ফাইবার অপটিকস নিয়ে বাংলাদেশে সম্প্রতি যে মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে তার সাথে মিল রেখে কিন্তু জনশক্তি তৈরী করা যায়নি বা বলা যায় আমাদের দেশে এই কাজ জানা মানুষের সংখ্যা অপ্রতুল।বিভিন্ন আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো যে সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তাঁরা শুধুমাত্র তাদেরকেই চাকুরী দিচ্ছেন বা দিতে বাধ্য হচ্ছেন যারা এই “ফাইবার অপটিকস” এর জগতের সামান্য কিছু বিষয়ে মোটামুটি জ্ঞান রাখেন অর্থ্যাৎ সোজা বাংলায় যাকে বলে “ঠেকার কাজ” চালানোর মতো লোক পেলেই তার চাকুরী সুনিশ্চিত। অথচ আমরা (বাংলাদেশ) যখন ইনফরমেশন হাইওয়েতে প্রবেশ করেছি, তাই আজ এবং আগামীতেও ফাইবার অপটিকস সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান রাখা দক্ষ লোকের প্রয়োজনীয়তা সবসময়ই থাকবে কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এদেশে নানান কারীগরি শিক্ষা বা কাজ শিখে আয় করার “চটকদার” বিজ্ঞাপনের সমারোহ থাকলেও প্রকৃত পক্ষে এদেশের জনশক্তির চাহিদা অনুযায়ী এবং চাকুরীর বাজারকে মাথায় রেখে “জনশক্তি উৎপাদনের” উদ্যোগ খুবই কম পরিলক্ষিত হয় আবার দেখা যায় যাদের দিয়ে ট্রেনিং করানো হচ্ছে তারাও এই সব বিষয়ে ভাসা-ভাসা জ্ঞান নিয়ে কোনমতে তাদের কাছে আসা ছাত্রদের “কোর্স” করিয়ে তা শেষ করে দিচ্ছেন এবং খেয়াল করছেন না বা ভাবতে চাইছেন না আসলেই সেই ছাত্রটি কি এই কোর্সটি করে কোনভাবে লাভবান হলো কিনা?
সাধারন তথ্য
প্রাথমিকভাবে CFOT সম্পর্কে বলা যায় যা এই কোর্সটি খুবই তাৎপর্যপূর্ন ভাবে অপটিক্যাল ফাইবারের নেটওয়ার্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজে লাগে এর প্রশিক্ষণ একজন সাধারন নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারকেও করে তোলে ঐ প্রতিষ্ঠান এবং ঐ রাস্ট্রের একজন “সম্পদ” হিসেবে।অপটিক্যাল ফাইবার ইন্সটলেশন, ফিউশন এবং মেকানিক্যাল স্প্লাইসিং, কানেকটোরাইজেশন, একসেপটেন্স টেস্টিং, ট্রাবল শুটিং এবং এগুলোর হাতে-কলমে ব্যবহার, বাস্তবিকভাবেই এগুলো সম্বন্ধে আরো আরো বিস্তারিত জ্ঞান দ্বারা প্রতিটি সাধারন হাতকেও পরিনত করে দক্ষ হাতে।
ফাইবার অপটিক্স-এ ব্যবহৃত সকল যন্ত্রপাতির সাথে সখ্যতা,হাতে-কলমে শিক্ষার পাশাপাশি এর থিওরীটিক্যাল উপযোগ,এদের সংজ্ঞা ও লিখিত উপকারিতা ও ব্যবহারের প্রতিটি শব্দ যখন একজন ছাত্র বা ছাত্রী নিজের মধ্যে নেয় তখন তার জন্যে অপটিক ফাইবার কমুনিউকেশন এর সকল উন্নয়নের কাজগুলো খুবই সহজবোধ্য হয়ে ওঠে যা তাদের যেমন কর্মদক্ষতা বাড়ায় সাথে সাথে সে যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকে সেখানেও তার উপরে অর্পিত ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরীর যে গুরু দায়িত্ব থাকে তা সহজেই সমাধা করতে পারেন এবং খুব দ্রুত সেই প্রতিষ্ঠানের একজন গুরুতবপূর্ন “ব্যক্তিত্ব” হিসেবে আবির্ভুত হন।
নেটওয়ার্ক উন্নয়নের প্রধান কাজ হিসেবে এই কোর্সে আরো শেখানো হয় “ওয়াইড-ব্যান্ড” “অপটিক্যাল ক্রস কানেক্ট” “ট্রান্স-রিসিভার” এবং “ওয়েভ গাইড” সম্বন্ধিত ডিভাইস গুলোকে কিভাবে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হয় যা আগামীর প্রজন্মের নেটওয়ার্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
কেন শিখবেন?
