আমি সামি । সামিউল আলম সামি ।গাজীপুরের কোন এক অখ্যাত কলেজে পড়ি ।একটু আগোছাল টাইপের ।মোটামুটি পাগল কিসিমের ।আমার এই আগোছাল লাইফের সবচেয়ে বড় পাওয়া হল রাইসা ।আমার ভালোবাসা .ভালোবাসা না বলে জীবন বললেও কম হয়ে যাবে । হ্যা ওকে আমি জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি । আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আর রাইসা বড়লোক বাবার একমাত্র সন্তান ।আমি জানি আমাদের এই সম্পর্ক কেউ মেনে নেবে না ।কোথায় চাঁদ আর কোথায় বামুন ।রাইসার বাবা জানলে হয়ত চাঁদের দিকে হাত বাড়িয়েছি বলে হাতই কেটে নেবে । ওই কারনেই মনে হয় আল্লাহ মানুষের হাত দুইটা দিছে একটা কাইটা নিলে ব্যাকআপ হিসেবে আরেকটা থাকব ।ধুর কি লিখতে কি লিখতেছি ।ও রাইসার সাথে পরিচয়টা হয়েছিল অদ্ভূদ ভাবে। সেদিন ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু আমার জন্য ছিল অমঙ্গল একটা দিন। মঙ্গলবার. আবার আমাদের. প্রাণীবিজ্ঞান ক্লাশ ছিল সকাল নয়টা থেকে। কিন্তু কেনো যেনো সেদিন ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। উঠে দেখি আটটা চল্লিশ বাজে। কোন রকমে মুখ ধুয়েই দৌড়। গিয়ে দেখি ম্যাম লেকচার দিতেছে। আমদের এই ম্যাম আবার সেইরাম সুন্দরী। যার কারনে আমরা কেউ তার ক্লাশ মিস করতে চাই না। ম্যাম দেখি আজ আবার লাল শাড়ী পরে এসেছে। লাল হল আমার প্রিয় কালার। আমি ম্যামের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। এদিকে ম্যাম যে আমাকে ডাকতেছে আমি সেই তাইলেই না।
...এই যে মিঃ ঘুম বাবু, কি দরকার ছিল এত সাধের ঘুম নষ্ট করে এই হাবিজাবি ক্লাশে আসার।
...সরি ম্যাম, আসলে অনেক রাতে ঘুমিয়েছি তো তাই উঠতে দেরি হয়ে গেছে।
.....তো রাতে কি করা হচ্ছিল শুনি?
....ম্যাম আসলে কাল বুয়া ছিলোনা, তাই আমরাই রান্না করছি, সেজন্য ঘুমাইতে দেরী হইছে।(পুরাই মিথ্যা)
...তো একটা বিয়ে কইরা নেন?
...ম্যাম আপনি রাজি থাকলে আজি বিয়া করুম (মনে মনে)
....দেরীতে আসার কারনে আজ তোমাকে ক্লাশে ঢুকতে দেয়া হবে না, তাই ভদ্র ছেলের মত চলে যাও।
...ওকে ম্যাম।
ক্লাশের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে তাদের দাত গুলো যে কত পরিস্কার তার দেখিয়ে দিল।
যেহেতু ভদ্রতা নিয়ে কথা তাই চলে আসতে বাধ্য হলাম।
পেট ক্ষুধায় চো চো করতেছে. কারন কাল রাতে কিছুই খাই নাই।
শার্লক হোমসের একটা বইয়ে পড়ে ছিলাম যে, না খেয়ে থাকলে নাকি মস্তিষ্ক তীক্ষ্ণ হয়। সেটা প্রমান করতেই কাল রাতে খাই নাই।
মস্তিষ্ক তীক্ষ্ণ হয়েছিল কিনা জানিনা, তবে এখন যে খুব, ক্ষুধা লাগছে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাইতেছি। তারাতারি কিছু খাওয়া দরকার। না হলে ব্যাটারী আআবার শাটডাউন মারব।
গেলাম লেকের পশ্চিমের.রহিম মামার চায়ের দোকানে।
..কি অবস্থা মামা (দোকানদার)
..এইত মামা আছি আরকি
...কি খাইবেন মামা?
