জাপানের প্রাচীন একটি চেরি গাছের বীজ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাঠানো হয়েছিল৷ পৃথিবীতে সেই বীজের চারাগাছ অত্যন্ত দ্রুত বেড়ে উঠে নির্ধারিত সময়ের আগেই অদ্ভুত ফুলের জন্ম দিয়েছে৷ এ যেন প্রকৃতির নিয়মের থেকেও দ্রুত গতিতে চলা
জাপানে চেরি গাছের খুব সমাদর৷ এই গাছ ও ফুল জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ৷ নির্দিষ্ট সময় গাছে ফুল ফোটে, তাকে ঘিরে উৎসবও হয়৷ কিন্তু একটি চারাগাছ যেন সব হিসাব গোলমাল করে দিয়েছে৷ যে সে গাছ নয়৷ মহাকাশ ফেরত বীজ থেকে এই গাছের জন্ম৷ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রায় আট মাস কাটিয়েছিল সেই বীজ৷
গাছটির আরও কিছু বিশেষত্ব চোখে পড়ার মতো৷ সাধারণত প্রায় ১০ বছর পর এই গোত্রের চেরি গাছে ফুল ফোটে৷ অথচ এই আশ্চর্য চারাগাছে চার মাস বয়সেই ফুল ফুটতে শুরু করেছে৷ তাছাড়া এপ্রিল মাসেই গাছের উচ্চতা প্রায় ৪ মিটার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাতে আচমকা ৯টি ফুল ফুটেছে৷ প্রত্যেকটিতে ৫টি করে পাপড়ি৷ অথচ মূল গাছের ফুলে প্রায় ৩০টি করে পাপড়ি ছিল৷
জাপানের প্রাচীন গানোজি বুদ্ধমন্দির প্রাঙ্গণে লাগানো আছে সেই চেরি গাছ৷ প্রধান পুরোহিত মাসাহিরো কাজিতা আরও একটি কারণে অত্যন্ত আনন্দিত৷
যে গাছের বীজ থেকে এই চারাগাছটি জন্মেছে, সেটির বয়স নাকি ১,২৫০ বছর৷ এর আগে তার বীজ থেকে কোনো গাছ জন্মায়নি৷ মহাকাশ ভ্রমণের কল্যাণে এই প্রথম মূল গাছের বংশধরের জন্ম হলো৷ তার উপর তাতে এত তাড়াতাড়ি ফুল ফুটলো৷
২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে জাপানি মহাকাশচারী কোইচি ওয়াকাটা চেরি গাছের বীজ সঙ্গে নিয়ে আইএসএস-এ গিয়েছিলেন৷ পরের বছর জুলাই মাসে তিনি পৃথিবীতে ফেরেন৷ এর মধ্যে মহাকাশ স্টেশন ৪,১০০ বার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছে৷
এমন ঘটনার ফলে বিজ্ঞানীরা এবার জানতে চান, মহাকাশের পরিবেশে থাকার ফলে বীজের মধ্যে ঠিক কী পরিবর্তন ঘটেছে? তাছাড়া মন্দির প্রাঙ্গণে বসানো বীজটির ক্ষেত্রেই এমন সব অস্বাভাবিক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে কেন?
এসবি/ডিজি (এএফপি, এপি)