somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং সরকারি চাকুরি নিয়ে সোজাসাপ্টা কথা!

২৭ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুলাই-আগস্ট মাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সাধারণ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যায় আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা। সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলনে ব্যাপক উপস্থিতির কারণ ছিলো মূলত কোটা ব্যবস্থা পুনরায় সরকারি চাকুরিতে ফিরিয়ে আনা, দলীয় নিয়োগ, প্রশ্ন ফাঁসের কারণে নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরি না পাওয়ার কারণে। সরকারি চাকুরির প্রতি শিক্ষার্থীদের আলাদা রকম ক্রেজ কাজ করে। আর এই ক্রেজ সৃষ্টির পিছনে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকার অনেকাংশে দায়ী। সরকারি চাকুরি করতে পারলেই আপনি আলাদীনের চেরাগ হাতে পেয়ে যাবেন। তখন খালি চেরাগ ঘষা দিবেন আর জিন বের হয়ে আপনার মনের ইচ্ছা পূরণ করতে থাকবে। কিন্তু এখানে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। গ্রাজুয়েশন পাশের পর সবার সরকারি চাকুরি তে আবেদনের বয়স সমান থাকে না। কারো বাইশ বছরে গ্রাজুয়েশন শেষ হচ্ছে আবার কারো সেশনজটের কারণে, প্রেম ভালোবাসা, সংসার এবং রাজনীতি করার কারণে ২৬/২৭ বছর বয়সে গ্রাজুয়েশন শেষ হচ্ছে। যারা দেরিতে গ্রাজুয়েশন পাশ করেছে তারা চাকুরিতে আবেদনের জন্য খুব একটা সময় থাকে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাকুরিতে আবেদনের বয়স সীমাবদ্ধ ৩০ বছর পর্যন্ত। তাই ২০১২ সাল থেকে চাকুরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার জন্য আন্দোলন শুরু হয়। ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলন কিছুটা সফল হলেও ২০১২ সালে শুরু হওয়া বয়স বৃদ্ধির আন্দোলন বিগত ১২ বছরেও সফলতার মুখ দেখে নি। এর কারণ হিসাবে ফ্রেশ গ্রাজুয়েট দের দায়ী করা হয়।কারণ তারা মনে করে চাকুরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ থাকুক। কিন্তু যারা ৪/৫ বছর ধরে জব ফিল্ডে আছে কিন্তু সফল হচ্ছেন না এরা চায় প্রবেশের বয়স ৩৫ করা হোক। এইভাবে দুই পক্ষের কনফ্লিক্টের কারণে এই আন্দোলন ফেল মারে বারবার। ২০২৪ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অনেক শিক্ষিত বেকার অংশ নিয়েছেন যারা জব মার্কেটে বৈষম্যের শিকার। নতুন ইন্ট্রাম সরকার ক্ষমতায় আসার পরও বয়স বৃদ্ধির আন্দোলন সফলতার মুখ দেখছে না কারণ যারা নীতি নির্ধারক চাকুরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করতে আগ্রহী নন। তারা মনে করে বড়ো জোর ৩২ বছর করা যেতে পারে। কিন্তু ৩৫ আন্দোলনের নেতারা তা মেনে নিবেন না কারণ তাদের সকলের বয়স ৩২+ হয়ে গেছে।আর এই কারণে সকল নিয়োগ পরীক্ষা এবং সারকুলার আসা বন্ধ আছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান, গণ পরিষদের নেতা নূর সহ আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইন্ট্রাম সরকারের কাছে জুলাই-আগস্ট মাসে মারা যাওয়া আন্দোলনকারীদের সামাজিক সুরক্ষার জন্য কিছু দাবী জানিয়ে আসছে বারবার। তাদের মধ্যে একটি দাবী হলো যারা মারা গিয়েছে তাদের প্রত্যেকের পরিবারের একজন সদস্য কে সরকারি চাকুরির ব্যবস্থা করে দিতে হবে। মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া আন্দোলনকারী নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য দের কে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে চাকুরি দিয়ে সাহায্য করেছেন।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের কোনো সদস্যকে সরাসরি সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ দেয়ার দাবী যৌক্তিক নয়। ২/৩ লাখ শিক্ষার্থী মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিন রাত টেবিলে অধ্যয়ন করছেন অন্যদিকে কেউ সরাসরি নিয়োগে সরকারি চাকুরি পাবেন তাহলে বৈষম্য দূর হবে কিভাবে? সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছিলো কারণ তাদের প্রধান দাবী ছিলো মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হতে হবে । যদি নিহতের পরিবার থেকে একজন করে সরকারি চাকুরি পেতে শুরু করে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থী দের সাথে আবার বৈষম্য করা হবে। অন্যদিকে যারা দীর্ঘ ১২ বছর সরকারি চাকুরিতে বয়স বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছেন তাদের সাথে হবে প্রতারণা।

জুলাই-আগস্টে নিহতের পরিবার কে সাহায্য যদি করতেই হয় তবে সরকারি চাকুরি দিয়ে কেন? সরকার থেকে ভাতার ব্যবস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো বেতনে চাকুরি, নাম মাত্র মূল্যে সরকারি -বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, এককালীন অর্থ দিয়ে সাহায্য করা হোক। সরকারি চাকুরিতে মেধা এবং যোগ্যতার জয় হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:০৪
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ড: ইউনুসের গ্রহনযোগ্যতা এখনো আছে, বাড়ছে, নাকি কমছে?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:১৪



দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার সরকারের বিপক্ষে ছিলো; উহার পতন হয়েছে; মানুষ উৎসাহিত হওয়ার কথা; আপনারা ৩ মাস পর কি দেখছেন? উৎসাহ আছে, বাড়ছে, নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

দৃষ্টি আকর্ষন।

লিখেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম, ২৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:২২

প্রিয় ব্লগার,

একজন নারী ব্লগারকে ক্রমাগত ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন মন্তব্য করার জন্য সুপরিচিত ব্লগার এবং কবি সেলিম আনোয়ারের ব্লগিং সুবিধা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। লিখিত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং প্রমাণের ভিত্তিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনে কত অদ্ভুত ঘটনা দেখে ফেললাম !

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:৩৫



শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এমন সব কিছু দেখতে পাচ্ছি যা কোন দিন দেখবো বলে আশাও করি নি। শেখ হাসিনা এভাবে যে পালিয়ে যাবে এটাই যে আমি কোন দিন দেখব... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতা : আযান

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:১৭


কে ওই শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি।
মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।
কি মধুর আযানের ধ্বনি!
আমি তো পাগল হয়ে সে মধুর তানে,
কি যে এক আকর্ষণে, ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেক মুজিব সুটকেস গুছিয়ে পাকিস্তান চলে গিয়েছিল তাজউদ্দিনকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে বলে!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৮



সেক মুজিব সুটকেস গুছিয়ে পাকিস্তান চলে গিয়েছিল দেশকে ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ট বিপদে রেখে। তাজউদ্দিন সাহেবকে বলেছিল নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে। মেজর জিয়ার উই রিভোল্টের হাত ধরে যে যুদ্ধের শুরু, সে যুদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×