পর্ব ১
আল্লাহ (সুবঃ ) বলেন - প্রত্যেক প্রানীই মৃত্যুর সাধ গ্রহন করবে ।
আমাদের মৃত্যু কবে হবে সে সময়টিও পুর্বে নির্ধারিত। আল্লাহ( (সুবঃ ) বলেন- আল্লাহর হুকুম ছরা কেউ মৃত্যুবরন করতে পারে না সে জন্য একটা নির্ধারিত সময় রয়েছে এই সময় আমাদেরর মৃত্যু হবে। আল্লাহ(সুবঃ ) আরো বলছেন- প্রত্যেক জাতি এবং সকলের জন্যই একটি নির্ধারিত মেয়াদ রয়েছে।যখন তাদের এ মেয়াদ এসে যাবে তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে না এক মুহুর্ত এগিয়ে আসতে পারবে।
একদিন রাসুল(সাঃ ) স্ত্রী উম্মে হাবিবা (রাঃ ) আল্লাহর কাছে সুন্দর একটি দোয়া করছিলেন দীর্ঘ হায়াত কামনা করে এমন সময় রাসুল(সাঃ ) এসে হাজির হন এবং তিনি বলেন- তুমি আল্লাহ(সুবঃ) এমন এক বিসয়ের জন্য দোয়া করছো যেটা তিনি আগে থেকেই তোমার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং তোমাদের রিজিক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং বন্টনও করে দিয়েছেন। তুমি যদি আল্লাহ (সুবঃ ) কাছে জাহান্নামের আগুন ও কবরের আজাব হতে মুক্তির জন্য দোয়া করতে সেটা তোমার জন্য আরো ভালো দোয়া হতো।
আমরা অনেকেই আমাদের পিতা মাতা বা আত্মীয় স্বজনের দীর্ঘ্য হায়াত কামনা করে দোয়া করি অথচ এটা পূর্ব নির্ধারিত যা হাজির হবে কোনো ঘোষনা ছারাই।মৃত্যু হবে ঠিক সেখানেই যেখানে আল্লাহ সুবঃ আপনার জন্য আমার জন্য নির্ধারন করে রেখেছেন। আপনাদের একটা সত্য ঘটনা বলছি ঘটনাটি ঘটেছিলো সৌদিআরবের রিয়াদে। একটি বিল্ডিংয়ের নির্মান কাজ চলছিলো এবং এর সাত তলা থেকে হঠাৎ এক লোক নিচে পরে যায়। এত উপর থেকে একেবারে নিচে কনক্রিটের উপর পরার পর সবাই দৌরে এলো ভাবলো লোকটি মারা গেছে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে লোকটি নিজের পায়ে উঠে দারালো। লোকটি যখন দেখলো সে মরেনি সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলো। এই খুশিতে পালন করার জন্য সে উপস্হিত সবাইকে পানি পানের আমন্ত্রন জানালো এবং ড্রিংকস কেনার জন্য রাস্তার অপর পাশে দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন । রাস্তা পার হওয়ার সময় সে একটু অমনোযোগী হয়ে হাটতেছিলো তখন একটি গাড়ি তার উপর দিয়ে যায় এবং লোকটি মারা যায়। দেখুন লোকটি এত উপর থেকে পরেও মরলো না অথচ রাস্তা পার হতে গিয়ে মারা গেলো। আল্লাহ (সুবঃ ) তার জন্য সময় ও স্থান ঠিক করে রেখেছিলেন সেখানেই তার মৃত্যু হলো। আল্লাঃ তাকে তার নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে আসলেন । লোকটি ভেবেছিলো এমন একটি ঘটনার পর হয়তো এত তারাতারি তার মৃত্যু হবে না সে এই খুশিতে বিভোর ছিলো ঠিক সে সময়ই তার মালাকুল মউতের সাথে দেখা হয়ে গেলো।
সুতরাং যখনমৃত্যু এসে যাবে তখন আপানার মেধা, টাকা, বিল্ডিং, ছেলেসন্তান কেউ আপনাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আপনি হয়ত ভাবছেন আপনার সামনে একট দীর্ঘ্য জীবন আছে আপনি তখন মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহন করবেন কিন্তু কোনো ঘোষনা ছারাই এসে হাজির হবে তার নির্ধারিত সময়ে যা আপনি জানেন না। যে কোনো সময় আমপনার সাথে দেখা হয়ে যাবে মালাকলমাউতের। মনে করুন আপনি একটি বার্গার খাচ্ছেন হয়তো সেটি শেষ করার আগেই আপনি মরে যেতে পারেন।
আমাদের এ কারনেই বারবার মৃত্যুর কথা স্মরন করা উচিত। কারন রাসুল (সাঃ ) বলেছেন- তোমরা বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরন কর।মুসলিম কিংবা অমুসলিম কেউ মৃত্যুকে অবিশ্বাস করে না।
