাবির প্রেক্ষিতে ট্রাইবুনাল দেলোয়ার হোসাইন সাঈদিকে ফাঁসির রায় দিল। এখানে মজার বিষয় হলো শাহবাগি নেতা ইমরান সরকার রায়ের আগের দিনই জেনেছিলেন কি রায় হবে। তাই তিনি আগাম ঘোষণা দিলেন যে পরেরদিন তারা সাঈদির ফাঁসির রায় উপলক্ষ্যে উৎসব করবেন এবং মিষ্টি বিতরন করবেন। (যদিও এই ইমরান সরকার হলো রাজাকারের নাতি, যার নানাকে একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করেছিল।)
নাটকের এসব পর্বগুলি দেশপ্রেমিক জনগন ধৈর্য ধরে দেখার পর হঠাত তাদের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেল। প্রস্নবিদ্ধ ট্রাইব্যুনালের সাজানো রায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল পুরো বাংলাদেশ। জনতা নেমে এল রাজপথে। ব্যরিকেড দিল সড়ক মহাসড়কে। কি নারি কি পুরুষ, আবাল বৃদ্ধ বনিতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ল। মুক্তিযুদ্ধের পর এভাবে আর কখনো মানুষ রাজপথে নেমেছে কিনা আমার জানা নেই।
জনতার বিক্ষোভ দমাতে না পেরে, টলটলায়মান ক্ষমতার মসনদ জোর করে ধরে রাখতে স্বৈরাচারীনি হাসিনা তার পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি ও দলিয় গুন্ডা বাহিনী দিয়ে তার বাবার রক্ষী বাহিনীর ষ্টাইলে সাধারন বিক্ষুব্ধ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। ইতিহাসের নৃশংস এই গনহত্যায় নিহত হয় প্রায় ২০০ মানুষ, আহত হয় ২০০০০ এর ও বেশি। যুদ্ধ ছাড়া একদিনে পৃথিবীর কোন দেশে কোন সরকার তার দেশের এত মানুষকে হত্যা করেছে বলে ইতিহাসে নেই।
শুধু কি এখানেই শেষ, প্রতিদিনই এখন ১০-২০ জন প্রতিবাদি মানুষকে খুনি হাসিনার কিলার বাহিনী হত্যা করছে। বাংলাদেশ আজ পরিনত হয়েছে এক মৃত্যুপুরীতে। মৃত্যু ভয়ে আজ কেউই এখানে ঘাতক হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন, বিচারের নামে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা পরিকল্পনা, দুর্নীতি ও মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।
হুমকি/ভয় দেখিয়ে অথবা কোটি টাকা দিয়ে প্রায় সকল মিডিয়াকে সরকারের পক্ষে নিউজ করতে বাধ্য করছে। দুএকটি মিডিয়া সত্য সংবাদ পরিবেশনের কারনে সরকারি গুন্ডাবাহিনি কর্তৃক হামলার টার্গেটে পরিনত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
একি আমার প্রিয় মাতৃভূমি? এই বাংলাদেশই কি আমরা চেয়েছিলাম?? লক্ষ প্রানের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশ আর কতদিন নরঘাতক হাসিনাকে শাসন ক্ষমতায় ধারন করবে???
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:১৯
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২



প্রিয় কন্যা আমার-
ফারাজা, তুমি কি শুরু করেছো- আমি কিছুই বুঝতে পারছি না! রাতে তুমি ঘুমানোর আগে ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমাতে যাও। প্রতিদিন তোমার মুখে ঘুমের দোয়া শুনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি আমি আর আমাদের দুরত্ব

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩



তুমি আর আমি
দুই বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে,
নেই কোন লোভ চুম্বনের ,
ছোঁয়ারও কোন প্রয়োজন নেই
অথচ প্রতিটি নিঃশ্বাসে কেবলি তুমি।

তোমার হাসি সুবাসিত নয়,
কিন্তু সে আমায় মাতাল করে
যেন তরংগ বিহীন কোন সুর বাজে
মন্থর বাতাসে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৪



পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

পহেলা বৈশাখ ও আনন্দ শোভাযাত্রা: বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন

লিখেছেন ডা. মোহাম্মদ মোমিনুজ্জামান খান, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:১৬

পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে একটি সর্বজনীন উৎসব, যা শুধুমাত্র বাংলা নববর্ষের সূচনা নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক জ্বলন্ত প্রতীক। এই দিনটির সঙ্গে জড়িত আনন্দ শোভাযাত্রা, যা... ...বাকিটুকু পড়ুন

'৭৪ সালের কুখ্যাত বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এখন সময়ের দাবী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫


বিগত আম্লিক সরকারের আমলে যে কুখ্যাত আইনের অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করে গায়েব করার চেষ্টা চলতো তা হলো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। এই আইন ব্যবহার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×