...দুইটা বিস্কুট আর কররা কইরা একটা দুধ চা।
...এই নেন বিস্কুট খাহতে থাহেন, আমি চা বানাইতাছি
..দাও
...এই যে মামা চা...
বসে বসে চা খাচ্ছি এমন সময় কে যেন আমার পায়ে ওপর পাড়া দিয়ে দাড়াল।
আমি আবার এই কাজটা একদমই সহ্য করতে পারিনা। এমনি সকাল থেকে আমার মেজাজ ৪৪০ ভোল্ট হয়ে আছে, এখন আবার এই অবস্থা। মাথাতো আমার পুরাই খারাপ হয়ে গেল। নিজেকে কোন রকম সামলে নিয়ে বললাম আপু একটু সরে দাড়ান।
..ওহ সরি, আপনার লাগেনি তো?
..না একদমই না। কোনদিন কোথাও শুনেছেন চাকু জুতা(হিল) দিয়ে পায়ে পাড়া দিলে লাগে কখন?
..না আমি আসলে বুজতে পারিনি।
...আপনি যে এখনো বুজতে পারেননি সেটা আমি ভালভাবেই বুজতে পারতেছি। দয়া করে পা টা সরান না হয় আমিই সরানোর ব্যবস্থা করব।
..ও হ্যা, সরি।
রাগে সেখান থেকে চলে আসলাম। বড়লোক একটাই সমস্যা। তারা বুজেও না বোঝার ভান করে।
সালার ফোনটাও আনি নাই. যে ফেইসবুকে গুতাগুতি করমু। ভাবলাম বকুল গাছতলায় গিয়ে বসে থাকি। যেই গিয়ে বসেছি অমনি পেছন থেকে কে যেনো ডাক দিলো
,... এই যে শুনছেন?
আমি আশে পাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই.
...আমি আপনার পেছনে।
রিনরিনে গলায় কেউ বলে উঠল
পেছনে তাকিয়ে দেখি সেই টং দোকানের সেই মেয়েটি।
আমি মেয়েটিকে দেখেও না দেখার ভান করলাম। তারপর মেয়েটি দেখি আমার সামনে এসে বলল হাই..
আমি বললাম, আবার পায়ে পাড়া দিতে এসেছেন নাকি?
..না না, আসলে আমি সরি।
..দেখুন এ নিয়ে আপনি অলরেডি তিন বার সরি বলেছেন।
...ও হ্যা, ওকে আর বলব না। বাই দ্যা ওয়ে বসতে পারি
...যায়গাটা তো আর আমার বাবার না। সো যে কেউ বসতে পারে।
...থ্যাঙ্ক ইউ। আমি রাইসা, তাবাসসুম রাইসা। আপনি?
...সামিউল আলম
..Nice to meet you..!
..Me too.
...কোন ইয়ারে পড়েন আপনি?
..BSC 2nd ইয়ার, আপনি?
..আমিও।
.. ক্লাস হচ্ছে তো, ক্লাস করেন না?
..দেরিতে আসছি বলে ঢুকতে দেই নাই, আপনি ক্লাস করেন না কেনো?
..আমার ও একি সমস্যা, আমাকেও ঢুকতে দেই নাই।
..বাহ!! একি সমস্যা আমাদের দুজনের।
না আমার সমস্যা একটা বেশি।
...কি?
আপনি যে আমার পায়ে পাড়া দিছেন, কিন্তু আপনি তো আর পাড়া খাননি।
..ও.. আপনার কি আবার প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছা আছে নাকি?
...না, কিন্তু আমি জীবনে কারো পাওনা কোন দিন বাকি রাখি নাই।
..ও...... কি???
...না কিছু না।
.....ফ্রেন্ডস... বলে হাত বাড়িয়ে দিল
..হমম ফ্রেন্ডস.....
সেই থেকে আমরা বন্ধু..?
