CFOT সার্টিফিকেশন ট্রেনিং একজন ফাইবার অপটিকস ইঞ্জিনিয়ার বা টেকনিশিয়ান এর জন্যে আশীর্বাদ তুল্য কোর্স। এই কোর্স, ফাইবার জগতের সাথে সম্পৃক্ত সকল ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ান এর জ্ঞান,দক্ষতা ও কর্ম ক্ষমতা এমনভাবেই বৃদ্ধি করে যে সে নিজেকে নেটওয়ার্ক/ডিজাইন/ইন্সটলেশন/ ম্যানেজমেন্ট/কমুনিকেশন সিস্টেম সকল ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠিত করার সক্ষমতা অর্জন করে।
এই কোর্সে আরো অধিক ভাবে যা জানা যায় তা হলো
আরো দক্ষতার সাথে স্প্লাইসিং,কানেক্টর,টেস্টিং, ওএসপি ইন্সটলেশন,ফাইবার ক্যারেক্টারাইজেশন এবং ডিজাইনের কাজ সমুহ সমাধা করা যায়।
আপ্লিকেশন বেজড ট্রেনিং এর ফলে অর্থ্যাৎ এফটিটিএইচ,ও-ল্যান,এফটিটিএ,ডাস এবং ডাটা সেন্টার ইত্যাদি মূলত ডিজাইন এবং ইন্সটলেশন এর বিষয়সমুহের জন্যে আলাদা আলাদা ভাবে সহজে বুঝতে সাহায্য করে,যার প্রধান লক্ষ হলো এই নেটওয়ার্ক এর সাথে সম্পৃক্ত সকল ব্যাক্তি ও ব্যবস্থাপক, ডিজাইনার,প্রজেক্ট ম্যানেজার,সুপারভাইজারদের সহজেই যোগাযোগ স্থাপন সহজতর করে দেয়। এতে প্রতিটি বিভাগের সাথে ভাল সমন্বয় গড়ে তোলা সহজ হয় যা একজন ফাইবার ইঞ্জনিয়ার বা টেকনিশিয়ানদের একটি বাড়তি “গুন” হিসেবে তার প্রতিষ্ঠানে পরিলক্ষিত হয়।
কেন এই সার্টিফিকেশন ট্রেনিংটি করবেন?
বর্তমান পৃথিবী উচ্চ প্রযুক্তির দুনিয়া, এখানে “ট্রেনিং এবং সার্টিফিকেট” চাকুরীর বাজারে একমাত্র প্রমান হিসেবে কাজ করে কিন্তু তার সাথে ঐ “ট্রেনিং এবং সার্টিফিকেট” একটি দক্ষ পেশাগত ট্রেনিং কিনা, এতে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান আছে কিনা বা এই কোর্স বা ট্রেনিং এর স্ট্যান্ডার্ড টাও চাকুরির বাজারে খুব ভালভাবে লক্ষিত হয়।
সার্টিফিকেট এর অর্থ হলো কোন বিষয়ের উপর জ্ঞান-দক্ষতা ও কর্ম ক্ষমতার একটি প্রমানপত্র তাই এই কোর্সের বিষয়াদি শুধুমাত্র পুথিগত জ্ঞানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি বরং হাতে-কলমে শিক্ষা এবং ফাইবার অপটিকস নেট ওয়ার্ক এর সাথে জড়িত সকল যন্ত্রপাতির সাথে একজন “ট্রেইনি”কে এমনভাবেই পরিচিত করে দেয়া হয় যার ফলে এই কোর্সটি সম্পন্ন করার পর সে ফাইবার অপটিকস সকল বিভাগেই নিজেকে মেলে ধরার সক্ষমতা অর্জন করেন।
ফাইবার অপটিকস শিল্পে এই কোর্সের গুরুত্ব
বর্তমানে উচ্চ শিক্ষাকে রূপকার্থে হিসেবে যা বলা যায় তা হলো “ নিজে করে খাও” শিক্ষা, এছাড়া প্রতিযোগিতামুলক শিক্ষা কোর্স, ই-লার্নিং কোর্স, অনলাইন শিক্ষা কোর্স প্রায় একই ধরনের আবার এইসব শিক্ষার “সনদ”গত গুরুত্বও এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি এই প্রয়োজনীয়তাগুলো ইদানিং মুখ্য হয়ে ওঠার কারন হলো এইসব শিক্ষার সনদ মুল্যায়ন,বিশ্বস্ততা সমুহ এখনো বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতি হিসেবে গুরুত্ব পায়না তাই যারা এইসব শিক্ষা গ্রহন করে নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে চাকুরীর বাজারের প্রয়োজনীয়তা পুরন