প্রিয় উপন্যাস, গল্প নিয়ে লিখতে সবসময়েই ভালো লাগে। ইদানীং কর্মজীবনের নিদারুন ব্যাস্ততায় প্রিয় ব্লগে তেমন একটা লেখা হয় না তবে মাঝে মাঝেই ঢু মেরে যাই। বই পড়বার অভ্যাসটা কিন্তু আগের মতই অটুট আছে। দারুন ব্যাস্ততার মাঝেও পড়ার জন্য কিছু সময় প্রতিদিনই বরাদ্দ রেখে দেই। আজ অনেক দিন পর লিখছি। লিখছি আমার অনেক প্রিয় একটি উপন্যাস "পার্থিব" নিয়ে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর এই সুবৃহৎ উপন্যাসটি পড়ে শেষ করলাম বেশ কিছুদিন আগে। শীর্ষেন্দুর "দূরবীন" আর "মানবজমিন" এই দুটি উপন্যাসও পড়েছি কিন্তু পার্থিব শেষ করার পর কিছুক্ষণ ঘোরের মধ্যে ছিলাম। সুবৃহৎ এবং অসাধারণ এই উপন্যাস এর শুরু পশ্চিমবাংলার এক অখ্যাত গ্রাম এ নিজ ঘরের উঠোনে বসে বিষ্ণুপদ এর তার ছেলে রামজীবন এর তৈরি অর্ধসমাপ্ত ঘরের দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকার মধ্যে দিয়ে এবং এর পর অসংখ্য চরিত্র অসংখ্য জীবনের গল্প, দুঃখ, সুখ, দারিদ্র, মধ্যবিত্ত জীবন, না পাওয়ার বেদনায় উপন্যাসের সব চরিত্রগুলো বাঁধা পড়েছে এক সুতোয়- মিশেছে এক মোহনায়।
জানিনা ব্লগ এর বাকি বই পড়ুয়াদের এই অভ্যাস আছে কি না; তবে আমি যখনই কোনও বই পড়া শুরু করি- হোক সেটা গল্প বা উপন্যাস, যখনই কোনও লাইন বা উক্তি ভালো লাগে তা মার্কার পেন দিয়ে দাগিয়ে রাখি। সাতশত তের পৃষ্ঠার সুবৃহৎ উপন্যাস পার্থিব পড়ার সময়ও কিছু লাইন একদম মনে গেঁথে যায়। আর আমার মনে হয়, অন্য পাঠকদেরও এই লাইনগুলো মন ছুঁয়ে যাবে- তাই আমার ব্লগ বন্ধুদের সাথে আমার ভালোলাগা ভাগ করে নেয়া আরকি।
অনেকেই হয়তো পড়ে ফেলেছেন এই অসাধারণ উপন্যাসটি। যারা এখনও এই উপন্যাসটি পড়েননি তারা এই অসাধারণ কথাগুলো যা পার্থিব উপন্যাস এর বিভিন্ন অংশ থেকে নেয়া- একবার দেখে নিয়ে উপন্যাসটি নিয়ে বসতে পারেন।
পার্থিব উপন্যাসে আমার অসাধারণ ভালো লাগার কিছু লাইনঃ
১. তোমরা যে শান্তির কথা ভাবো সেটা হল নিস্তরঙ্গতা, নিশ্চেষ্টতা, নিথরতা। আমি যখন কোমার মধ্যে ছিলাম তখন তো আমার ওইরকম শান্তিই ছিল। চিন্তা নেই, ভাবনা নেই, ফ্রিকশন নেই, টেনশন নেই। মরে গেলে তো আরও চমৎকার শান্তি, একদম ঠাণ্ডা। বেঁচে থাকাটা কিন্তু নিছক শান্তি নয়। নিরন্তর সূক্ষ্ম বা স্থূল কিছু-না-কিছু ফ্রিকশন হয়েই যাচ্ছে। তুমি ভার্সাস তোমার পারিপার্শ্বিক। তুমি ভার্সাস তোমার আইডিয়াজ। তুমি ভার্সাস তোমার অতীত ও বর্তমান। তুমি ভার্সাস ভাল অথবা মন্দ। যদি জীবন বিমুখ হয়ে একটা কোটরের মধ্যে নিজেকে ভরে রাখতে পারো তাহলে তুমি তোমার মতো শান্তি পেয়ে যাবে। আর যদি খোলা জীবনের মধ্যে এসে দাঁড়াতে চাও তাহলে সংঘর্ষ হবেই।