ভালই চলতে থাকে আমাদের বন্ধুত্ব। যতক্ষন ক্যাম্পাসে থাকি সব সময় ওর সাথে আমার ঝগড়া লেগেই থাকত। ঝগড়া না করলে যেন আমাদের পেটের ভাত হজম হত না. ভালই ছিলো সেই দিনগুলো।
তারপর হুমায়ুন স্যারের কথাই সত্যি হল।, যে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কখনই বন্ধু হয়ে থাকতে পারবেনা, একটা সময় তারা প্রেমে পরবেই।
আমরাও প্রেমে পড়লাম, পড়লাম বলতে ভালোভাবেই পরলাম।
ভালই চলতেছিল আমাদের প্রেম। অনেক ভালবাসত আমাকে পাগলীটা। বুঝতেই পারিনি ও একদিন আমার সাথেই বিশ্বাসঘাতকতা করবে।?কি করেই বা বুঝব, আমি তো ওর প্রেমে অন্ধ ছিলাম, পাগলের মত ভালবাসতাম ওকে।
হ্যা রাইসা আমাকে ধোঁকা দিয়েছে।
আমি এখন ওর কাছে একটা লুজার। ও আমাকে রেখে এখন অন্য ছেলের সাথে ঘুরে বেড়ায়। শুধু ঘুরে বেড়ায় না আরো মাখামাখি সম্পর্ক। ছেলেটির নাম আবির। বড়লোক বাবার প্লেয়বয় সন্তান। কত মেয়ের যে জীবন নষ্ট করেছে তা সে নিজেও জানে না।
রাইসাও সেই ফাদে পা দিয়েছে। অনেক বুঝিয়েছি তাকে, কিন্তু কে শোনে কার কথা।
আমি নাকি ক্ষ্যাত, লুজার।
আমি পারিনি তাদের এই ভালোবাসা মেনে নিতে।
সবাই বলে ভালবাসার মানুন সুখে থাকলেই নাকি নিজের সুখ। এটা আসলে কারো মনের কথা না। এই কথাটা কেউ মন থেকে বলে না। এটা অবচেতন মনকে সান্ত্বনা দেয়ার.বৃথা চেষ্টা।
আমি পারিনি আমার মনক শুধু সান্ত্বনা দিতে।
আমি প্রতিশোধ নিয়েছি। আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশোধ।
কিডনাপ করেছি আবির আর রাইসা কে।
আমি আবার এই কাজে খুব পাকা। কারন এই কাজ আমার জন্য প্রথম না। এর আগেও আমি এই কাজ অনেক করেছি। কিন্তু সে গুলো করার সময় আমার সাথে বন্ধুরা ছিলো, আর এবার কাউকে না জানিয়ে। কারন আমার এই ঘটনার কোন সাক্ষী বা প্রমান রাখতে চাই না।
এখন আমি আছি গাজীপুরের এক পোড়াবাড়িতে। আমার সামনে দুটি চেয়ার।
একটাতে রাইসা আর একটাতে আবির। রাইসার এখন জ্ঞান ফেরেনি আর আবিরের এই মাত্র জ্ঞান ফিরেছে। এক ঢিলে এবার দুই পাখি মারব। তাদের মাথার ওপরে জিরো ওয়াটের একটা লাল বাল্ব জ্বলছে। লাল আলো আমার খুব প্রিয়। দুজনকে দেখতে ভালই লাগছে। রাইসা নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। দেখতে খুব নিস্পাপ মনে হচ্ছে। কেউ ভাবতেই পারবেনা ওr মন কতটা নিষ্ঠুর।
আমি বোতল থেকে হালকা পানির ছিটা দিতেই সে হালকা ঝাকি দিয়ে চোখ পিটপিট করে তাকালো।
আমি কোথায়? (রাইসা)
আমি চুপ করে থাকলাম। ও একটু ভাবতে থাকুক। মানুষকে মেন্টালি টর্চার করতে আমার ভালো লাগে।
আবিরো বিড়বিড় করে কি যেন বলতেছে। জোরে বল্বেই বা কি করে টর্চার তো আর কম করিনি। পাশের ব্র্যান্ডির বোতল থেকে একটু ব্র্যান্ডি তার গলায় ঢেলে দিলাম।
আমি কোথায়? (রাইসা)
....চিনতে পারছ আমাকে (আমি)
....সামি!!!! তুমি?
