somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশবিরোধী আদানি চুক্তি ও ব্যাড পলিটিক্সের খপ্পরে বাংলাদেশ!

১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ভারতের আদানি গ্রুপের সাথে ২০১৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য চুক্তি করেন।ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত গোড্ডা পাওয়ার প্লান্টের দুই ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা থাকলেও ২০২৪ সালে ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার তীব্র আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রায় ৮৫ কোটি ডলার আদানি কোম্পানি বকেয়া রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আদানি কোম্পানি ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের কাছে চিঠি পাঠায় যে ৭ই নভেম্বরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ৯ কোটি ডলার পরিশোধ করে। কিন্তু আদানি কোম্পানি নভেম্বর মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাংলাদেশের চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ করছে। আদানির পাওয়ার প্লান্টের দুইটি ইউনিটের প্রতিটি থেকে গড়ে ৭০০/৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা থাকলেও বর্তমানে ৫০০/৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। আদানি গ্রুপ মূলত বড়ো অংকের বকেয়া থাকার কারণে বিদ্যুৎ কম সরবরাহ করার কথা বললেও বাস্তবতা ভিন্ন। শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য এবং ভারত সরকারের আকুন্ঠ সমর্থনের ঘুষ হিসাবে আদানি পাওয়ার প্লান্টের চুক্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

পিডিবির বকেয়া পরিশোধের কাগজ পত্র দেখে বিষয়টি ভালো ভাবে বুঝা যায়। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে ভারতীয় কোম্পানি ও কর্মকর্তা গণ প্রজেক্ট বন্ধ রেখেছেন। অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আদানির বকেয়া দেখলে অনেক বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠে। আদানির কোম্পানি যে বকেয়া টাকা পেত তার সবটুকু শেখ হাসিনার আমলের। কিন্তু আদানি গ্রুপ কোনদিন সে ব্যাপারে হাসিনার সরকার কে চাপ দেয় নি। বরং পরিকল্পনা ছিলো ভারতের থেকে ২০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়ে এই বকেয়া পরিশোধ করার।

আদানি গ্রুপের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তিটি অসম চুক্তি হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ আদানির কাছ থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে এই ২৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। চুক্তি অনুযায়ী তিন মাস পরপর কত বিদ্যুৎ নিবে তা আগেই ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশ এই কেন্দ্র থেকে কখনো ৩৪ শতাংশের নিচে বিদ্যুৎ নিতে পারবে না।৩৪ শতাংশের কম বিদ্যুৎ নিলে ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে যত কয়লা ব্যবহার হতো, তার দাম ও কয়লা পরিবহন খরচ দিতে হবে।দেরিতে বিল পরিশোধের জন্য বছরে ১৫ শতাংশের সুদ ধরা হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎ কেনার জন্য গড়ে ব্যয় ১৫ টাকা ১৪ পয়সা যেখানে রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎ থেকে ১২/১৩ টাকা গড় ব্যয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে।

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যে কয়লা ব্যবহার করা হয় তা পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় দাম বেশি ও নিম্নমানের। অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা কেনায় ৪০ শতাংশ ছাড় মিললেও আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোন ডিসকাউন্টের সুযোগ নেই।অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা কেনা দামে ধরেই বিল করা হয়। চুক্তি অনুসারে আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার সূচকে গড় মূল্য হিসাব করে দিতে হবে।

এসব দেশ বিরোধী চুক্তি করেও নানীর আমলে সমালোচনা করলে বিদ্যুৎ বন্ধের হুমকি শোনা লাগতো।বাস্তবতা হলো আদানির জন্য এই চুক্তি সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসের মতো। ইহা বন্ধ হইবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×