পাত্র বা পাত্রী কানাডা-আমেরিকা বা পৃথিবীর উন্নত কোন দেশে থাকে, বিবাহের ক্ষেত্রে এটি একটি বড়ো পজিটিভ পয়েন্ট হিসেবে অনেকে বিবেচনা করেন। এটি একটি ভুল ধারণা। বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পাত্র বা পাত্রীর ব্যক্তিগত গুণাবলী বা যোগ্যতাই প্রাধান্য পাওয়া উচিত। কারন, দিনশেষে সেটাই কাজে লাগে।
ঢাকার এক অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন আমার এক সুহৃদ। কিছুদিন আগে মহা ধুমধামে কানাডায় থাকে এমন এক পাত্রের সাথে কন্যার বিয়ে দিলেন। কন্যা ঢাকার এক নামিদামি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। কথা ছিল বিবাহের দুচার মাসের মধ্যেই পাত্রীকে কানাডা নিয়ে যাবে।
পাত্রীপক্ষ পাত্রের কানাডার ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস (স্থায়ী/অস্থায়ী) বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানতেন না। এক গন্যমান্য ব্যক্তির রেফারেন্স ছিল বলে খুব বেশি জানতেও চাননি তারা। তিনি জানিয়েছিলেন, পাত্র স্থায়ীভাবে কানাডায় থাকে।
পাত্রীর বাবার কাছে জানতে চাইলাম তিনি এতো দেরিতে বিষয়টা আমাকে জানালেন কেন? উত্তরে তিনি বললেন, নিকাহ (আকদ) সম্পন্ন হবার আগে তাঁর স্ত্রী চাইছিলেন বিষয়টা কেউ না জানুক। তাই, কঠোর গোপনীয়তায় বিয়ে পড়ানো হয়। তাঁদের ধারণা ছিল খুবই ভালো একটা সম্পর্কে জড়াচ্ছিলেন তাঁরা। আগেই বেশি জানাজানি হয়ে গেলে আবার কোন বিপদ এসে পড়ে।
রেফারেন্স যিনি দিয়েছিলেন তাঁর উপর অন্ধভাবে নির্ভর করার কারন জানতে চাইলে সুহৃদ বললেন, 'তিনি পিএইচডি পাশ লোক। তাঁর কথা অবিশ্বাস করি কিভাবে?'
এই বেকুবের কথা শুনে আমি বললাম, 'পিএইচডি পাশ বলেই যাচাই বাছাই না করে এভাবে মেয়ে বিয়ে দেবেন? বিয়ে কি বারবার দেয়া যায়? বাংলাদেশের শীর্ষ চোরদের একজন পুলিশ অফিসার বেনজির-ও তো পিএইচডি পাশ।'
বাস্তবতা হলো, পাত্র ছাত্র ভিসায় অস্থায়ীভাবে কানাডায় ঢুকেছে। তবে, শর্ত ভঙ্গের কারণে সে ভিসাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এরই মাঝে 'কানাডা থাকে' তেমন 'যোগ্যতা' ব্যবহার করে বিবাহকার্য সুসম্পন্ন করেছে সে পাত্র।
বর্তমানে পরিস্থিতি এমন, পাত্র নিজেই কতদিন এভাবে কানাডায় থাকতে পারবে তার নিশ্চয়তা নেই, স্ত্রী নিয়ে আসা তো দূরের কথা। ...
আর বেশি কিছু না বলি। আশা করি, যতোটা বলেছি তাতেই দরকারি বার্তাটা পেয়ে গেছেন। প্রবাসী কারো সাথে আত্মীয়তা করতে যথেষ্ট খোঁজখবর নেবেন অবশ্যই।