...হুমম, আমি। চিনতে পেরেছ তাহলে।
...কি হচ্ছে এসব, আর আমাকেই বা ধরে এনেছ কেন? আবির!! তুমি ঠিক আছ তো?
...ওর চুলের মুঠি ধরে বললাম, কষ্ট লাগে?
...কু**র বাচ্চা ওরে এখানে এনেছিস কেনো?
.....আমি মাথা. যথেষ্ট ঠান্ডা রেখে বললাম, একটু পরেই সব বুঝতে পারবে।
আবির কে ব্র্যান্ডি খাওয়ানোর কারনে সে একটু স্বাভাবিক হল।
আমি তাদের দুজনকে আলাদা কথা বলার সুযোগ দিয়ে আমি আরেক রুমে চলে আসলাম।
ওই রুমে আমি একটা ব্লুটুথ ক্যামারা লাগিয়ে রেখেছি, যেটা আমার মোবাইলের সাথে কানেক্ট করা। ওরা কি করছে ও বলছে আমি সব. জানতে পারব।
...আবির, এই আবির...
...হুম.ম
...আবির তুমি ঠিক আছ?
...হমম, তুমি এখানে কেনো?
...ওই কু***র?? নিয়ে আসছে। কিন্তু তুমি কিভাবে?
...কাল রাতে বাসায় ফেরার সময় পেছন থেকে কে যেনো ডাক দেয়, আর আমি পেছনে ঘুরিতেই আমার মাথায় শক্ত কিছু দিয়ে কে যেন আঘাত করে, তারপর জ্ঞান ফিরে দেখি আমি এখানে। ওই মাদা***দ টা আমাকে অমানষিক ভাবে মেরেছে। আমার বাবা যদি একবার যানতে পারে তাহলে ওর চৌদ্দ গুষ্টির খবর করে ছারবে।
.....সরি মিঃ আবির সেটা মনে হয় আর হবে না। (আমি)
....তোমার বাবা যখন জানতে পারবে তখন আমার কিচ্ছু ছিড়তে পারবে না।
...কারন তখন আমরা কেউ থাকবনা।
...মানে?
...Wait Mr. Abir wait.....
.....এতক্ষনে রাইসা মুখ খুলল..
...ছেড়ে দাও ওকে সামি প্লীজ
....ছেড়ে তো অবশ্যই দেবো প্রিয়তমা। একেবারেই ছেড়ে দেবো।
....প্লীজ সামি এরকম কিছু করোনা প্লীজ।
..না আমি ওকে তেমন কিছু করব না, ওর সাথে আমার কিছু বোঝাপরা করার আছে।
এবার আমি আর টুল বক্স হাতে নিয়ে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে আবিরের সামনে গিয়ে বসলাম।
এর আগে একবার এই টুল বক্স টা খুলতে হয়েছিল, কারন এর সব যন্ত্রপাতিতে রাইসার হাতের ছাপ নিয়েছি।
...মিঃ আবির, কেমন লাগছে (আমি)
....আমায় ছেড়ে দে বলছি, ভালো হবে না কিন্তু.!!(আবির)
...রিল্যাক্স মিঃ আবির রিল্যাক্স...এই বলে টুল বক্স থেকে ফিঙ্গার কাটার আর প্লাস্টিক টেপ বের করে ওর মুখে আমি টেপ লাগিয়ে দিলাম, যাতে চিৎকার করতে না পারে।
প্রথমে ওর বা হাতের কনে আঙ্গুলের মাঝ বরাবর ফিঙ্গার কাটারটা রেখে জোরে চাপ দিলাম।
ক্যাচ করে আঙ্গুলটা নিচে পড়ে গেল, আর সাথে শুধু আবিরের চাপা আর্তনাদের শব্দ।
আঙ্গুলের মাথা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরতে লাগল। ভালোই লাগছিল লাল আলোতে লাল রক্ত দেখে। এদিকে রাইসা রক্ত দেখেই অজ্ঞান হয়ে গেছে। রক্ত পরা বন্ধ করতে রাইসার ওড়না ছিড়ে নিয়ে আঙ্গুলে বেধে দিলাম।
কারন আমি ভালোভাবেই জানি কি করে কারো. মুখ খুলতে হয়।
..... ভাবছিস কিছু জিজ্ঞাস. করার আগেই কেনো আঙ্গুল কাটলাম। এবার করব, একটা করে প্রশ্ন উত্তরের জন্য সময় মাত্র এক সেকেন্ড, দেরি হলেই ক্যাচ..
