somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই রিভিউ: জেন আয়ার - শার্লট ব্রন্টি

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জেন আয়ার
শার্লট ব্রন্টি
অনুবাদ:কবীর চৌধুরী
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র
এক এতীম মেয়ের জীবনের কাহিনী। জন্মের পর বাবা-মাকে হারানো শিশুরা যেসকল প্রতিবন্ধকতা আর অনাচারের সম্মুখীন হয়, সে সব বাধা-বিপত্তি প্রতিনিয়ত সহ্য করতে হয় ছোট্ট জেনকে। মাঝে মাঝেই তার চাইতে বয়সে বড় মামাত ভাইয়ের কাছে মারও খেতে হয় তাকে। এর একটা কারণ তার চেহারা উক্ত ভাইটির পছন্দ নয়। মামার মৃত্যু পরবর্তী মামার বাসায় মামী আর মামাত ভাইদের উৎপীড়ন সহ্য করার পর জেনের জায়গা হয় এক বোর্ডিং স্কুলে। তবে তার উপর অত্যাচারের মাত্রা সেখানে কমেনি বরং বেড়েছে। এভাবে অবহেলা-অনাদরে বড় হতে থাকে জেন। জীবন তার স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলে। তবে জীবনের অনেক মোড়ের মুখোমুখী হতে থাকে সে।
একটা ইংরেজি ক্লাসিক হওয়ার সব গুণই আছে শার্লট ব্রন্টির ‘জেন আয়ার’ উপন্যাসে। এটা সম্পূর্ণ কোন কাল্পনিক কাহিনী নয়। শার্লট ব্রন্টির জীবনের অধিকাংশ সত্য ঘটনা এখানে লিপিবদ্ধ আছে। ‘জেন আয়ার’ কে আত্মজৈবনিক উপন্যাসও বলা হয়। অসাধারণ সরল লেখনির জাদুতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এক মেয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি। সেখানে যেমন এসেছে প্রেম, তেমনি মৃত্যু। এক তরুণীর ঘটনাবহুল জীবনের সাথে একাত্ম হয়ে পাঠক ফিরে যাবে সেই ভিক্টোরিয়ান যুগের ইংল্যান্ডে।
আমি বইটা প্রথম পড়েছিলাম এসএসসি পরীক্ষা পরবর্তী সেই লম্বা ছুটির এক নির্জন দুপুরে। সময় আর পরিবেশটা গল্পের বই পড়ার জন্য আদর্শ ছিল। পরবর্তি অভিজ্ঞতার উপর আমার একটা পর্যবেক্ষণ হল- পরীক্ষা শেষে এবং পরীক্ষাকে সামনে রেখে গল্পের বই পড়াতে একটা পার্থক্য আছে। অবশ্যই আমি প্রথমটাই বেশী পছন্দ করি আর আমার মনে হয় অনেকেই আমার সাথে একমত হবেন। যাইহোক, অসাধারণ এই কিশোর ক্লাসিকের সাথে আমার কল্পনাপ্রবণ কৈশোর জড়িয়ে আছে। ঐ দুপুরটাকে আমি চাইলেও ভুলতে পারবনা।
সেবার অনুবাদটা কেমন হয়েছে জানিনা। কিন্তু কবীর চৌধুরী ‘জেন আয়ার’এর দারুণ সাবলীল অনুবাদ করেছেন। যদিও অনুবাদ সাহিত্যের ব্যাপারে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে নিশ্চিন্তে বিশ্বাস করা যায়। সেবাতে অনুবাদ যেরকম সংক্ষেপ করে, তার সাথে আমি মানিয়ে নিতে পারিনা। আমার মনে হয় বিস্তারিত বা মূলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অনুবাদই বেশী উপভোগ্য।
‘জেন আয়ার’ একটি মেয়ের ঘটনাবহুল জীবনের হৃদয়স্পর্শী গল্প। এখানে প্রেম এসেছে আশীর্বাদ হয়ে এবং চিরায়ত পবিত্র রূপে। আবার ভয়ানক মর্মব্যাথা নিয়ে মৃত্যুও হাজিরা দিয়ে গেছে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে ফুটে উঠেছে একটি মেয়ের জীবনের নানা মোড় আর তার জীবনসংগ্রাম। সবমিলিয়ে কিশোর উপন্যাস ‘জেন আয়ার’ সব বয়সী পাঠককে আবেগে আপ্লুত করবে। আর হ্যাঁ, এটা সত্যিকার প্রেমের নির্যাস ধারণ করে যা আমাদের আধুনিক প্রেমদর্শনের বাইরে চিন্তা করতে ইতিবাচকভাবে প্রোরোচিত করবে।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×