সাংবাদিকতা জীবনে তিনি কৃষক ও নবযুগ পত্রিকায় কাজ করেছেন। ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার কলকাতা থেকে প্রকাশিত পত্রিকা ইত্তেহাদ-এর সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আবুল মনসুর আহমদে ছিলেন আধুনিক ও প্রগতিশীল সাংবাদিকতার অগ্রপথিক।
রাজনীতিক আবুল মনসুর আহমদ শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের যুক্তফ্রন্ট সরকারে প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৫৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আওয়ামী লীগ সরকারে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী।
বিশাল ও বিস্তৃত কর্মজীবনে মহাত্মা গান্ধি, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি, নেতাজী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, খাজা নাজিমুদ্দিন, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষানী, মাওলানা আকরম খাঁ প্রমুখ সহ ব্রিটিশ ভারতের ও ও পরবর্তী পাকিস্তানের প্রখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে ছিলো তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। নেতাজীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিলো ‘তুমি তুমি’ পর্যায়ের। জাতীয় কবি কাজী নজরুলের সঙ্গে ছিলো খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বঙ্গবন্ধু তাঁর কলকাতার কলেজ জীবন থেকেই তাঁকে সগৌরবে লীডার বলতেন ও নিজেকে তাঁর শিষ্য মানতেন। এসবের ফলশ্রুতিতে তিনি লিখেছিলেন আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর। তাঁর দীর্ঘ জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার ফসল এ গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের এক অমর কীর্তি।
(সূত্র: আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর : ভূমিকা: মাহবুব আনাম)
তাঁর রচনাসম্ভারের মধ্যে রয়েছে—আয়না, আসমানী পর্দা, গালিভারের সফরনামা ও ফুড কনফরেন্স। আরও রয়েছে বাংলা সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের ওপর বিখ্যাত রচনাবলি। তাঁর আত্মজীবনীমূলক দুটি গ্রন্থ হচ্ছে—'আত্মকথা' ও 'আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর'। এ দু'টি গ্রন্ত্রের একত্রে মিশ্রণ ঘটেছে End of a Betrayal নামক তাঁর লেখা বিশালকার ইংরেজী গ্রন্থে। উপন্যাস সাহিত্যে তাঁর অমর দুইট কীর্তি 'জীবন ক্ষুধা' ও 'আবেহায়াত'।
আজ ৩ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক ও রাজনীতিক আবুল মনসুর আহমদের ১১২তম জন্মবার্ষিকী। এ মহান ব্যক্তিকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।