২. মৃত্যু একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। নিত্যনৈমিত্তিক, তবু প্রতিটি মৃত্যুই মানুষকে কিছু বলতে চায়। কোনও একটি সত্যর দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে চুপ করে থাকে। মৃত্যুর কোনও উচ্চারন নেই, তবু অস্ফুট কিছু নীরবে বলেও যায়।
৩. ম্যাটাডর ভ্যানে একটি তুচ্ছ মৃতদেহ ভোঁ-ভোঁ করে শ্মশানমুখো যখন ছুটছে তখন কলকাতার রাস্তাঘাটে অফিসের ভিড়। মৃত্যুর মতো মহান ঘটনাও কলকাতার ব্যস্ততার কাছে তুচ্ছ। মৃত্যু কত অর্থহীন, কত গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে ডবলডেকার, বাস, ট্যাক্সির ব্যস্ত রাস্তায়।
৪. ইগো একটা পাজি জিনিস। মৃতদেহের দাহ শেষ হবার পরও একটা পিণ্ডাকার জিনিস থাকে। সেটা পুড়ে পুড়ে শেষ হতে চায় না। লোকে ওটাকে বলে অস্তি। অর্থাৎ যার লয় ক্ষয় নেই। ইগো ঠিক ওরকম। তবে সংসারী তার ইগোকে পুষে রাখে, তাকে যত্নআত্তি করে। যেন পোষা পাখি। আর সন্ন্যাসী তার ইগোকে তাড়ানোর একটা চেষ্টা অন্তত করে। সেটাই তার তপস্যা।
৫. -তুমি সারাক্ষণ একদৃষ্টে ওই ঘরখানার দিকে চেয়ে কি দেখ বাবা?
-ওটার মধ্যে মানুষের একটা লড়াই আছে যে। মানুষ কত চেষ্টা করে, সব কি হইয়ে তুলতে পারে? খানিকটা হয়, খানিকটা হয় না। চেয়ে চেয়ে দেখি। আমার আর কি দেখার আছে বল?
৬. একেই কি ভোর বলে- যেমনটা সে কলকাতায় কখনও দেখতে পায় না? এত অপরূপ! দিগন্ত থেকে দিগন্তে হালকা কুয়াশার মায়াজালে জড়িয়ে অস্ফুট ভোরের আলো কত ম্যাজিক দেখাতে থাকে। দুখানা চোখ আজ দৃশ্যর ঐশ্বর্যে ডুবে গেল তার। প্রকৃতির এত অলঙ্কার আছে জানত না সে। কালো নদীর উপর সোনালী আলপনা এঁকে উঠে আসছে সূর্য। পলক ফেলতে পারে না হেমাঙ্গ। আবেগে তার শ্বাসকষ্ট হতে থাকে।
৭. বাঙালিদের প্রেম হল সবচেয়ে বড় অ্যাডভেঞ্চার আর বিয়ে হল মস্ত কীর্তি।
৮. দলের মধ্যে সে ছিল সবচেয়ে কম কথা আর বেশি হাসির মেয়ে। দেখতে ভীষণ সুন্দর। তবে সে সৌন্দর্য উত্তেজক বা উত্তপ্ত নয়। একটু যেন শীতলতা মাখানো। হয়তো ক্লাসিক কিন্তু এরোটিক কিছুতেই নয়।
৯. এক একটা দিন যেন পাষাণভার নিয়ে আসে। সারাটা দিন যেন দমচাপা, পাগল-পাগল, বিচ্ছিরি। এরকম সব বিচ্ছিরি দিনে মাঝে মাঝে অপর্ণার ইচ্ছা করে কেরোসিনে স্নান করে একটা দেশলাই কাঠি ঘষে দেয় নিজের শরীরে।