.....সুমাইয়া নামের কাউকে চিনতি? বলে মুখের টেপ খুলে দিলাম।
....হমম, চিনি
...গুড, ওর জীবনটা কেনো নষ্ট করলি?
....আমার ভুল হয়ে গেছে, আমায় মাফ করে দেন প্লীজ।
..আমার শুধু উত্তর দরকার, আর কিছুনা।
... কেনো ওর জীবন টা নষ্ট করলি?
....নিশ্চুপ.....
আমি ওর আরেকটা আঙ্গুলটা কেটে নিলাম।
ও ব্যাথায় কাকিয়ে উঠল।
..জানিস সুমাইয়া কে ছিল? সে আমার একমাত্র আদরের ছোট বোন। তুই যেদিন তার সাথে বেঈমানী করলি, তার পরদিন সুমাইয়া আত্নহত্যা করে.। তার আগে সব ঘটনা ডায়রিতে লিখে রেখে যায়। তারপর থেকেই প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তোকে খুজতেছি।
...আমার পরের প্রশ্ন, রাইসা কে কি সত্যিই ভালোবাসিস।
...না না...
....ধন্যবাদ।
...আমকে ছেড়ে দেবে তো?
...হুমম, দেব। চিরদিনের জন্য ছেড়ে দেব।
এই বলেই আমার জুতোর ভেতর থেকে আমার প্রিয় স্কালপেল টা বের করে করে তার বাম কাধে ঢুকিয়ে দিলাম। ব্যাথায় চিৎকার করতে লাগল আর শরীরটা জোরে `ঝাকাতে লাগল। ভালই উপভোগ করছিলাম। রক্ত কাধ থেকে চুয়ে চুয়ে পরে তার সাদা শার্টের একপাশ লাল হয়ে গেছে। ভাবলাম অপর পাশেও তো কালার করা দরকার। অমনি স্কালপেলটা বা হাত থেকে বের করে ডান কাধে ঢুকিয়ে দিলাম। গল গল করে রক্ত পরতে লাগল। এবার টুল বক্স থেকে ছোট একটা ম্যাচেটি বের করে নিলাম। ওকে আবার একটু ব্র্যান্ডি খাইয়ে দিলাম যাতে অজ্ঞান না হয়। এবার ম্যাচেটিটা দিয়ে তার. ডান হাত কনুই থেকে কেটে নিলাম, এবারে বাম হাত নেয়ার পালা। হাত কাটার পর সে গলা কাটা মুরগীর মত ছটপট করতে লাগল। আমার একটু মায়া হল, কিন্তু এসব ব্যাপারে মায়া দেখাতে নেই, তাহলে নিজেরই বিপদ হবে। এই লাইনের মূলনীতি হল, মনের কথা নয় মাথা কি বলে সেটা শুনতে হবে।
কাটা শেষ হলে কাটা হাত দুটো রাইসার ব্যাগে নিলাম।
টুল বক্স থেকে 18V Speed Cordless drill.(ব্যাটারী চালিত) টা বের করলাম। সুইচ অন করে তার কপালের ঠিক মাঝখানটায় চেপে ধরলাম। একটা বিদঘুটে আওয়াজের করে পুরো Chuck (ড্রিলের মাথায় লাগানো পেচানো লোহা)টা পুরোপুরি তার কপাল ভেদ করে ঢুকে গেছে। হঠাৎ করেই আবিরের শরীর জোরে কয়েকটা ঝাঁকি দিয়ে একদম ঠান্ডা হয়ে গেলো। ড্রিল বের করে এনে দেখি chuck এ হলুদ মগজ লেগে আছে। একটু চেটে খেয়ে দেখলাম, কিরকম যেন নোনতা নোনতা আর হালকা গন্ধ। এবার আমার পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। আমি কিছুদিন কসাইদের সাথে ফ্রীতে কাজ. করতাম, সেই অভিজ্ঞতার কথাই বলছি।