করার চেষ্টা করছেন তাঁরা অনেকাংশেই ব্যর্থ ও হতাশ হয়ে এইসব শিক্ষাকে দোষারোপ করছেন তাই এখন শিল্প সংশ্লিষ্ট সনদ সমুহের কথা বললে অনেক শিক্ষার্থী অস্বস্তি বোধ করেন। তবে ফাইবার অপটিকস শিল্পের এই কোর্সটি এমন ভাবেই “ডিজাইন” করা হয়েছে যাতে করে শিক্ষার্থী-চাকুরীজীবি-পদ্ধতি নির্নায়কগন-বাজার ব্যবস্থাপক সকলের জন্যেই একটি আদর্শ শিক্ষা পদ্ধতি হিসেবে তৈরী করা হয়েছে। এই শিক্ষা গতানুগতিক প্রযুক্তি শিক্ষার সাথে দারুণ ভাবে পার্থক্য গড়ে তোলে কারন এখানে পরীক্ষা-প্রশিক্ষন-প্রশাসন এমন কি তৃতীয় পক্ষের সাথে কাজ করার ফলে এই শিক্ষাকে ব্যবহারিক গুনাগুনের সাথে সাথে পেশাগত মাত্রাও সংযুক্ত হয়েছে যা কিনা ব্যক্তি উদ্যোগের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সাধারন শিক্ষা ব্যবস্থার যে সমন্বয় ও সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যবধান আছে তাঁকে দূর করতে ভীষনভাবে সাহায্য করে। সে কারনে এটা কোন “গৎ” বাধা শিক্ষা কার্যক্রম না হয়েও, সরকারী-বেসরকারী-ব্যক্তি উদ্যোগ সকল ফাইবার শিল্প সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানে সম্পূরক ও ঐতিহ্যগত শিক্ষার মতো গুরুত্ব বহন করে ঠিক যেন কলেজ থেকে অর্জিত সার্টিফিকেটের মতো।
ইদানিং নির্দিষ্ট শিল্প ভিত্তিক ট্রেনিং সমুহের গুরুত্ব-উপযোগিতা-যোগ্যতা নিয়ে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে যেমন এই ট্রেনিং এর এই শিল্পের সাথে সামঞ্জ্যসতা-ব্যাখ্যা-স্থিতিতা ও ব্যবহারিক যোগসুত্রতা কত টুকু আছে? কারন শিল্প ভিত্তিক শিক্ষা সনদ প্রথাগত শিক্ষা সনদের চেয়ে অনেক সহজলভ্য হয় অথচ তা যদি সঠিকভাবে ঐ শিল্পের মান-প্রতিযোগিতার সাথে প্রতিফলিত না হয় তাহলেই সকল প্রশ্নের উদ্ভব হয়।
কিন্তু এই CFOT টেকনিশিয়ান সার্টিফিকেট ট্রেনিং-এ সাধারন ফাইবারের সকল বিষয় সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান দেয়া হয়,দক্ষতা বাড়ানো হয়, যোগ্যতার মাপকাঠিতে এগিয়ে নেয়া হয় তাই ফাইবার অপটিকসের জগতের প্রায় স্ব কাজের ক্ষেত্রেই অর্থ্যাৎ ডিজাইন-ইন্সটলেশন-অপারেশন এবং সকল এপ্লিকেশন যেমন আউট সাইড প্লান্ট,প্রেমিসিস,মানুফ্যাকচারিং সবকিছুই শেখানো হয়। এই ট্রেনিং কোর্সটি মূলত ফাইবার অপটিকস সম্বন্ধে এতো ব্যাপক জ্ঞান দান করে যে যেকোন পরীক্ষা মুলক দক্ষতা এবং কঠিন কাজ দিলেও একজন শিক্ষার্থী তা সহজেই বুঝতে পারে ও সমাধা করতে পারে। বেশিরভাগ সার্টিফাইড মানুষ ফাইবার অপটিকস শিল্প জগতে ঠিকাদার,ইন্সটলার,কনসালটেন্ট, নেট ওয়ার্ক ডিজাইনার,ইস্টিমেটর এবং ট্রেইনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে করেন,কেউ কেউ আবার ফাইবার অপটিকস এর বিভিন্ন উপাদান যেমন কেবলস-প্যাচ কর্ড-একটিভ ডিভাইস এবং কমিউনিকেশন সিস্টেমের উৎপাদক হিসেবেও নিজেকে যুক্ত করেন।
