somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুল

২২ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ব্যাপার টা কি তাহলে ও ভুল দেখল! প্রিয়কের আসলে প্রথমে বিশ্বাস হতেই চায় নি। ও যাচ্ছিল চিটাগং। অনেকদিন মা-বাবার সাথে দেখা হয়না। ব্যাগটা সিটে রেখে ও গিয়েছিল পেপার আর পানির বোতোল কিনতে। সিটে বসার সময় খেয়াল করল , পেছনের সিটে বসে আছে সাজিদ আর যূথী। ওরা ওকে খেয়াল করার আগে আগেই অবশ্য ও সিটে বসে পড়ল।
প্রিয়ক, সাজিদ আর যূথী ব্যাচমেট। একই মেডিকেল কলেজে পরত। ওর আর সাজিদের মধ্যে ছিল বন্ধুত্ব। যে সে বন্ধুত্ব না , জানের জিগরি দোস্ত টাইপের বন্ধুত্ব। যূথীর সাথে প্রিয়কের সম্পর্কটা সাজিদের জন্যই হয়েছিল। সদালাজুক প্রিয়ককে সাজিদই বারবার গুঁতাগুঁতি করতো। বলত, সাহস থাকে তো বলে ফেল । না প্রিয়ক বলে নি। কিন্তু যূথীর সাথে কথাবার্তাটা চালু হয়ে গিয়েছিল। প্রিয়কের ভালই লাগত। কিন্তু সাজিদ ই বারবার বলত, আচ্ছা তুই সত্যি করে বলত, তুই কি ওকে ভালবাসিস ? যদি বাসিসই তবে বলতে এত গড়িমসি ক্যন? এই প্রশ্নের উত্তর তখন প্রিয়কের কাছে ছিলনা। একদিন ও হুট করে বলে ফেলেছিল, আমার মনে হয় এটা স্রেফ ভাললাগা ,ভালবাসা না। তোর যখন এত আগ্রহ তো তুই বলে ফেল না ক্যান? ব্যাপারটা যে সাজিদ সত্যি সত্যিই করে বসবে এটা কখনো ও ভাবে নি। পরদিন ফেসবুকে স্ট্যাটাসে দেখা গেল , সাজিদ ইজ ইন এ রিলেশনশিপ উইথ যূথী। অন্য সবার মত প্রিয়ক ও সাজিদ কে অভিনন্দন জানিয়েছিল। কিন্তু কেন জানি যূথীর সামনে যাওয়ার সাহস হুল না। এরপর যূথীর সাথে অল্পসল্প কথাবার্তাগুলোও বন্ধ হয়ে গেল। সাজিদ ও নতুন প্রেম নিয়ে বযস্ত হয়ে পড়ল। লেকচার গ্যালারিতে যূথীর সাথে বসা, দিনের বাকিটা সময় দুজনের রিডিংরুমে গ্রুপ স্টাডি -এইসবের শেষে মেডিকেল স্টুডেন্টের হাতে আর বন্ধুদের জন্য সময় থাকে না। তাই একটা সময়ের পরে বন্ধুত্বের সেই ঝাঁজ হারিয়ে গেল। কিন্তু প্রিয়কের আর যূথীর সাম্নাসামানি হওয়া হল না। শুধু যখন ওদের দুজন কে একসাথে দেখত, তখন বুকের মধ্যে একটু খচ করে উঠত। মাঝরাতে যখন চ্যাটলিস্টে শুধু সাজিদ আর জুথিকে অনলাইন দেখাত তখন আর ফেসবুকে থাকতে ইচ্ছে করত না।

ওরা সবাই যথারীতি পাশ করে গেল। এর মধ্যে একদিন খবর এল, সাজিদ আর যূথীর এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেছে। যে যার পথে ব্যস্ত হয়ে পড়ল । পোস্টগ্র্যাজুয়েশন, বাবা মা আর আত্মীয় স্বজনের ইচ্ছে পূরণ ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্যস্ত সময়ের অবসরে , দেশে -বিদেশে কোন এক নিঃসঙ্গ মুহূর্তে ওর মনে হত, তবে কি অইদিনের উত্তরটা ভুল ছিল!!!কিন্তু অই পর্যন্তই। জীবনের স্রোতে আর বেশি কিছু ভাববার অবকাশই মেলে নি।
চিন্তার জাল ছিন্ন হতে ও বাস্তবে ফিরে এল। পেছনে ওদের কথা শোনা যাচ্ছিল। কথাবার্তায় ওদের অনেক খুশি মনে হচ্ছিল। জানা গেল, এ বছরই দুজনের এফ সি পি এস হয়েছে। এবং কয়েকদিন আগে ওদের বিয়ে হয়েছে। প্রিয়ক মনে মনে ভাবতে লাগল, এঙ্গেজমেন্টের এত্তদিন পরে বিয়ে !এই ভ্যালেন্টাইন ডে টাতে ওরা হানিমুনে কক্সবাজার যাচ্ছে।
হঠাত করে বাস থেমে গেল চিটাগঙ্গের কাছাকাছি । জানা গেল আজ থেকে ধর্মঘটের কারনে কক্সবাজার রুটে বাস চলাচল বন্ধ ।প্রিয়কের বাসা কাছেই ছিল। ও তাই একটা রিকশা নিয়ে চলে যাবার প্ল্যান করছিল। এমন সময় পেছন থেকে যূথীর কণ্ঠ শোনা গেল( এখনো আগের মতই মিষ্টি আছে! ব্যাচ প্রোগ্রামে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার সময় যতটা মিষ্টি ছিল। ঠিক ততটাই। )।যূথী চিন্তিত এখন কক্সবাজার কিভাবে যাবে এই নিয়ে। চিটাগং এ ও এই সময় আগে থেকে বুক করা না থাকলে হোটেল পাওয়া যায় না।ধ্যাত , হানিমুনটা এইভাবে নষ্ট হবে ভাবতেই পারছিনা-জুথিকে কাঁদোকাঁদো স্বরে বলতে শোনা গেল।
প্রিয়ক পেছন ফিরে ওদের বলল, হানিমুনটা নষ্ট হবে ক্যান! চিটাগঙ্গের এই প্রিয়কের বাসা আছে না।জুথির চোখে চোখ রেখে কথা গুলো বলতে গিয়ে গলাটা ধরে আসছিল। আর তখনই প্রিয়ক উত্তরটা পেয়ে গেল। ভুল ছিল। হ্যাঁ সেদিন সাজিদের করা প্রশ্নে তাঁর উত্তরটা ভুল ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:০৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×