ছোটো ছুরিটা দিয়ে তার হাত থেকে শুরু করে সাড়া শরীরের চামড়া তুলে ফেললাম। মানুষের চামড়ার নিচের চর্বি দিয়ে খুব সেক্সি এক ধরনের পারফিউম বানানো হয়। তাই ভাবলাম চামড়াটা রেখে দেই, পরক্ষনেই মনে হল আমি একটা দিয়ে কি করব। সমস্যা হল তার পুরুষাঙ্গ নিয়ে। চামড়া ছাড়া শরীরে সেটা বেমামান লাগতেছে। সেটা কেটে ফেলা দরকার। যেই ভাবা সেই কাজ, কেটেই ফেললাম সেই শিরা উপশিরায় গঠিত দন্ডটি। এখন আমার কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া দেখা দরকার। পাশের রুম থেকে বড় একটা ক্যান নিয়ে আসলাম। ক্যানের গায়ে লেভেলে লেখা HF। হাইড্রোফ্লোরিক এসিড। একটা হাইড্রোজেন ও পলিট্রেট্রাফ্লুরোইথাল(টেফলন) এর সংমিশ্রনে তৈরী। এই এসিডের দুটো বৈশিষ্ট্য আছে।
- এক. প্লাস্টিকের সাথে এই এসিড বিক্রিয়া করে না। আর করে না তামার সাথে।
-আর দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যটা হল এই এসিড মানুষের হাড়কে পুরোপুরি দ্রবীভূত করে ফেলে। পুরোপুরি। একটা কণাও অবশিষ্ট থাকে না এতে ডুবে গেলে। পানি হয়ে যায়। মানে, পানির মতো আরকি।
আমি আবিরের পাশ থেকে রাইসাকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ক্যানে মুখ খুলে আবিরের দিকে ছুড়ে মারি। আবিরের শরীরের যেখানে যেখানে এসিড লেগেছে সে যায়গাটা পুরো গলে যাচ্ছে।
এবার রাইসার মুখে পানি ছিটিয়ে দিতেই ওর জ্ঞান ফিরল।
.....কে....(রাইসা)
...শুভ রাত্রি ম্যাম, আমি আপনার সেই লুজার সামি.
...আশে পাশে তাকিয়ে নিয়ে বলল আবির কোথায়?
.....ওই যে ম্যাম আপনার সামনের রুমে।
....আমকে দেখতে দাও প্লীজ.....
...হজম করতে পারবেন?
...মানে?
.....মানে হল ও এখন গলে গিয়েছে।
....কি বলছ কি এসব??
.....তাহলে নিজেই দেখুন।
...না. আআ. আবির, আবির, আমার আবির। নিজেকে সামলে নিয়ে আবার বলল কেন করলে এসব?
এই প্রশ্ন টা তো আমি করব, কেনো খুন করলে আবিরকে? তুমি না ওকে ভালোবাসতে।
...কি বলছ কি পাগলের মত?
...আমি ঠিকই বলছি। ওকে কেনো খুন করলে। এবার তোমার বাচার সব রাস্তা বন্ধ। So ready to die.....
....আমায় ছেড়ে দাও প্লীজ। আমায় ক্ষমা করে দাও র বিশ্বাস কর আমি এখনও তোমায় ভালোবাসি।
.....ওমা তাই নাকি???
