আজ এক মাস হতে চলল মেয়েটার পিছু নিচ্ছি।
এখন পর্যন্ত মেয়েটার সাথে কথা হয় নি। আসলে কথা বলার ইচ্ছে ও আমার নেই।
প্রথম এক সপ্তাহ লুকিয়ে লুকিয়ে পিছু নিতাম। তারপর একটু জানান দিয়েই পিছু নিচ্ছি।
আসলে 'পিছু' কথাটা এখানে ঠিক হচ্ছে না। বলা উচিৎ মেয়েটা কি করছে সেটাই লক্ষ্য করছি - গত এক মাস ধরে।
.
প্রথম প্রথম - মেয়েটা কিছুটা বিরক্ত হত। কিন্তু আজ দুই তিন দিন ধরে ব্যাপারটা একটু অন্য রকম লাগছে - মেয়েটা তেমন বিরক্ত হচ্ছে না। মাঝে মাঝে আবার একটু আড় চোখে তাকিয়ে - একটা মুচকি হাসি দেয়। সেই হাসিতে কেমন যেন একটা পশ্রয়ের ভাব আছে। দুইদিন মেয়েটার পিছু নেই নি - খুব জরুরী একটা কাজ করতে হয়েছে এই দুইদিনে। মেয়েটা দুইদিন আমাকে দেখে নি - তাই কেমন যেন একটু অভিমান ভরা চোখে তাকাল। ব্যাপারটা তেমন একটা পাত্তা দিলাম না - আসলে এই লাইনে এসব ব্যাপারে পাত্তা দিলে হয় না।
.
* * *
.
আজ শেষ দিন - আজ থেকে আর মেয়েটার পিছু নিব না। আজই মেয়েটার মুখোমুখি দাঁড়াব। গত এক মাস ধরে করা প্লেনটা আজ বাস্তবায়ন করব। মেয়েটাকে আজ কেমন যেন একটু বেশীই সুন্দর দেখাচ্ছে। একটু হালকা মেকাব, চোখে হালকা কাজল, জলপাই কালারের শারী, ছোট করে কপালে টিপ। টিপটা বোধহয় কাজল দিয়ে দেয়া।
.
অদ্ভুদ ব্যাপার মেয়েটা আজ আমার দিকেই আসছে - যাক কাজটা একটু সহজ হয়ে গেল। মেয়েটা যতই এগিয়ে আসছে ততই নার্ভাস হয়ে যাচ্ছি - আসলে এসব কাজে একটু নার্ভাস হওয়াই লাগে। মেয়েটা আমার সামনে দাঁড়িয়ে - লাজুক চাহনি সেই সাথে লাজুক মুচকি একটা হাসি। বুঝতে পারছি আর দেরি করা ঠিক হচ্ছে না - আস্তে আস্তে পকেট থেকে জিনিসটা বের করলাম। এম.কে ফর্টি - একটা লুগার। সহজ ভাষায় একটা পিস্তল - কাছ থেকে গুলি করার জন্য আদর্শ একটা অস্ত্র!
.
মেয়েটা কেমন যেন একটা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল। আগে জানতাম - মেয়েরা ঘুমিয়ে থাকলে অথবা কাঁদলে অপূর্ব লাগে। কিন্তু এই মেয়েটাকে কেউ দেখলে বোধহয় বলবে - বিস্ময় চাহনিতে মেয়েদের তারচেয়ে অপূর্ব লাগে। ধুর ছাই কি সব ভাবছি - এসব ভাবার কাজ হচ্ছে কবি সাহিত্যিকদের - আমার মত ভাড়াতে খুনিদের এসব ভাবা সাজায় না। হুমম . . . . দশ লাক্ষ টাকার বিনিময়ে মেয়েটাকে খুন করতে যাচ্ছি। লুগারটা মেয়েটার বাঁ বুক বরাবর ধরা। এখনই ট্রিগার চাপতে হবে - এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি ধিরে ধিরে ট্রিগারের চাপ বাড়ছে - এখন শুধু গুলির শব্দ শোনার অপেক্ষায়।