১০. একটা নদী কত কী করতে পারে! পালটে দেয় জীবনের দর্শন, বদলে দেয় মনের অবস্থা। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে চয়ন যে আদিগন্ত বিস্তারকে দেখছিল তেমনটি কলকাতার গলিতে বন্ধ তার আশৈশব জীবনে সে দেখেনি। তার রোগক্লিষ্ট, অভাবতাড়িত জীবনে প্রকৃতির শোভার কোনও স্থানই ছিল না। এক থালা ভাতের শোভা অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল তার। একখানা বাড়তি টিউশনি পাওয়াই ছিল জীবনদর্শন। চারুশীলার কল্যাণে এই আঘাটায় এসে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে পৃথিবীর মহত্ত্ব উপলব্ধি করে সে বুঝল, কলকাতায় এতকাল ধরে যে জীবন সে যাপন করে এসেছে তা হল এক পশুর জীবন।
১১. একা প্রায়ান্ধকার কামরায় জানালার পাশে বসে সে আজ উপভোগ করছিল এই একাকীত্বকে। বিশাল বিশ্বজগতের কথা যখনই সে ভাবতে শুরু করে তখনই তুচ্ছ হয়ে যায় তার সব প্রিয়জন, তার চাকরি, সাফল্য, প্রতিষ্ঠা। এক দিশাহীন অতল অন্ধকারে আচ্ছন্ন অসীম আর মহাকাল- যার শুরু নেই, শেষও নেই- তাকে এসে সম্মোহিত করে দেয়।
১২. আমরা কেউ কোনও অবস্থাতেই স্বাধীন নই। স্বাধীনতা একটা রিলেটিভ ধারনা মাত্র। এক ধরনের আই ওয়াশ। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা মানেই চাকরির অধীনতা, সেখানেও হুকুম করবার লোক আছে, বাধ্যবাধকতা আছে। পুরো স্বাধীনতা কোথাও নেই।
১৩. এই সেই পুরুষ যে স্ত্রীর কাছে কেবলই আশা করে বশ্যতা, মুগ্ধতা, নতশির দাসত্ব, প্রত্যুতরহীন অপমানের পাত্রী। এই সেই পুরুষ যারা গুহামানবের উত্তরাধিকার এখনও রক্তে বহন করে। যারা শয্যাসঙ্গিনী ছাড়া স্ত্রীকে আর কিছুই ভাবতে পারে না। এদের চাই একটি সুন্দরী জ্যান্ত রক্তমাংসের পুতুল।
১৪. -তুমি বোধহয় এবার আমাকে নারীমুক্তির কথা শোনাবে! শোন বোকা মেয়ে, নারীমুক্তি বলে কিছুই নেই। প্রতি মুহূর্তেই পুরুষকে তার দরকার। কোনও মেয়ে যদি তার স্বামীকে না মানে, স্বাধীন হয়, তবে অন্য পুরুষরা তাকে ছিঁড়ে খাবে। স্বাধীন মেয়ের মতো এমন সহজ ভোগ্যবস্তু পুরুষের আর কি আছে ? বহুভোগ্যা হলে কি স্বাধীন হওয়া যায়? !
-তাহলে মা, তুমিই স্বীকার করছ যে, পুরুষরা পশুর মতই। সুযোগ পেলেই মেয়েদের ছিঁড়ে খায়। তাহলে এই জাতকে মেয়েরা প্রভুর আসন দিবে কেন?
-উপায় নেই বলে। পৃথিবীতে মেয়েদের আর কোনও উপায় নেই, তাই ওই নিয়ম মানতে হয়। মেয়েতে মেয়েতে তো আর বিয়ে হয় না!