.....চল আমরা অতীত ভুলে সব আবার নতুন করে শুরু করি।
...কথাটা অবশ্য ঠিক বলেছ।,উমম কিন্তু তোমার অপরাধের শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে।
এই বলে আমি টুলবক্সের সেইফ. পার্টিশন খুলে আমার প্রিয় হ্যান্ড গান পি পি কে S .22 পিস্তল টা বের করতেই রাইসা চিৎকার করে বলতে থাকল..
...আমায় মেরোনা, আমায় ছেড়ে দাও, আমি তোমার দুটি পায়ে পড়ি, আমার ভুল হয়ে গেছে, আমায় ক্ষমা করে দাও বলেই হু হু করে কাদঁতে লাগল।
...ওকে। বস আমি আসতেছি বলেই আমি আমার ফোন, ব্লুটুথ ক্যামারা ও আমার হাতের গ্লাভস খুলে নিয়ে অনেক একটা ডোবার মত যায়গায় ফেলে দিয়ে আসলাম। পরবর্তীতে যাতে কার নজরে না পড়ে।
ফিরে এসে দেখি মেয়েটা এখন কান্না করতেছে।
....কি ব্যাপার কান্না করে কেন?
....আমায় একা ফেলে কোথায় গিয়েছিলে তুমি? জানো আমার কত ভয় করতেছিল?
...সরি, আর হবে না.,আর কোন দিন তোমায় ফেলে যাব না। নিজের অজান্তেই বলেফেলেছিলাম কথাগুলো।আমি পারবনা ওকে মারতে। কারন আমি এখনও ওকে ভালোবাসি। আমি জানি সে আমকে ইমোশনাল ভাবে দুর্বল করতে চাইছে, কারন সে আমকে কোনদিন ভালোবাসেনি আর বাসবেও না।
....হঠাৎ আমি উঠে দাড়িয়ে পিস্তলের নলটা আস্তে করে তার কপালে ঠেকিয়ে বললাম
....তোমার শেষ ইচ্ছা??
..... ক..কি ... ক.. করছ এসব?
...দেখতেই তো পাচ্ছ।
...প্লীজ মাফ করে আমাকে, তোমার দোহাই লাগে।
...শাস্তি তো তুমি পাবেই, কি করে ভাবলে এত সহজেই পার পেয়ে যাবে। তুমি মৃত্যুর চেয়ে ও ভয়াবহ শাস্তি পাবে।
বলেই তার হাত আর পায়ের বাধন খুলে দিলাম।
সে ছাড়া পেয়েই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল আমি তোমাকে ভালোবাসি সামি আমি ভুল করে তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।
....সরি, অনেক দেরী করে ফেলেছ, সেটা আর হবার নিয়ে।
...কেনো??
...তো দেখ। বলে পিস্তলের নলটা আমার মাথায় ঠেকালাম।
....না, এটা করোনা।
...এটাই তোমার শাস্তি।
...মানে?????
...হয়ত আমি পারতাম তোমাকে মেরে ফেলতে, কি লাভ হত আমার? আজীবন এই কষ্ট বুকের মাঝে চেপে বেঁচে থাকতে হত। আর আমি মারা গেলে আমার সাথে আমার কষ্ট গুলোও চলে যাবে। আর তুমি বেচারা দুটি খুনের দায়ে জেলে যাবে। তারপর সেখান থেকে পাগলা গারদে।
আর তারপর ৩০০ ভোল্টের শক..
পাগল না হয়েও পাগল নাম নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে, আর খুন না করেও খুনিহয়ে গেলে তুমি। তোমার টাকাওয়ালা বাবা কিছুই করতে পারবে না। কারন সব প্রমান তোমার বিরুদ্ধে যাবে। সব আর্মসে তোমার ফিঙ্গার প্রিন্ট রয়েছে। .
..প্লীজ.
...আর হ্যা আই এম নট এ লুজার.....
.........ঠাস্...............
#সামিউল_আলম
#_________সমাপ্ত