ধর্মান্ধ আওয়ামীলীগ কি পারবে জঙ্গীবাদের অপবাদ গুছাতে
কয়েছ আহমদ বকুল
কাকতালীয় ভাবে হলেও টিম অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফরে আসার দ্বৈধতার কারণ হিসাবে জঙ্গী আক্রমণের সম্ভাবনাই সত্য হয়ে গেলো ঢাকায় ইতালিয় নাগরিক খুন হওয়ার মাধ্যমে। আই এস আই এর খুনের দায় স্বীকার দিলো পালে আরো হাওয়া। ফলত বাতিল হলো বহু কাঙ্খিত অষ্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর।
মানুষের কিছু কিছু বিশ্বাস এতোটাই পোক্ত হয়ে যায় যে অন্যের কাছে একসময় তা অন্ধ বিশ্বাস মনে হয়। আমার নিজের ও সে রকম একটি বিশ্বাস আছে। আমার বিশ্বাসটি হচ্ছে আমার বাংলাদেশে অতীতে তালেবান বা বর্তমানে আই এস আই এর কোন প্রকার কার্যক্রম বা কোন সদস্য নেই। এটা আবেগের কথা নয়, বিশ্বাসের কথা। কিন্তু দিনের পর দিন আনসারুল্লাহ বা আই এস আই বিষয়ক বাওতাভাজীকে কেন আমরা মেনে নিচ্ছি বা বারবার এই বিষয়টা আমাদেরকে শোনতে হচ্ছে কেন? আসলে কোন গুঢ় কারণে সরকারই আমাদেরকে এই বাওতাভাজির ধুয়ায় জড়িয়ে রাখতে চাইছে।
আশ্চর্য্যের বিষয় আমাদের এতো এতো গোয়েন্দা র্যাব পুলিশ যে তথ্য জানতে বা জানাতে পারেনি অষ্ট্রেলিয়ার সামান্য এক ক্রিকেট টিমের বাংলাদেশে সফরকে কেন্দ্র করে তারা একটি নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ টিম পাঠালো আর সেই টিমের রিপোর্ট শত ভাগ সত্য হয়ে গেলো! জঙ্গী তৎপরতায় খুন হয়ে গেলো সিজার নামীয় ইতালিয়ান! নাকি বিষয়টা একটু অন্যরকম? অস্ট্রেলিয়ান টিম ম্যানেজমেন্টের রিপোর্টকে সত্য করে দিতেই এদেশীয় ছাগুরা এই কাজটি করেছে? একজন বিদেশী খুনের মাহাত্ম তিন রকম ফল দিলো, দুনিয়ার ক্রিকেট মিডিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীকে জানানো গেলো বাংলাদেশ আসলেই একটি জঙ্গী ঝুঁকিতে থাকা দেশ, বিদেশীরা এখানে নিরাপদ নয় আর সরকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।
আমি অনেক লেখায় বা আলোচনায় খুব করে একটি কথা বলি, আওয়ামীলীগ ব্যর্থ হলে আসলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়, লালসবুজ ম্লান হয়, স্বাধীনতা বিপন্ন হয়। আর আওয়ামীলীগ বিজয়ী হলে বিজয়ী হয় কিছু চামচা, কিছু চাটুকার কিছু চুর আর কিছু মাতাল মন্ত্রী। বাংলাদেশ সার্বজনীন ভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে ধর্মের নিরপেক্ষতাকে পুঁজি করে বা ধর্মান্ধতাকে উৎসাহিত করে রাজনীতি করা কঠিনই নয় শুধু অসম্ভব কিন্তু সেই কাজটিই আওয়ামীলীগ বারবার করে। বর্তমান সরকার সবচেয়ে বেশী ধর্ম নিয়ে মাতলামী করছে বলে আমার ধারনা। সৌদিতে হ্বজ্জের সময় মিনা দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে, কোথায় কে কি লিখেছে ফেইসবুকে, মাতাল মন্ত্রীর নিয়ন্ত্রনাধীন পুলিশ সেই বেচারাকে গ্রেফতার করছে। রে পাগলের জাত তোমাদের এই তুচ্ছ গ্রেফতার কি প্রমান করে দিচ্ছেনা তোমাদের মানষিক বৈকল্য আর একজন জঙ্গীর মানষিক বৈকল্যে কোন পার্থক্য নেই। যে লেখাটির কারণে মোহন কুমার মন্ডলকে গ্রেফতার করে নিজেকে ধর্মান্ধ করে দিচ্ছে সরকার সেই লেখাটি যদি সৌদিতে বসেও কেউ লিখত আমি মনে করিনা তারা কাউকে গ্রেফতার করত। এমন একটি দুঃখজনক দুর্ঘটনায় এমন হাজার কথা লক্ষ্য কটুবাক্য আসতেই পারে।
ব্লগার খুন হয় খুনের দায় স্বীকার করে আনসারুল্লাহ বিডি টিম, মূল খুনিদেরকের খুনির পৃষ্টপোষকদেরকে সরকার চেনে কিন্তু এখন ধর্মান্ধ হবার সময়, রাজনৈতিক ভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নয় নিজেদেরকে ধর্মান্ধ প্রমাণের সময় তাই সেই ধর্মগুরুদেরকে কিছু বলা যাবেনা তার চেয়ে বরং হোক বাংলাদেশ জঙ্গী রাষ্ট্র, খুনিদের পরিচয় হোক আনসারুল্লাহ। এখনকার এই টালমাটাল সময়ে সিজারের খুনিদেরকে ধরার চেয়ে কোথায় ৫৭ ধারা ভঙ্গ করে কে কি লিখলো, কার লেখায় ধর্ম অবমাননা হয়ে গেলো সেটা নিয়েই আমাদের ধর্মান্ধ আওয়ামীলীগ সরকার ব্যস্ত। সরকারের এই ধর্মান্ধতার ফসল আজ আমরা জঙ্গী পরিচয়ের দিকে দাবীত হচ্ছি, অঙ্কোরে এই আশঙ্কাকে বিনষ্ট করতে হবে তার জন্য সবার আগে সরকারকে তার ধর্মান্ধতার খোলস থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এখন দেখার বিষয় আমাদের জঙ্গী অপবাদ গুছাতে নিজেদেরকে ধর্মান্ধতার খোলস থেকে কতটা বের করে নিয়ে আসতে পারে সরকার।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:২৩