যাইহোক, এই CFOT সার্টিফিকেশন কোর্সটি আসলে সাজানো হয়েছে সাধারন প্রযুক্তি শিক্ষার আদলে কিন্তু কোন নিদির্ষ্ট কাজের ভিত্তিতে নয় যার ফলে এটা যেমন সকল ইন্সটলারের ক্ষেত্রে কাজে লাগে অর্থ্যাৎ আউট-সাইড প্লান্ট এবং প্রিমেসিস ইন্সটলার দুটো সম্পূর্ন ভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন হলেও একজন ইন্সটলারের যদি এই কোর্সটি করা থাকে উনি অতি দক্ষতার সাথে এই কাজগুলো খুব সহজেই করতে পারেন।এইভাবে একজন কম্পোনেন্ট মানুফ্যাকচারার টেকনিশিয়ান-নেট ওয়ার্ক ম্যানেজার-নেট ওয়ার্ক ডিজাইনার যেই কাজেই সে নিযুক্ত থাকুন না কেন নিজেকে তার সাথে খুব সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন।
এই ট্রেনিং কোর্সের শুধু একটি “গুন”
এই সার্টিফিকেটের একটিই গুন তা হলো এই ট্রেনিং সম্পন্ন করা একজন মানুষ ফাইবার অপটিকস এর সম্বন্ধে এতো ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করেন যা তাঁকে দক্ষতার পরীক্ষা ও যোগ্যতার প্রক্রিয়া যেভাবেই হোক তা সে এই শিল্পে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেন। গবেষনাগারের যেকোন অনুশীলনে দক্ষতা প্রদর্শনের জন্যে এই শিল্পের সাথে জড়িত সকল প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যেই এই সার্টিফাইড মানুষেরা নিজেদের প্রমান করে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন এবং উন্নত বিশ্ব তাদের এখনো যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে যে কিভাবে তাঁরা ফাইবার সম্পর্কে এতো বেশী জ্ঞান অর্জন করলেন?
যোগ্যতা
বলাই বাহুল্য ফাইবার অপটিকস এর জগতে প্রবেশের আগে এই সংক্রান্ত কাজ,হাতের কাজ এবং প্রমান চাওয়া হয় তাই এই কোর্সটি সাজানো হয়েছে দুইভাবে ১) ট্রেনিং ২) এই শিল্পে অভিজ্ঞতা দেয়া বা হাতে-কলমে শেখানো এবং পরিশেষে এই সার্টিফিকেট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া। তাই এই পরীক্ষা দেয়ার জন্যে সকলেই যোগ্য লোক যারা এই ট্রেনিংটা সম্পন্ন করে থাকে।
এছাড়াও যারা ইতোমধ্যে ফাইবার অপটিকসের কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন,আগে কোন এই সংক্রান্ত কোর্স করেছেন এবং কমপক্ষে এই সম্পর্কিত ২ বছরের অভিজ্ঞতা আছে তাঁরা সবাই এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
সর্বশেষে যা বলা যায় তা হলো এই ট্রেনিং কোর্সটি করলে আপনি ফাইবার অপটিকস সম্বন্ধে একেবারে মৌলিক জ্ঞান গুলো বিশদভাবে জানতে ও বুঝতে পারবেন,এর সাথে জড়িত সকল যন্ত্রপাতির সাথে পরিচিত হবেন এবং দেশের ফাইবার শিল্পে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন তবে আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেটের জন্যে যদি এখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সামর্থ বা সুযোগ থাকে তাহলে সেটাও আপনার একান্তই ব্যক্তিগত বিবেচনার বিষয় তবে বর্তমানে বাংলাদেশে ক্রমবিকাশমান ফাইবার অপটিকস শিল্পের সাথে যদি নিজেকে একবার খাপ খাইয়ে নিতে পারেন তাহলে তা হবে আপনার জন্যে চাকুরীর পাওয়ার সুবর্ন সুযোগ। এই কোর্সটি সেইভাবেই সাজানো হয়েছে যা আপনাকে চাকুরীর বাজারে একজন “আকর্ষনীয়” প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৩