এই প্রশিক্ষনে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়না এবং শুধুমাত্র টেকনিশিয়ান বা ইন্সটলার নয় এটা যারা এই ধরনের পন্য নিয়ে “সেলস এবং মার্কেটিং” কাজও করতে চান তাদের জন্যেও এটি একটি লোভনীয় প্রশিক্ষণ। এই কোর্সের মাধ্যমে তাঁরা তাদের ফাইবার অপটিক্যাল সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করতে পারেন যা এই বিশাল সম্ভাবনাময় শিল্পের বাজারে তাদের পন্য বিক্রয় ও বিপননের জন্যে আত্ন-বিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং ক্রেতাদের সকল ধরনের প্রশ্ন-উত্তরের পাশাপাশি এ সংক্রান্ত যেকোন সমস্যার খুব দ্রুত সমাধান দিতে পারেন।
প্রশিক্ষক হতে পারেন
আমাদের দেশের প্রথিতযশা ফাইবার অপটিকস নেটওয়ার্ক এর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যারা উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত আছেন তাঁরা তাদের ব্যস্ততার মাঝে সময় বের করে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই কোর্সটি করে নিজেকে একজন “ফ্রী ল্যান্সার” প্রশিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন তাতে করে তিনি যেমন নিজে একজন প্রশিক্ষক হয়ে উঠবেন সাথে সাথে দেশের বিপুল কর্ম উদ্যোগী যুব সম্প্রদায়কে তার অর্জিত জ্ঞান থেকে প্রশিক্ষন দিয়ে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি আরো আরো অনেক দক্ষ লোক তৈরী করে নিজের প্রতিষ্ঠানেই চাকুরীর ব্যবস্থা করে একটি দক্ষ-জ্ঞানী ও করিৎকর্মা দল তৈরী করতে পারবেন।
উপসংহার টানতে গেলে বলতে হয় বর্তমান সময়টা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন প্রযুক্তির যুগ এবং সামনে আরো নিত্য-নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তেই থাকবে তাই এই উন্নত পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে নিজের ক্যারিয়ার ও নিজের ভবিষ্যত নিয়ে যদি কেউ চিন্তা না করে তাহলে সেটা তার একান্তই নিজের ব্যাপার কিন্তু বুদ্ধিমানরা সবসময় কিছুটা সময় জ্ঞান অর্জনের ব্যয় করে, নিজের এবং সমাজের দ্রুত পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে এবং সেই মোতাবেক নিজেকে তৈরী করে বলেই সমাজে-পরিবারে তাঁকে বুদ্ধিমান বা বুদ্ধিমতী হিসেবে গন্য করে। চরম প্রতিযোগিতার এই চাকুরীর বাজারে অথবা সচ্ছল জীবনযাপনের জন্যে আসলে “শর্ট-কাট” কোন রাস্তা নাই তবে সঠিক রাস্তায় যদি কেউ এগিয়ে যায় তাহলে পথটা একটু কঠিন হলেও সফলতার যেই সিঁড়িতে সে উঠতে চায়,সফলতার যে চুড়াতে উঠার সে স্বপ্ন লালন করে তার সন্ধান সে ঠিকই পেয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৯