ইমাম হাসান আল বাসরি- মৃত্যুর মত নিশ্চিত আর কোনো বিষয় নেই ^তবু মানুষ মৃত্যু নিয়ে এমন অনিশ্চতায় ডুবে আছে যে সে সারা জিবন এই দুনিয়াতে বেচে থাকবে।
ভেবে দেখুন আমরা জানিনা আগামিকাল আমাদের জন্য কি রিজিক আছে সেই অনিশ্চিত জিনিসের জন্য আমরা কত প্লান প্রোগ্রাম করছি অথচ যে বিষয়টা শুনিশ্চিত তার জন্য আমরা কি প্রস্তুতি নিচ্ছি ? এটা অবাক করার মত মৃত্যুর জন্য সত্যি আমরা কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছিনা।
অনেকেই আবার মৃত্যুর পর কবরের জন্য জায়গা ঠিক করে রাখে, বা জানাজা কোথায় হবে বা অন্তষ্টেক্রিয়া করে থাকে অথচ তারা মৃত্যুর পরে কি হবে তার জন্য তারা কোনো প্রস্তুতি নেয় না।
বিখ্যাত সাইন্সফিকশন লেখক আই জ্যাক আসিমভকে তার মৃত্যুর কিছুদিন আগে জানতে চাওয়া হয়ে ছিলো মৃত্যুর পরের কথা তিনি বলেছিলেন কিছুই হবে না আমি মরে গেলে আমার লাশ পচে মাটিতে পরিনত হবে।তার এত গেয়ান, খ্যাতি , সম্পদ , জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও ১৪০০ আঘের মুর্খ্য কাফিরের সাথে মূলত কোনো পার্থক্য নেই।তার তথাকথিত এই গেয়ান কোনো কাজেই আসেনি। আমরা একজন লোককে যতই বুদ্ধিমান মনে করিনা কেন প্রকৃত পক্ষে তার বুদ্ধি শুন্যের কোঠায় যদি সে আখিরাতকে বিশ্বাস না করে।
আল্লাহ (সুবঃ ) বলেন - তারা আরো বলবে যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম তাহলে আমরা জাহান্নাম বাসিদের মধ্যে থাকতাম না।
বুদ্ধি খাটানোর কথা আল্লাহ (সুবঃ ) বিশেষ ভাবে বলেছেন যদি তারা এগুলো কাজে লাগাতো তাহলে তারা অবশ্যই আখিরাতের উপর বিশ্বাস করতো।সুতরাং মানুস যদি টার বুদ্ধিকে খাটাতো তাহলে আখিরাতকে বিশ্বাস করতো। এত মেধা ও বুদ্ধি থাকার পরও যদি আমাদের জাহান্নামের আগুনে পুরতে হয় তাহলে এর কি মূল্য থাকল।
আল্লাহ (সুবঃ ) বলেছেন কেন আমাদের এই মেধা , বুদ্ধি বিবেক কেন দিয়েছেন। আল্লা(সুবঃ ) বলেন- তোমাদেরকে তিনি দেন চক্ষু, কর্ন এবং অন্তকরন অর্থা্ৎ মন তোমরা সামন্যই কৃতগ্গতা প্রকাশ কর।
সুতরাং আল্লা(সুবঃ ) আমদের চোখ , কান , মন দিয়েছে যাতে আমরা শুনি, দেখি এবং চিন্তা করি এবং আল্লাহর কৃত্গ্গতা প্রকাশ করি।
আমরা যখন মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করি সেটা আমাদের দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমিয়ে দিবে।দুনিয়াকে নিয়ে আমরা এতটাই ব্যাস্ত যে মৃত্যুর কথা আমরা ভুলে যাই গাফেল হয়ে যাই। তাই মৃত্যুকে বেশি বেশ স্মরন করতে হবে।
মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত বা আগের মুহুর্তটার একটা নাম আছে সেটাকে বলা হয় "আল ইহতিদার"। এটা একদম মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত যখন মালাকাল মাউত আজরাইল (আঃ ) জান কবজের জন্য হাজির হন।আল্লাহ (সুবঃ) এই সম্পর্কে বলেন- যখন তোমাদের কারো মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেস্তারা তার আট্মা হস্তগত করে নেয়।
ফেরেস্তারা যখন জান কবচ করতে আসে মৃত্যু পথযাত্রী ব্যাক্তি ফেরেস্তাদের দেখতে পায় যদিও আমরা সাধারনত ফেরেস্তাদের দেখিনা।রাসুল (সাঃ ) বলেন মুমিন ব্যক্তি যখন মৃত্যুর পথে যাত্রা শুরু করে ফেরেস্তারা তখন উজ্জল চেহারা নিয়ে উপস্হিত হন এবং বলে পবিত্র আত্মা আল্লাহর ক্ষৃমা ও সন্তুষ্টির দিকে চলে আসো।এবং তারা খুব কোমল ভাবে টার ডেহ থেকে আত্মাকে বের করে নেয়।
কিন্তু পাপিদের সামনে মালাকাল মাউত ভয়ংকর চেহারা নিয়ে হাজির হবে এবং বলবে হে পাপি আত্মা আল্লাহ(সুবঃ ) ক্রোধ এবং রোশের দিকে তুমি ছুটে আস।
সাথে থাকুন চলবে
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০