১৫. প্রেম জিনিসটা কম দামী সেন্টের মতো, গন্ধ টপ করে উবে যায়। একজন চিন্তাশীল, কল্পনাপ্রবন মানুষ বিয়ের পর হয়ে যায় শ্রমিকের মতো। প্রেমের সমাধির উপরেই তো বিয়ের সৌধ।
১৬. বিয়ে, প্রেম ইত্যাদি তামাদি হয়ে যাচ্ছে দুনিয়ায়। ইউরোপ আমেরিকা অস্ট্রেলিয়ায় প্রেম কবেই নির্বাসনে গেছে। আছে কেবল দগদগে যৌন সম্পর্ক। ওই সম্পর্কের দিকেই ঝুঁকে পড়ছে মানুষ। বিয়ে করছে না, একসঙ্গে থাকছে, ছেলেপুলে হচ্ছে, বাঁধা পড়ছে না। পৃথিবীর ভবিতব্য কি তাহলে ওটাই? কুকুর বেড়ালের মতো শুধু দেহের প্রয়োজনে একসঙ্গে হওয়া এবং ফের আলাদা হয়ে যাওয়া, ইচ্ছে হলেই?
১৭. আচমকা যে কাণ্ডটা করে বসল অনিন্দিতা তার কোনও যুক্তিসিদ্ধ অর্থ হয় না, না হয় তার কোনও ব্যাখ্যা। খুবই অকস্মাৎ সে দুই হাতে চয়নের দুটো কাঁধ ধরে নিজের শরীরের দিকে টেনে নিল তাকে। খোলা, বিপজ্জনক ছাদে তার দুখানা ঠোঁট চেপে বসে গেল চয়নের ঠোঁটে। কয়েকটা অদ্ভুত মুহূর্ত। তারপরই তাকে ছেড়ে দিল অনিন্দিতা।
১৮. নিজের ঘরে দোতলায় এসে একটা আরামের শ্বাস ছাড়ল হেমাঙ্গ। স্থানের মায়া কেন তা সে বুঝতে পারে না। এই যে ঘরদোর, বারান্দা, চেয়ার টেবিল, চেনা আসবাব এদের কি সত্তা আছে ? নইলে এত টানে কেন ? কেন এই চেনা বাড়িতে ফিরে এসে তার এত স্বস্তি ? কী আছে এখানে?
১৯. এই ভালবাসাটাকে ব্যাখ্যা করতে পারে না হেমাঙ্গ। রক্তের সম্পর্ক নয়, মনিব-ভৃত্যর সম্পর্ক, তবু তার কিছু হলে ফটিক কাঁদে কেন ? এইসব সামান্য সামান্য জিনিসের জন্যই বোধ হয় আজও মানুষের বাঁচতে ভালো লাগে।
২০. প্রবন্ধে সে এক জায়গায় সভ্যতার অভ্যন্তরে স্ববিরোধের উদাহারন দিতে গিয়ে বলেছে, টিভিতে দেখতে পাচ্ছি ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি, মর্টার, রকেট, বোমার আক্রমনে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে শহর, মরছে মানুষ! আবার তার ভিতরেই রেডক্রস এসে তুলে নিয়ে যাচ্ছে হতাহতদের, মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে মানুষ দুটো কাজই করছে কি করে? মারা এবং বাঁচানোর চেষ্টা? এখনও পৃথিবীতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যুদ্ধাস্ত্র তৈরি হচ্ছে, চলছে মারনাস্ত্র তৈরির গভীর গবেষণা। এখনও অস্ত্রের বাজার রমরম করছে দক্ষিনী দেশগুলিতে। সভ্যতা তাহলে কত দূর এগোল? কোন দিকে এগোল?
২১. কে জানে! জীবন এত অনিশ্চিত বলেই না এত ভাল এই জীবনযাপন !
