মানুষের বহু বিচিত্র শখ এর মধ্যে ডাকটিকিট সংগ্রহ একটি অন্যতম জনপ্রিয় শখ। ডাকটিকিট সংগ্রহের মাধ্যমে শখের ও পেশাদার সংগ্রাহক উভয়েই একটি দেশের কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারে- তাছাড়া এটি একটি সুস্থ বিনোদনও বটে। ডাকটিকিট এর শখ সেই স্কুল থেকেই- এখনও সময় পেলে নিউ মার্কেট এ চলে যাই নতুন পুরনো ডাকটিকিট কিনে আনতে। যদিও পেশাদার সংগ্রাহক নই আমি- তবুও আমার ক্ষুদ্র সংগ্রহ গুলো দেখলে ভালোই লাগে। চেষ্টা করছি আমার সংগ্রহ আরও সমৃদ্ধ করতে।
বৃটেনের রোল্যান্ড হিলকে ডাকটিকেটের জনক বলা হয়। ১৮৩৭ সালের কথা, সে সময় প্রেরককে নয় প্রাপককেই ডাক মাশুল দিতে হত। চিঠির পাতার সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে ডাক মাশুল নির্ধারিত হত। প্রাপক অনেক সময় বিভিন্ন টালবাহানা করে ডাক মাশুল দিতে চাইতো না। এসব অসুবিধা দূর করতে রোল্যান্ড হিল ডাক বিভাগের সংস্কারে বিভিন্ন প্রস্তাব আনেন, যার অন্যতম ছিল ডাক টিকেটের প্রচলন।
১৮৪০ সালে তাঁর প্রস্তাবানুসারেই প্রাপকের পরিবর্তে প্রেরক কর্তৃক ডাকমাশুল দেবার রীতি প্রবর্তন করা হয়। ওজনের ভিত্তিতে ডাক মাশুল দেবার পদ্ধতিও এ সময় চালু করা হয়।
১৮৪০ সালের ১লা মে বৃটেনে বিশ্বের প্রথম ডাকটিকেট "পেনি ব্ল্যাক" প্রকাশিত হয়। বৃটেনের রানীর প্রতিকৃতি ছিল সেই ডাকটিকেটে।
আমার স্ট্যাম্প এ্যালবামঃ
আরও কিছু তত্থঃ
* ১৮৫২ সালে বর্তমান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে উপমহাদেশের প্রথম ডাকটিকেট চালু হয়। উল্লেখ্য এটি এশিয়ারও প্রথম ডাকটিকেট।
* সিন্ধু প্রদেশের ডাকটিকেটের ধারাবাহিকতায় ১৮৫৪ সালে ভারতের প্রথম ডাক টিকেট প্রকাশিত হয়।
* ভারত ভাগের পর ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম ডাকটিকেট প্রকাশিত হয়। এর পূর্ব পর্যন্ত বৃটিশ ভারতের ডাকটিকেটের ওপর ইংরেজীতে পাকিস্তান লিখে কাজ চালানো হচ্ছিল।
* ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই ২৯শে জুলাই বাংলাদেশর প্রথম ডাকটিকেট প্রকাশিত হয়। লন্ডন প্রবাসী ভারতীয় বাঙালী বিমান মল্লিক বিনা পারিশ্রমিকে আটটি ডাকটিকেটের ডিজাইন করে দেন। ১০ পয়সা, ২০ পয়সা, ৫০ পয়সা, ১ রুপি, ২ রুপি, ৩ রুপি, ৫ রুপি এবং ১০ রুপি মূল্যমানের আটটি ডাকটিকেটের ডিজাইন করেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের সাহায্যার্থে ১০ রুপির ডাক টিকেটের ওপর তিনি লিখে দেন ‘Support Bangladesh’। এখন স্বাধীন বাংলাদেশে ২৯শে জুলাই ডাকটিকেট দিবস হিসেবে পালিত হয়।
তথ্যসূত্র ঃ
* ডাকটিকিট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও ইতিহাস ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত।
১ লা জুলাই, ২০১৬ শুক্রবার গুলশান এর হলি আর্টিসান রেস্তরাঁয় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মনটা বিধ্বস্ত। বাংলাদেশে কখনও এরকম ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ দেখতে হবে কল্পনাও করি নি। ঈদ এর আগে এই নারকীয় ঘটনা আনন্দ অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে। এই নারকীয় হামলায় আমাদের যে বিদেশী বন্ধুরা নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন তাদের আত্মা শান্তি পাক। ফারাজ আইয়াজ, ইশরাত , অবন্তি, তারশি জৈন এর আত্মা শান্তি পাক। "অন্ধকারের উপর আলোর, নির্মমতার উপর মানবতা এবং মৌলবাদ এর উপরে প্রগতিশীলতার বিজয় হোক।"
সবাই নিরাপদে থাকুন। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মুবারাক।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