২২. এ শহরের একটা সাঙ্ঘাতিক নেশা আছে ! চট করে কলকাতাকে জীবন থেকে মুছে ফেলা যায় না।
২৩. শীতের সকালে কলকাতা যেন তারই অপেক্ষায় সেজে বসে আছে। সাজ কিছুই নয়, একটু রোদ, লোকজন, একটু ঠাণ্ডা হাওয়া। সেই পুরনো কলকাতাই। তবু যেন এক আবিষ্কারকের চোখে নতুন ভূখণ্ড দেখল চয়ন।
২৪. কলকাতা একটা অদ্ভুত শহর। এর নিশ্চই নিজস্বতা কিছু আছে। এই শহরে যারা একবার বসবাস শুরু করে তারা আর অন্য কোথাও যেতে আগ্রহ বোধ করে না। গেলেও তারা কলকাতায় ফিরে আসার কথাই বোধ হয় ভাবে। কিন্তু আমার মনে হয় লন্ডন, নিউ ইয়র্ক বা মস্কোও কি তাই নয় ? এইসব শহরের অধিবাসীরা কেউ আর কারও মতো নয়, প্রতিটি শহরেরই পরিবেশ ভিন্ন, ভিন্ন তাদের ভূগোল ও ইতিহাস, ভিন্ন তাদের জীবনযাত্রা। লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, মস্কো বা কলকাতা কেউ কারও মতো নয়। আবার এক অর্থে ওরা সবাই সেই মহানগরী- সেই নরক, যাকে হিন্দুশাস্ত্রে বলা হয় কুম্ভীপাক। যার মধ্যে হাজারো রকমের মানুষকে মিশিয়ে পাক খাওয়ানো হচ্ছে নানা জীবিকায়, নানা মতলবে, নানা আশা বা বঞ্চনায়।
আমি এইসব শহরের চুম্বকের মতো আকর্ষণের কথা ভেবেছি। কিসের এই আকর্ষণ? জীবিকা? বৃহত্তর সুযোগ? নানা সম্ভাবনা? হ্যাঁ, এ সবই সত্যি। কিন্তু এর অতিরিক্তও কিছু আছে। মহানগর মানেই একটি জঙ্গম, চলিঞ্চুতা। এখানে সারাক্ষণ একটা জীবনের প্রবাহ চলেছে, চলেছে নানা কর্মকাণ্ড। এই জঙ্গমতাই কি আকর্ষণ করে মানুষকে?
২৫. পোশাক মানুষকে ততটা সুন্দর করতে পারে না, যতটা পারে অভ্যন্তরীণ আনন্দের আভা যখন বিকীর্ণ হয় তার অবয়বে।
২৬. মানুষ সবসময়েই চেষ্টা করে, তার যত দুর্বলতা, যত বৃত্তি- প্রবৃত্তির তাড়না, যত লভ-লালসা সব কিছুকেই একটা যুক্তিসিদ্ধ ভিতের উপর দাঁড় করাতে। সে হয়তো জানে, মনে মনে জানে, কাজটা ঠিক হচ্ছে না। তবু নানা পাল্টা যুক্তি দিয়ে সে সেটাকে সমর্থন করার পথ খোঁজে। ভেবে দেখলাম মানুষ নিজের দুর্বলতাকে ছাড়তে চায় না। সে নিজে দুর্বলতাগুলিকে বড় ভালবাসে। ভালবাসে বলেই তাদের গৃহপালিতের মতো পুষে রাখে।
২৭. ভালবাসা এক অনুশীলনসাপেক্ষ ব্যাপার। ভাবের ভালবাসা বেশিক্ষন থাকতে পারে না। যাকে ভালোবাসো তার জন্য কিছু করো। তাকে কিছু দাও। রোজ দাও। প্রতিদান চেও না।
২২,২৩,২৪ এ বলা কথাগুলো কি আমার প্রিয় ঢাকা শহরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য নয়? আমরা যারা জন্ম থেকে ঢাকাতেই বড় হয়েছি তারাই হয়তো মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারব এই কথাগুলো।
আজকের মতো তাহলে বিদায়।